মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৪. নামায অধ্যায়

হাদীস নং: ১০৭
সিজদার অবস্থা সম্পর্কে বর্ণনা
১০৭। হযরত ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ নবী করীম (ﷺ) সিজদা করার সময় উভয় হাত রাখার পূর্বে মাটির উপর স্বীয় হাঁটুদ্বয় রাখতেন এবং উঠার সময় হাঁটুর আগেই উভয় হাত উঠাতেন।
عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَجَدَ وَضَعَ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ يَدَيْهِ، وَإِذَا قَامَ رَفَعَ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

ইমাম আবূ হানীফা (র), ইমাম শাফিঈ (র) এবং ইমাম আহমদ (র)- এর মতে সিজদায় যাওয়ার সময় প্রথম মাটির উপর হাঁটুদ্বয়, এরপর দু'হাত রাখতে হবে এবং সিজদা থেকে উঠার সময় প্রথম দু'হাত এরপর দু'হাঁটু উঠাতে হবে। দলীল হিসেবে তাঁরা ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রা) বর্ণিত হাদীস পেশ করে থাকেন। ইমাম মালিক (র) ও ইমাম আওযাঈ (র)-এর মতে সিজদায় যাওয়ার সময় মাটির উপর প্রথম দু'হাঁটুর পূর্বে হাত রাখতে হবে। তাঁরা দলীল হিসেবে আবূ দাউদ শরীফে হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণিত মরফু হাদীস পেশ করে থাকেনঃ إذا سجد أحدكم فلا يبرك كما يبرك البعير و يضع يديه قبل ركبتيه "যখন তোমাদের মধ্যে কেউ সিজদা করবে, তখন উটের মত বসবে না, বরং হাঁটুর আগে স্বীয় হাত (মাটিতে) রাখবে।" অথবা হযরত ইবনে উমর (রা) -এর মওকুফ (موقوف) হাদীস, তিনি হাঁটু রাখার পূর্বে হাত রাখতেন। উপরোক্ত তিনজন ইমামের মাযহাব সহীহ ও সঠিক। কেননা হযরত ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রা)-এর হাদীস হযরত আবূ হুরায়রা (রা)-এর হাদীস থেকে সহীহ, সুস্পষ্ট এবং অগ্রগণ্য। ইমাম তিরমিযী এটাকে গরীব (غريب) বলেছেন। এর সনদের ক্রমধারায় আবদুল্লাহ্ ইবনে সাঈদ ইবনে মাকবুরী রয়েছেন, ইবনে খুযায়মা যার থেকে রিওয়ায়েত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা হাঁটুর পূর্বে হাত রাখতাম কিন্তু এর পর আমাদেরকে হাতের পূর্বে হাঁটু লাগানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া হযরত আবূ হুরায়রা (রা)-এর হাদীসের মূল বিষয়ের সাথে বিরোধ রয়েছে। কেননা যখন হাত প্রথমে রাখবে এবং হাঁটু পরে, তখনই উট বসার সাদৃশ্য হবে। অথচ প্রথম থেকে এর উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
(ইবনে হুমাম বলেন, হযরত ওয়ায়েলের হাদীসে রয়েছে اذا انحض اعتمد على فخذيه "নবী করীম (সা) যখন উঠতেন তখন তিনি রানের সাহায্য গ্রহণ করতেন।" হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে, হুযূর (সা) নামাযে উঠার সময় হাএেরদ্বারা সাহায্য নিয়ে। উঠতে নিষেধ করেছেন। এখন হুযূর (সা) থেকে মাটির উপর থেকে হাতের সাহায্য নিয়ে উঠা সম্পর্কে যে বর্ণনা রয়েছে, তা তাঁর পরিণত বয়সের উপর যুক্ত হবে। এটা শুধু জায়েয এ বিষয়টি বলার উদ্দেশ্যেই সম্ভবত আঁ হযরত (সা)- এর এই আমল ছিল।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ১০৭ | মুসলিম বাংলা