মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৭. হজ্ব - উমরার অধ্যায়

হাদীস নং: ২৫২
হজ্বের বিবিধ বর্ণনা
হাদীস নং-২৫২

আব্দুল করীম হযরত আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করীম (ﷺ) দেখেন যে, এক ব্যক্তি স্বীয় কুরবানীর জন্তু হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তখন তিনি তাকে বললেনঃ এর উপর সওয়ার হয়ে যাও।
عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ، عَنْ أَنَسٍ، " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى رَجُلًا يَسُوقُ بَدَنَةً، فَقَالَ: ارْكَبْهَا "

হাদীসের ব্যাখ্যা:

কুরবানীর জন্তুর উপর হাজীদের আরোহণ করা জায়েয কিনা, এটা নিয়ে ইমামদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। কেউ কেউ এর সাধারণ (مطلق) ওয়াজিব হওয়ার পক্ষে মতামত পেশ করেছেন, কেউ কেউ সাধারণ নিষেধ এবং কেউ কেউ সাধারণ জায়েয হওয়ার পক্ষে মতামত পেশ করেছেন। মোল্লা আলী কারী এবং কাসতাল্লানীর উক্তির দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, শাফিঈ ও হানাফী ইমামদ্বয় এই বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। কিন্তু তিরমিযী, কিরমানী ও ইমাম নববীর উক্তির দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, এ বিষয়ে শাফিঈ ও হানাফী ইমামগণের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ইমাম শাফিঈ (র)-এর মতে সামান্য প্রয়োজনেও আরোহণ করা জায়েয। হানাফী মাযহাবমতে শুধু জরুরী প্রয়োজনের সময় কুরবানীর জন্তুর উপর আরোহণ জায়েয়। যেমন, পদব্রজে চলা খুবই কষ্টকর হওয়ার কারণে কোন বাহনে আরোহণ করা ছাড়া উপায় থাকে না। হযরত জাবির, হযরত আবূ হুরায়রা এবং হযরত আনাস (রা) বর্ণিত হাদীসের দ্বারা এটাই প্রকাশ পেয়েছে। ইমাম বুখারী (র) আঁ হযরত (সা)-এর পক্ষ থেকে সওয়ারীর জন্য তিনবার পুনঃ উচ্চারণ করার কথা বর্ণনা করেছেন। হযরত আবূ হুরায়রা (রা)-এর হাদীসে দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার ويلك শব্দ রয়েছে। মুসলিম শরীফে হযরত জাবির (রা)-এর হাদীসে اذا لجأت اليها (যখন তুমি এর জন্য বাধ্য হবে) শব্দ রয়েছে। কোথাও ويلك -এর স্থলে ويحك শব্দও রয়েছে। সুতরাং এগুলোর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, কঠোর অপারগতার সময় কুরবানীর জন্তুর উপর সওয়ার হওয়া জায়েয। অন্যথায় এটা জায়েয নয়।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান