মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

১৮. ফযীলত ও সম্মানের বর্ণনা

হাদীস নং: ৩৭২
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.)-এর ফযীলত
হাদীস নং- ৩৭২

জনৈক ব্যক্তি থেকে হযরত আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) সম্পর্কে বর্ণিত আছে,এক রাতে হযরত আবু বকর (রাযিঃ) ও হযরত উমর (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খেদমতে বসে আলাপ করছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর এ দু'জন সাহাবী এবং নবী করীম (ﷺ) বাইরে আগমণ করেন। তারপর তাঁরা তিনজন হযরত আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ)-এর নিকট গমন করেন। এ সময় তিনি পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করছিলেন। তখন নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ কুরআন মজীদ যেভাবে নাযিল হয়েছে, সে পদ্ধতিতে তিলাওয়াত করার যার ইচ্ছা হয়, সে যেন ইব্ন উম্মে আব্দ (আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদ)-এর কিরআতের পদ্ধতিতে তিলাওয়াত করে।
অতঃপর আঁ হযরত (ﷺ) বললেন, হে ইব্ন মাসউদ! তুমি দু'আ কর, তোমার চাহিদা অনুযায়ী তোমাকে দেয়া হবে (দু'আ কবুল করা হবে)। এরপর হযরত আবু বকর ও হযরত উমর (রাযিঃ) সুসংবাদ দেয়ার জন্য তাঁর নিকট গমন করেন এবং হযরত আবু বকর (রাযিঃ) অগ্রগামী হয়ে তাঁকে এ সংবাদ দান করেন। সাথে সাথে এ সংবাদও প্রদান করেন যে, নবী করীম (ﷺ) তাঁকে দু'আ করার জন্য বলেছেন (কেননা তাঁর দু'আ কবুল হবে)। তখন তিনি এ দু'আ করলেন, হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট এমন স্থায়ী ও অটুট ঈমান কামনা করি যা কখনো দূরীভূত হবে না। এমন নিয়ামতসমূহের আকাঙ্ক্ষা করছি যা কখনো শেষ হবে না এবং চিরস্থায়ী বেহেশতে তোমার নবীর সাথী হতে চাই।
অন্য এক রিওয়ায়েতে হযরত আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, এক রাতে হযরত আবু বকর (রাযিঃ) ও হযরত উমর (রাযিঃ) নবী করীম (ﷺ)-এর খিদমতে বসে আলাপ করছিলেন। এরপর উভয় সাহাবী এবং আঁ হযরত (ﷺ) বের হয়ে হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ)-এর নিকট উপস্থিত হলেন। এ সময় তিনি নামাযে (তাহাজ্জুদ) কুরআন তিলাওয়াত করছিলেন। তখন নবী করীম (ﷺ) বললেন: এটা যার পসন্দ হবে যে, পবিত্র কুরআন যে পদ্ধতিতে নাযিল হয়েছে, সে পদ্ধতিতে তিলাওয়াত করবে, তবে সে যেন ইব্ন উম্মে আব্দ অর্থাৎ আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদের পদ্ধতিতে তিলাওয়াত করে। অতঃপর তিনি ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ)-কে বললেন, তুমি দু'আ কর, দু'আ অনুযায়ী তোমাকে প্রদান করা হবে (তোমার দু'আ কবূল করা হবে)। এরপর তিনি পূর্ববর্তী হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী দু'আ করেন।
عَنِ الْهَيْثَمِ، عَنْ رَجُلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ أَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ سَمَرَا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ، قَالَ: فَخَرَجَا وَخَرَجَ، فَمَرُّوا بِابْنِ مَسْعُودٍ، وَهُوَ يَقْرَأُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَقْرَأَ الْقُرْآنَ كَمَا نَزَلَ، فَلْيَقْرَأْهُ عَلَى قِرَاءَةِ ابْنِ أُمِّ عَبْدٍ، وَجَعَلَ يَقُولُ لَهُ: سَلْ تُعْطَهْ "، فَأَتَاهُ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ يُبَشِّرَانِهِ، فَسَبَقَ أَبُو بَكْرٍ عُمَرَ إِلَيْهِ، فَبَشَّرَهُ وَأَخْبَرَهُ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ أَمَرَهُ بِالدُّعَاءِ، فَقَالَ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ إِيمَانًا دَائِمًا لَا يَزُولُ، وَنَعِيمًا لَا يَنْفَدُ، وَمُرَافَقَةَ نَبِيِّكَ فِي جَنَّةِ الْخُلْدِ، وَفِي رِوَايَةٍ: عَنِ الْهَيْثَمِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ: أَنَّ أَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ سَمَرا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَخَرَجَا وَخَرَجَا مَعَهُمَا، فَمَرُّوا بِابْنِ مَسْعُودٍ وَهُوَ يَقْرَأُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَقْرَأَ الْقُرْآنَ غَضًّا كَمَا أُنْزِلَ، فَلْيَقْرَأْهُ عَلَى قِرَاءَةِ ابْنِ أُمِّ عَبْدٍ، وَجَعَلَ يَقُولُ: سَلْ تُعْطَهْ ".
وَذَكَرَ تَمَامَ الْأَوَّلِ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীসেও হযরত আবদুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রা)-এর সম্মান ও মর্যাদার কথা প্রমাণিত হয়। প্রথমত তাঁর কিরআতের প্রশংসা করা হয়েছে এবং রসূল (সা) তাঁর কিরআত অনুযায়ী পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের নির্দেশ প্রদান করেছেন। এ ছাড়া তাঁকে مستجاب الدعوات অর্থাৎ “তাঁর দু'আ গ্রহণযোগ্য বা কবুল করা হবে” এটাও প্রকাশ করেছেন। বস্তুত এ হাদীসও তাঁর মরতবা, সম্মান ও ইলমের গভীরতা প্রকাশ করেছে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ৩৭২ | মুসলিম বাংলা