ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৪৩. যাবতীয় মা'ছুর দোয়া-যিক্‌র

হাদীস নং: ২৬৬২
প্রার্থনার সময় দুহাত উঠানো এবং শেষে হস্তদ্বয় দ্বারা মুখমণ্ডল মোছা
(২৬৬২) সালমান ফারসি রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের পালনকর্তা লাজুক দয়াবান । যখন কোনো বান্দা তাঁর দিকে দু'খানা হাত উঠায় তখন তিনি তা ব্যর্থ ও শূন্যভাবে ফিরিয়ে দিতে লজ্জা পান।
عن سلمان رضي الله عنه مرفوعا: إن ربكم حيي كريم يستحيي من عبده إذا رفع يديه إليه أن يردهما صفرا.

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, হাত উঠিয়ে যে দুআ করা হয় তা কবুল হওয়ার বেশী উপযোগী।

দুআ করার আদব হলো হাতের তালু দ্বারা দুআ করা। অবশ্য হাত উত্তোলন করা ব্যতীত দুআর আমলও রসূলুল্লাহ স. থেকে প্রমাণিত রয়েছে। সুতরাং হাত উত্তোলন না করার আমলও জায়েয। হযরত আনাস রা. থেকে একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِي شَيْءٍ مِنْ دُعَائِهِ إِلَّا فِي الِاسْتِسْقَاءِ ইসতিস্কা তথা বৃষ্টি প্রার্থনার দুআ ব্যতীত অন্য কোন দুআয় নবী কারীম স. হাত উঠাতেন না। (বুখারী-৯৭৪) এ হাদীসের কারণে অনেকে বলে থাকেন যে, ইসতিস্কা ব্যতীত কোন দুআয় রসূল স. হাত উঠাননি। অথচ এ কথাটি ঠিক নয়। কারণ এ হাদীসের শেষাংশে উল্লেখ আছে যে, وَإِنَّهُ يَرْفَعُ حَتَّى يُرَى بَيَاضُ إِبْطَيْهِ ইসতিস্কার দুআয় তিনি হাত এতটা উঁচু করতেন যে, তাঁর বগলদ্বয়ের শুভ্রতা দেখা যেতো। এ থেকে বুঝা যায় যে, হযরত আনাস রা.-এর উদ্দেশ্য এটা বর্ণনা করা নয় যে, তিনি অন্য কোন দুআয় মোটেও হাত উঠাতেন না। বরং উদ্দেশ্য এ কথা বর্ণনা করা যে, অন্য কোন দুআয় তিনি ইসতিস্কার মতো হাত এতটা উঁচু করতেন না। এ অর্থ করা না হলে হযরত আনাস রা.-এর বর্ণনা বেশ কিছু সহীহ হাদীসের পরিপন্থী হয়ে যাবে। কারণ ইসতিস্কা ব্যতীত অন্য দুআয় হাত উঠানোর অনেক প্রমাণ হাদীসে রয়েছে। নমুনা হিসেবে দেখুন- বুখারী: ৫৯৪১, ৪০০৩, মুসলিম-৩৯৩, ৪৪৭১, তিরমিযী-৩৩৮৬, মুয়াত্তা মালেক-২/৫২৭, মুসনাদে আহমাদ-৭৩১৫, নাসাঈ-৩০১৩, ইবনে আবী শাইবা-৩০০২০, ৩০২৯১ ও ৩৩০১৮, আল-আদাবুল মুফরাদ-৬১৩ নাম্বারে
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান