মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৪. নামায অধ্যায়

হাদীস নং: ১০৫
তাতবীক রহিত হওয়ার বর্ণনা
১০৫। হযরত সাআদ ইবনে মালিক (রাযিঃ) বলেনঃ আমরা তাতৰীক করতাম, এরপর আমাদের প্রতি নির্দেশ হলো, যেন আমরা হাঁটু আঁকড়িয়ে ধরি।
عَنْ أَبِي يَعْفُورَ، عَنْ مَنْ حَدَّثَهُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «كُنَّا نُطَبِّقُ، ثُمَّ أُمِرْنَا بِالرُّكَبِ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

তাতবীক (تطبيق) হলো উভয় হাত মিলিয়ে উভয় রানের মাঝে চেপে ধরা। প্রথমত রুকূ এইভাবে আদায় করা হতো। অতঃপর হুযূর (সা)-এর নির্দেশে এই পদ্ধতি রহিত হয়ে যায় এবং রুকূ করার সময় হাত দ্বারা হাঁটু ধরার সুন্নাত চালু হয়ে এখনো তা অব্যাহত আছে। রহিত হওয়া সম্পর্কে এই হাদীস প্রমাণ বহন করে। এছাড়া অন্যান্য সহীহ হাদীসেও এর প্রমাণ রয়েছে। হানাফী মাযহাব সহ অন্যান্য উলামায়ে কিরাম এই আমলের উপর বিদ্যমান। হযরত ইবনে মাসউদ (রা) এবং তাঁর ছাত্র ও অনুসারীগণ তাতবীক সমর্থন করেন। এর উপর কোন বিরোধী মতবাদের লোক হানাফীদের অভিযোগ করে থাকে যে, হাত (رفع يدين) উঠানোর মাসয়ালায় তারা সমস্ত সাহাবাকে ছেড়ে হযরত ইবনে মাসউদ (রা)-এর রিওয়ায়েতের অনুসরণ করেছে, অথচ এখানে হযরত ইবনে মাসউদ (রা)-এর বিরোধিতা করেছে। সুতরাং বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে যে, হযরত ইমাম আবূ হানীফা (র)-এর চিন্তাধারা অভিযোগের উপযুক্ত, না প্রশংসার যোগ্য। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, হাত উঠানো (رفع يدين) সম্পর্কে তাঁরা হযরত ইবনে মাসউদ (রা)-এর সহীহ্ হাদীস পেয়েছেন এবং তা রহিত হওয়া সম্পর্কে কোন মরফু' (معروف), মওকুফ (موقوف), সহীহ (صحيح), যঈফ (ضعيف) সুস্পষ্ট বা ইঙ্গিত (سباحة وكناية) মূলক হাদীস পাননি। তাই এই হাদীস গ্রহণ করেছেন। এবং হাত না উঠানো সুন্নাত বলে ঘোষণা করেছেন। এখানে তাতবীক রহিত হওয়া সম্পর্কে সহীহ হাদীস রয়েছে, তাই রহিত হওয়ার সম্পর্কে পক্ষে মতামত পেশ করেছেন। সুতরাং তাতবীক সুন্নাত নয়, বরং হাঁটু ধরা সুন্নাত। সুতরাং তাঁরা সহীহ্ হাদীস ও সহীহ সুন্নাতের উপর আমল করেছেন এবং অপরটি পরিত্যাগ করেছেন।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান