মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৭. হজ্ব - উমরার অধ্যায়

হাদীস নং: ২৫১
হজ্বের বিবিধ বর্ণনা
হাদীস নং-২৫১

হযরত ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করীম (ﷺ) জামরায়ে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ পর্যন্ত তালবীয়াহ পাঠ করতেন।
অন্য এক রিওয়ায়েতে হযরত ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, ফযল ইবনে আব্বাস (রাযিঃ)-কে নবী করীম (ﷺ) তাঁর পিছনে সওয়ারীর উপর বসালেন। তিনি একজন সুদর্শন ও স্বাস্থ্যবান যুবক ছিলেন। এ অবস্থায় তিনি মহিলাদের দিকে তাকাতে থাকেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর চেহারা ফিরিয়ে দেন। অতঃপর জামরায়ে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ পর্যন্ত তালবীয়াহ পাঠ
করেন।
অপর এক রিওয়ায়েতে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) স্বীয় ভাই হযরত ফযল ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (ﷺ) জামরায়ে আকাবায়ে কংকর নিক্ষেপ পর্যন্ত তালবীয়াহ পাঠ করতেন।
عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَبَّى حَتَّى رَمَى جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ» ، وَفِي رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَرْدَفَ الْفَضْلَ بْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، وَكَانَ غُلَامًا حَسَنًا، فَجَعَلَ يُلَاحِظُ النِّسَاءَ، وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْرِفُ وَجْهَهُ، فَلَبَّى حَتَّى رَمَى جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ» .
وَفِي رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ الْفَضْلِ أَخِيهِ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «لَمْ يَزَلْ يُلَبِّي حَتَّى رَمَى جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাজীগণ কতক্ষণ পর্যন্ত তালবীয়াহ্ পাঠ করবেন এটা নিয়ে ইমামদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ইমাম আবূ হানীফা, ইমাম শাফিঈ, ইমাম সুফীয়ান সওরী, জমহুর সাহাবা ও তাবিঈ এবং মিসরের ফকীহদের মত হলো এই যে, নহরের দিন (১০ই যিলহজ্জ) সকালে জামরায় কংকর নিক্ষেপ শুরু করার পূর্ব পর্যন্ত তালবীয়াহ্ পাঠ করতে হবে। কংকর নিক্ষেপ শুরু করার সাথে সাথে তা বন্ধ করতে হবে। হাসান বসরী (র) বলেনঃ আরাফাতের দিন ফজর নামায পর্যন্ত তালবীয়াহ পাঠ করার পর তা বন্ধ করতে হবে। হযরত আলী (রা), হযরত ইবনে উমর (রা), হযরত আয়েশা (রা), হযরত ইমাম মালিক (র) এবং মদীনার ফকীহগণের মাযহাব হলো এই যে, আরাফাতের দিন সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তালবীয়াহ্ পাঠ করতে হবে। ওকূফ শুরু হওয়ার পর তালবীয়াহ পাঠ করা যাবে না। আহমদ, ইসহাক এবং পূর্ববর্তী কোন কোন আলিমের মত হলো এই যে, জামরায়ে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ থেকে অবসর না হওয়া পর্যন্ত তালবীয়াহ্ পাঠ করতে হবে। উপরোক্ত হাদীস হানাফী, শাফিঈ এবং জমহুর উলামা দলীল হিসেবে পেশ করেন। কিন্তু বিরোধী পক্ষের নিকট গ্রহণযোগ্য কোন দলীল নেই। উপরোক্ত হাদীসের শেষে বর্ণিত শব্দ لم يزل থেকে সন্দেহ সৃষ্টি হয় যে, এরদ্বারা ইমাম আহমদ ও ইসহাকের মাযহাবের প্রমাণ বহন করে। কিন্তু নাসাঈ শরীফের বর্ণনা فإذا رمى قطع التلبية "অর্থাৎ প্রথম কংকর নিক্ষেপের সাথে সাথে তালবীয়াহ পাঠ বন্ধ করতে হবে।” দ্বারা উপরোক্ত সন্দেহ দূরীভূত করেছে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন