রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৩০০
পরিবার-পরিজনকে, সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা ভালোমন্দ পার্থক্য করার বয়সে উপনীত হয়েছে তাদেরকে এবং নিজ দায়িত্বভুক্ত সকলকে আল্লাহ তা'আলার আনুগত্যের আদেশ দেওয়া, তাঁর নাফরমানি করতে নিষেধ করা, প্রয়োজনে তাদেরকে শাস্তি দেওয়া এবং নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ থেকে তাদেরকে বিরত রাখার আবশ্যকীয়তা।
অধীনস্থ ব্যক্তিদের উপর শর'ঈ দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব
হাদীছ নং : ৩০০
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। ইমাম একজন দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। পুরুষ তার পরিবারবর্গের উপর দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। নারী তার স্বামীর ঘরে দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। খাদেম তার মনিবের অর্থ-সম্পদের উপর দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৮৯৩; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৮২৯; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৭০৫; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২৯২৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৪৪৯৫; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪৪৮৯; বায়হাকী, আস্-সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১২৬৮৬; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৮৮১; তাবারানী, আল-মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৪৫০৬)
হাদীছ নং : ৩০০
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। ইমাম একজন দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। পুরুষ তার পরিবারবর্গের উপর দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। নারী তার স্বামীর ঘরে দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। খাদেম তার মনিবের অর্থ-সম্পদের উপর দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে -বুখারী ও মুসলিম।
(সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৮৯৩; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৮২৯; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ১৭০৫; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২৯২৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৪৪৯৫; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪৪৮৯; বায়হাকী, আস্-সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১২৬৮৬; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৮৮১; তাবারানী, আল-মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৪৫০৬)
38 - باب وجوب أمره أهله وأولاده المميزين وسائر من في رعيته بطاعة الله تعالى ونهيهم عن المخالفة وتأديبهم ومنعهم من ارتكاب مَنْهِيٍّ عَنْهُ
300 - وعن ابن عمر رضي الله عنهما، قَالَ: سمعت رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتهِ: الإمَامُ رَاعٍ وَمَسْؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، والرَّجُلُ رَاعٍ في أهْلِهِ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالمَرْأةُ رَاعِيَةٌ في بيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْؤُولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا، وَالخَادِمُ رَاعٍ في مَالِ سَيِّدِهِ وَمَسؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটি পূর্বে ২৮৩ নম্বরে গত হয়েছে। সেখানে এর ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। আগ্রহী পাঠককে সেখানে দেখে নেওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে। এখানে অতিরিক্ত আছে, খাদেম তার মনিবের অর্থ-সম্পদের উপর দায়িত্বশীল। তার দায়িত্ব মনিবের মালামাল ও আসবাবপত্রের হেফাজত করা। এ ব্যাপারে অবহেলা করলে তা তার খেয়ানতরূপে গণ্য হবে। যদি মনিবের অগোচরে তার কোনও মাল সরিয়ে ফেলে, তবে তা স্পষ্টই চুরি। সিকিউরিটি গার্ড, অফিস সহকারি, দপ্তরি, কেয়ারটেকার প্রভৃতি পদে নিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্যও এ কথা প্রযোজ্য। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে নিয়োজিত কর্মচারীগণও এর আওতায় পড়ে। কিন্তু এ ব্যাপারে সর্বত্র মারাত্মক গাফলাতি লক্ষ করা যায়। এদের প্রত্যেকেই যেন মালিক ও কর্তৃপক্ষের মালামালকে নিজের মাল মনে করে এবং সে হিসেবে তার যথেচ্ছ ব্যবহার করে। সুযোগমত সরিয়েও ফেলে। কিছুতেই এটা উচিত নয়। কেননা তাদেরকেও আখেরাতে এ ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে। তাদের জন্যও বলা হয়েছে- ومسؤول عن رعيته , (তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে)।
ইমাম নববী রহ. হাদীছটি এ অধ্যায়ে এনেছেন অধীনস্থদের প্রতি দায়িত্বশীলতা প্রসঙ্গে। হাদীছটিতে কয়েক শ্রেণীর লোকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের দায়িত্বের পরিমণ্ডলও বলে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আখেরাতে তাদেরকে আপন আপন দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। সুতরাং কারওই আপন দায়িত্বপালনে অবহেলার সুযোগ নেই। বিশেষত যারা পরিবারের দায়িত্বশীল কিংবা যারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োজিত, তাদের কর্তব্য অধীনস্থদের দীন ও ঈমানের প্রতিও লক্ষ রাখা। তারা যাতে সঠিক আকীদা-বিশ্বাসের উপর থাকে এবং যাতে শরীআতের বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন করে, সে ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায় আল্লাহ তাআলার আদালতে তারা আপন আপন অভিভাবক ও দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে নালিশ জানাবে। তখন পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে। তা থেকে বাঁচতে হলে এখনই নিজ নিজ অধীনস্থদের প্রতি দীনী দায়িত্বপালনে মনোযোগী হতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল আমরা কেউ দায়িত্বমুক্ত নই। আপন আপন ক্ষেত্রে প্রত্যেকের উপরই কোনও না কোনও দায়িত্ব ন্যস্ত আছে। সে দায়িত্ব পালনে প্রত্যেকেরই সচেষ্ট থাকা চাই।
খ. জানা গেল যে, শাসক শ্রেণীর কর্তব্য দেশবাসীকে শরীআতের নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালনা করা।
গ. গৃহকর্তার কর্তব্য আপন সামর্থ্য অনুযায়ী পরিবারবর্গের দুনিয়াবী প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি তাদের দীনদারীরও তত্ত্বাবধান করা।
ঘ. স্ত্রীর কর্তব্য স্বামীর আনুগত্য করা এবং সন্তান-সন্ততি ও ঘর-সংসারের প্রতি কল্যাণকামিতাপূর্ণ আচার-আচরণ করা।
ঙ. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল আখেরাত সত্য, আখেরাতে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হবে এবং আপন আপন দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।
চ. গৃহকর্মী থেকে শুরু করে অফিস-আদালতের কর্মচারী-কর্মকর্তা পর্যন্ত সকলেরই আপন আপন দায়িত্ব সম্পর্কে আখেরাতে জবাবদিহি করতে হবে। তাই এদের প্রত্যেকেরও সবরকম খেয়ানত ও দুর্নীতি পরিহার করে যথাযথভাবে দায়িত্বপালনে রত থাকা উচিত।
ইমাম নববী রহ. হাদীছটি এ অধ্যায়ে এনেছেন অধীনস্থদের প্রতি দায়িত্বশীলতা প্রসঙ্গে। হাদীছটিতে কয়েক শ্রেণীর লোকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের দায়িত্বের পরিমণ্ডলও বলে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আখেরাতে তাদেরকে আপন আপন দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। সুতরাং কারওই আপন দায়িত্বপালনে অবহেলার সুযোগ নেই। বিশেষত যারা পরিবারের দায়িত্বশীল কিংবা যারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োজিত, তাদের কর্তব্য অধীনস্থদের দীন ও ঈমানের প্রতিও লক্ষ রাখা। তারা যাতে সঠিক আকীদা-বিশ্বাসের উপর থাকে এবং যাতে শরীআতের বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন করে, সে ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায় আল্লাহ তাআলার আদালতে তারা আপন আপন অভিভাবক ও দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে নালিশ জানাবে। তখন পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে। তা থেকে বাঁচতে হলে এখনই নিজ নিজ অধীনস্থদের প্রতি দীনী দায়িত্বপালনে মনোযোগী হতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল আমরা কেউ দায়িত্বমুক্ত নই। আপন আপন ক্ষেত্রে প্রত্যেকের উপরই কোনও না কোনও দায়িত্ব ন্যস্ত আছে। সে দায়িত্ব পালনে প্রত্যেকেরই সচেষ্ট থাকা চাই।
খ. জানা গেল যে, শাসক শ্রেণীর কর্তব্য দেশবাসীকে শরীআতের নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালনা করা।
গ. গৃহকর্তার কর্তব্য আপন সামর্থ্য অনুযায়ী পরিবারবর্গের দুনিয়াবী প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি তাদের দীনদারীরও তত্ত্বাবধান করা।
ঘ. স্ত্রীর কর্তব্য স্বামীর আনুগত্য করা এবং সন্তান-সন্ততি ও ঘর-সংসারের প্রতি কল্যাণকামিতাপূর্ণ আচার-আচরণ করা।
ঙ. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল আখেরাত সত্য, আখেরাতে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হবে এবং আপন আপন দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।
চ. গৃহকর্মী থেকে শুরু করে অফিস-আদালতের কর্মচারী-কর্মকর্তা পর্যন্ত সকলেরই আপন আপন দায়িত্ব সম্পর্কে আখেরাতে জবাবদিহি করতে হবে। তাই এদের প্রত্যেকেরও সবরকম খেয়ানত ও দুর্নীতি পরিহার করে যথাযথভাবে দায়িত্বপালনে রত থাকা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
