মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৪. নামায অধ্যায়

হাদীস নং: ১০৬
ইমাম যখন 'সামিআল্লাহু লিমান হামিদা' বলে
১০৬। ইবনে আবিস সাবআ ইবনে তালহা (রাহঃ) বলেনঃ আমি হযরত আবু হানীফা (রাহঃ)-কে আতা (রাহঃ)-এর নিকট এটা জিজ্ঞাসা করতে দেখেছি যে, ইমাম যখন سمع الله لمن حمده বলেন, তখন এর সাথে কি ربنا لك الحمد বলতে হবে? হযরত আতা (রাযিঃ) বলেন : এটা ইমামের জন্য জরুরী নয়। অতঃপর হযরত আতা (রাহঃ) হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, একবার নবী (ﷺ) আমাদের নামায পড়ান। যখন তিনি রুক্ থেকে মাথা উঠান এবং سمع الله لمن حمده বলেন, তখন (মুকতাদীর মধ্যে থেকে) এক ব্যক্তি ربنا لك الحمد حمدا كثيرا طيبا مباركا فيه বলেন। যখন নবী করীম (ﷺ) নামায শেষ করেন, তখন জিজ্ঞাসা করেনঃ এই সমস্ত বাক্য কে উচ্চারণ রেছে ? তিনি এটা তিনবার জিজ্ঞাসা করেন। এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর নবী (ﷺ) ! আমি বলেছি। তখন নবী (ﷺ) বললেনঃ ঐ পবিত্র সত্তার শপথ! যিনি আমাকে সত্য দীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন, নিঃসন্দেহে আমি ত্রিশের অধিক সংখ্যক ফিরিশতাকে এই বাক্যটি কে আগে লিখবে এবং কে আগে উঠিয়ে নিবে, এটা নিয়ে প্রতিযোগিতা করতে দেখেছি।
ابْنُ أَبِي السَّبْعِ بْنِ طَلْحَةَ، قَالَ: رَأَيْتُ أَبَا حَنِيفَةَ يَسْأَلُ عَطَاءً عَنِ الْإِمَامِ، إِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، أَيَقُولُ: رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ؟ قَالَ: مَا عَلَيْهِ أَنْ يَقُولَ ذَلِكَ.
ثُمَّ رَوَى عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: " صَلَّى بِنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرَّكْعَةِ، قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَقَالَ: رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ، فَلَمَّا انْصَرَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: مَنْ ذَا الْمُتَكَلِّمُ بِهَذِهِ؟ قَالَهَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، قَالَ الرَّجُلُ: أَنَا يَا نَبِيَّ اللَّهِ، قَالَ: فَوَالَّذِي بَعَثَنِي بِالْحَقِّ، لَقَدْ رَأَيْتُ بِضْعَةً وَثَلَاثِينَ مَلَكًا يَبْتَدِرُونَ أَيُّهُمْ يَكْتُبُهَا لَكَ، أَوْ مَنْ يَرْفَعُهَا لَكَ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

একাকী নামায আদায়কারী ব্যক্তি سمع الله لمن حمده এবং ربنا لك الحمد উভয়ই পাঠ করবে এবং ইমামের পিছনে নামায আদায় করার সময় মুকতাদী سمع الله لمن حمده না বলে শুধু ربنا لك الحمد বলবে। এ বিষয়ে ইমামদের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে ইমাম সম্পর্কে মতানৈক্য রয়েছে। ইমাম শাফিঈ (র)-এর মতে ইমামের উভয় বাক্য বলতে হবে। ইমাম আবূ হানীফা (র), ইমাম মালিক (র) এবং ইমাম আহমদ (র)-এর মতে ইমাম শুধু سمع الله لمن حمده বলবে। ইমাম শাফিঈ (র) দলীল হিসেবে হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণিত হাদীস: أن النبی صلی الله عليه وسلم كان يجمع بين الذكرين “নবী করীম (সা) উভয় যিকির একত্রে আদায় করতেন" পেশ করেন। ইমাম আবূ হানীফা (র) দলীল হিসেবে এই হাদীস এবং এ ধরনের অন্যান্য হাদীস পেশ করেন যাতে হুযূর (সা) শুধু سمع الله لمن حمده বলেছেন। তাই হযরত আতা ইবনে আবী রাবাহ (রা) হাদীসের এই অংশের মাধ্যমে দলীল পেশ করেছেন যে, ইমাম শুধু سمع الله لمن حمده বলবে এবং মুকতাদী শুধু ربنا لك الحمد বলবে। কেননা এইক্ষেত্রে নবী করীম (সা) ইমাম ও মুকতাদীর আমল বন্টন করে দিয়ে বলেছেনঃ إذا قال الإمام سمع الله لمن حمده قولوا ربنا لك الحمد "যখন ইমাম سمع الله لمن حمده বলবে, তখন তোমরা ربنا لك الحمد বল"। অতঃপর ইমাম কিভাবে মুকতাদীর কাজে হস্তক্ষেপ করবেন এবং মুকতাদী কিভাবে ইমামের কাজে হস্তক্ষেপ করবে ? হযরত আবূ হুরায়রা (রা)-এর হাদীসের জওয়াব হলো এই যে, এটা একাকী নামায আদায়কারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ১০৬ | মুসলিম বাংলা