মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
৪. নামায অধ্যায়
হাদীস নং: ১৮৮
জানাযার বর্ণনা
১৮৮। হযরত ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ সুন্নত তরীকা (পদ্ধতি) হলো এই যে, জানাযার চার পায়া একবার উঠাবে, এরপর যা কিছু অতিরিক্ত করা হবে, তা হবে নফল।
عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ نِسْطَاسٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ قَالَ: «مِنَ السُّنَّةِ أَنْ تَحْمِلَ بِجَوَانِبِ السَّرِيرِ، وَمَا زَادَ عَلَى ذَلِكَ، فَهُوَ نَافِلَةٌ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এই হাদীসে জানাযা উঠানো সম্পর্কে বলা হয়েছে। কিন্তু এক দলের দলীলসমূহ খুবই শক্তিশালী। ইমাম শাফিঈ (র)-এর মত হলো এই যে, জানাযাকে আগে পিছনে অর্থাৎ মাথার দিক থেকে উঠাতে হবে। সামনের লোক স্বীয় গ্রীবার উপর রাখবে এবং পিছনের ব্যক্তি বুকের উপর রাখবে। ইমাম আবূ হানীফা (র) বলেন : চার পায়া বিশিষ্ট জানাযার খাটিয়ার চারটি পা একত্রে উঠাতে হবে। ইমাম শাফিঈ (র)-এর মাযহাবের স্বপক্ষে অনেক মওকূফ হাদীস পেশ করা হয়েছে। এগুলোর মূল রিওয়ায়েত ইবনে সাআদ তাবাকাতে হযরত সাআদ ইবনে মাআয (রা) সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁর জানাযা এভাবে উঠানো হয়েছে। ইমাম আবু হানীফা (র) এর দলীল হিসেবে উপরোক্ত হাদীস পেশ করেছেন। এতে স্পষ্ট বর্ণিত আছে, যে, চারদিক থেকে জানাযা উত্তোলন করা সুন্নত। সাহাবীর من السنة শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে উক্ত হাদীস মরফূ' হওয়ার প্রমাণ বহন করে। এছাড়া অন্যান্য সহীহ রিওয়ায়েএেরদ্বারা এই মতের সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন ইবনে আবী শায়বা এবং আবদুর রাজ্জাক তাঁদের গ্রন্থে আওযাঈ (র) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি হযরত ইবনে উমর (রা)-কে এমনিভাবে জানাযা উঠাতে দেখেছেন। আবদুর রাজ্জাক হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন: যিনি জানাযাকে চার কোণ থেকে উত্তোলন করেছেন, তিনি তার উপর অর্পিত যিম্মাদারী আদায় করেছেন। সুতরাং এরদ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, এটাই একমাত্র সুন্নত তরীকা ও পদ্ধতি।
এবার শাফিঈ মাযহাবের স্বপক্ষে যে সমস্ত মওকুফ হাদীস রয়েছে, এগুলোর মধ্যে যথেষ্ঠ ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে। যেমন হযরত সাআদ (রা) সম্পর্কে যে রিওয়ায়েত বর্ণিত আছে, ঐ হাদীস বিশেষ ওযরের উপর প্রতিষ্ঠিত। কেননা তাঁর জানাযায় সত্তর হাজার ফিরিশতা উপস্থিত হওয়ায় অধিক ভীড়ের কারণে যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। জানাযা কাঁধে উঠানো তখন সম্ভব ছিল না, সুতরাং এটা হওয়া সম্ভব যে, যেখানে যার সুযোগ হয়েছে স্পর্শ করে, কাঁধে উঠিয়ে নেকী হাসিল করেছেন। এরূপ বর্ণিত আছে যে, হুযূর (সা) ভীড়ের কারণে স্বীয় অঙ্গুলীর উপর ভর করে চলেছেন। কোন কোন সময় রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে জানাযা উঠানোর এই ব্যবস্থা করতে হয়। কোন কোন সময় লোকজন কম হওয়ার কারণেও এ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু অপারগতার কারণে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, এটা পৃথক মাসয়ালায় পরিণত হতে পারে না এবং তা সুন্নতের স্থান অধিকার করতে পারে না। অতঃপর কিয়াসের দৃষ্টিতে হানাফী মাযহাব অধিক অগ্রগণ্য। কেননা এই অবস্থায় মৃতের সম্মান অধিক হয়ে থাকে। দ্রুত চলার সুন্নত ও সহজে আদায় করা যায়। কিন্তু এর বিপরীত অবস্থায় দ্রুত চলা তো দূরের কথা, কোন কোন সময় জানাযা ভারী হলে অথবা কবরস্থান দূরে হলে জানাযা উঠানো এবং চলা কঠিন হয়ে পড়ে। জানাযা উঠানোর মধ্যে সুন্নত হলো এই যে, প্রত্যেকটি পায়া উঠিয়ে কমপক্ষে দশ কদম চলবে। কেননা ইবনে আসাকির এ বিষয় থেকে মরফু হাদীস রিওয়ায়েত করেছেন, এর সারমর্ম হলো এই যে, যে ব্যক্তি চার দিক থেকে জানাযা উঠাবে, তার চল্লিশটি গুনাহ মাফ হবে। অর্থাৎ প্রতিটি পায়া নিয়ে যখন একজন মানুষ দশ কদম চলবে, তখন প্রতিটি কদমে এক-একটি গুনাহ মাফ হবে এবং প্রতিটি পায়ার উপর দশ গুনাহ্ হিসেবে চল্লিশ কদমে চল্লিশটি গুনাহ মাফ হবে।
এবার শাফিঈ মাযহাবের স্বপক্ষে যে সমস্ত মওকুফ হাদীস রয়েছে, এগুলোর মধ্যে যথেষ্ঠ ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে। যেমন হযরত সাআদ (রা) সম্পর্কে যে রিওয়ায়েত বর্ণিত আছে, ঐ হাদীস বিশেষ ওযরের উপর প্রতিষ্ঠিত। কেননা তাঁর জানাযায় সত্তর হাজার ফিরিশতা উপস্থিত হওয়ায় অধিক ভীড়ের কারণে যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। জানাযা কাঁধে উঠানো তখন সম্ভব ছিল না, সুতরাং এটা হওয়া সম্ভব যে, যেখানে যার সুযোগ হয়েছে স্পর্শ করে, কাঁধে উঠিয়ে নেকী হাসিল করেছেন। এরূপ বর্ণিত আছে যে, হুযূর (সা) ভীড়ের কারণে স্বীয় অঙ্গুলীর উপর ভর করে চলেছেন। কোন কোন সময় রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে জানাযা উঠানোর এই ব্যবস্থা করতে হয়। কোন কোন সময় লোকজন কম হওয়ার কারণেও এ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু অপারগতার কারণে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, এটা পৃথক মাসয়ালায় পরিণত হতে পারে না এবং তা সুন্নতের স্থান অধিকার করতে পারে না। অতঃপর কিয়াসের দৃষ্টিতে হানাফী মাযহাব অধিক অগ্রগণ্য। কেননা এই অবস্থায় মৃতের সম্মান অধিক হয়ে থাকে। দ্রুত চলার সুন্নত ও সহজে আদায় করা যায়। কিন্তু এর বিপরীত অবস্থায় দ্রুত চলা তো দূরের কথা, কোন কোন সময় জানাযা ভারী হলে অথবা কবরস্থান দূরে হলে জানাযা উঠানো এবং চলা কঠিন হয়ে পড়ে। জানাযা উঠানোর মধ্যে সুন্নত হলো এই যে, প্রত্যেকটি পায়া উঠিয়ে কমপক্ষে দশ কদম চলবে। কেননা ইবনে আসাকির এ বিষয় থেকে মরফু হাদীস রিওয়ায়েত করেছেন, এর সারমর্ম হলো এই যে, যে ব্যক্তি চার দিক থেকে জানাযা উঠাবে, তার চল্লিশটি গুনাহ মাফ হবে। অর্থাৎ প্রতিটি পায়া নিয়ে যখন একজন মানুষ দশ কদম চলবে, তখন প্রতিটি কদমে এক-একটি গুনাহ মাফ হবে এবং প্রতিটি পায়ার উপর দশ গুনাহ্ হিসেবে চল্লিশ কদমে চল্লিশটি গুনাহ মাফ হবে।
