ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার
২. পাক-পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ১৮৩
নাবীয বা ফলের রস দিয়ে ওযু করা*
(১৮৩) আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রা. বলেন, জিনদের রাত্রিতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, তোমার কাছে কি পানি আছে? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তোমার কাছে কি নাবীয (পানি মিশ্রিত ফলের রস) আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি তখন সেই নাবীয দিয়ে ওযু করলেন।
عن ابن مسعود رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال ليلة الجن: أمعك ماء؟ قلت: لا قال: أمعك نبيذ؟ قلت: نعم فتوضأ به.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
* ‘নাবীয' অর্থ পানি মিশ্রিত ফলের রস। খেজুর, কিসমিস, মধু, গম, যব ইত্যাদি ফল বা খাদ্য শস্য পানিতে ভিজিয়ে যে 'পানীয়' তৈরি করা হয় তাকে আরবিতে নাবীয বলা হয়। এই পানীয় মাদকতাহীন বা মাদক হতে পারে। খেজুরের 'নাবীয' যদি মাদকতামুক্ত হয় এবং ওষুর অঙ্গগুলো ধৌত করার মতো পাতলা হয় তাহলে পানি না পাওয়া গেলে তা দিয়ে মুসাফির ওযু করতে পারবেন বলে ইমাম আবু হানীফা মত প্রকাশ করেছেন। তিনি এই হাদীসটির উপর নির্ভর করেছেন।তাদের মতে পানির অবর্তমানে 'নাবীয' পাওয়া গেলে তা দিয়ে ওযু করতে হবে। 'নাবীয' না পাওয়া গেলে তায়াম্মুম করতে হবে। ইমাম আবু ইউসুফ, মালিক, শাফিয়ি, আহমাদ, তাহাবি প্রমুখ ফকীহ ‘নাবীয' দ্বারা ওযু করা বৈধ নয় বলে মত প্রকাশ করেছেন। সনদের দুর্বলতার কারণে তারা এই হাদীসগুলো গ্রহণ করেন নি। তাদের মতে পানির অবর্তমানে তায়াম্মুম করতে হবে। হানাফি মাযহাবের তৃতীয় ইমাম, ইমাম মুহাম্মাদ তৃতীয় মত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে মুসাফির নাবীয দ্বারা ওযু করবেন এবং তায়াম্মুমও করবেন। (ইমাম মুহাম্মাদের আল মাবসুত ১/৭৪-৭৫, ১২৮, ইমাম তাহাবির শারহু মাআনিল আসার ১/৯৪-৯৬)। (অনুবাদক)
