ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৩. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১০২৮
সালাতুল কুসুফের পদ্ধতি
(১০২৮) সামুরা রা. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সূর্যগ্রহণের সালাতের পদ্ধতি বর্ণনা করে বলেন, তখন তিনি আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। তখন তিনি সবচেয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলেন। কোনোদিন কোনো সালাতে তিনি এতক্ষণ দাঁড়ান নি। আমরা তাঁর কোনো শব্দ শুনছিলাম না। অতঃপর তিনি আমাদের নিয়ে দীর্ঘতম রুকু করেন । কখনো কোনো সালাতে তিনি এত দীর্ঘ রুকু করেন নি। আমরা তাঁর কোনো শব্দ শুনছিলাম না। অতঃপর তিনি আমাদের নিয়ে দীর্ঘতম সাজদা করেন। কখনো কোনো সালাতে তিনি দীর্ঘ সাজদা করেন নি। আমরা তাঁর কোনো শব্দ শুনছিলাম না। অতঃপর তিনি দ্বিতীয় রাকআতেও অনুরূপ করলেন।
عن سمرة بن جندب رضي الله عنه في هيئة صلاة الكسوف مرفوعا: فصلى فقام كأطول قيام قام بنا في صلاة قط ما نسمع له صوتا ثم ركع بنا كأطول ركوع ما ركع بنا في صلاة قط ما نسمع له صوتا ثم سجد بنا كأطول سجود ما سجد بنا في صلاة قط لا نسمع له صوتاً ثم فعل ذلك في الركعة الثانية مثل ذلك

হাদীসের ব্যাখ্যা:

গ্রন্থকার রাহ. বলেন, সূর্যগ্রহণের সালাতের বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে ৬ প্রকার পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে:
১ম পদ্ধতি: প্রত্যেক রাকআতে একটি করে রুকু। উপরে উল্লেখিত হাদীসগুলো থেকে তা জানা যায়।
২য় পদ্ধতি: প্রত্যেক রাকআতে দুইটি করে রুকু । বুখারি ও মুসলিমে আয়িশা রা. বর্ণিত হাদীসে এই পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে ।
৩য় পদ্ধতি: প্রত্যেক রাকআতে তিনটি করে রুকু। মুসলিমে সঙ্কলিত জাবির রা. বর্ণিত হাদীসে এই পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে।
৪র্থ পদ্ধতি: প্রত্যেক রাকআতে চারটি করে রুকু। মুসলিমে সঙ্কলিত ইবন আব্বাস রা. বর্ণিত হাদীস থেকে এই পদ্ধতি জানা যায় ।
৫ম পদ্ধতি: প্রত্যেক রাকআতে পাঁচটি করে রুকু । আবু দাউদ সঙ্কলিত একটি হাদীসে এই পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে। হাদীসটির সনদ দুর্বল বলে নববি উল্লেখ করেছেন । যাহাবি বলেছেন হাদীসটি মুনকার বা অত্যন্ত দুর্বল । হাকিম ও ইবন হাযম হাদীসটিকে শক্তিশালী বলেছেন।
৬ষ্ঠ পদ্ধতি: দুই রাকআত করে সালাত আদায় করে যেতে হবে, যতক্ষণ গ্রহণ শেষ না হয়। এই পদ্ধতি আবু দাউদ ও আব্দুর রাযযাক সঙ্কলিত করেছেন । সনদ সহীহ।
গ্রন্থকার রাহ. বলেন, বিষয়টি একটি বড় সমস্যা। কারণ এতগুলো পদ্ধতির ঘটনা একটিই। নবম হিজরিতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর শিশুপুত্র ইবরাহীমের ইন্তিকালের দিনে সূর্যগ্রহণ হয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এই একবারই সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। এজন্য যে কোনো একটি পদ্ধতিকে মূল ধরে বাকি পদ্ধতিগুলো ব্যাখ্যা করা ছাড়া গতি নেই। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হল, তিনি স্বাভাবিকভাবে প্রত্যেক রাকআতে একটি রুকু করেছেন। তবে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কুরআন পাঠ করেছেন। এ সময়ে জান্নাত-জাহান্নামসহ গায়িবি জগতের বিভিন্ন বিষয় প্রত্যক্ষ করেছেন। সম্ভবত বিভিন্ন হালতে ঝুঁকে পড়েছেন । সেগুলোকেই সাহাবিগণ রুকু বলে উল্লেখ করেছেন। বালখি এই ব্যাখ্যাটি উল্লেখ করেছেন। আল্লাহই ভালো জানেন।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান