মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
৩. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৬৩
মোযার উপর মাসেহ করা
৬৩। হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, আমি জিহাদের উদ্দেশ্যে ইরাক গমন করি। সেখানে হযরত সাআদ ইবনে মালিক (রাযিঃ)-কে মোযার উপর মাসেহ করতে দেখে জিজ্ঞাসা করলাম; হযরত! এটা কি ? তিনি বললেনঃ হে ইবনে উমর ! যখন তুমি তোমার পিতার নিকট যাবে, তখন এ সম্পর্কে তাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করবে। হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, অতঃপর আমি আমার পিতার নিকট ফিরে আসার পর তাঁর নিকট এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন ঃ আমি হুযূর (ﷺ)-কে (মোযার উপর) মাসেহ করতে দেখেছি। অতঃপর আমরাও মাসেহ করা শুরু করি।
অন্য এক রিওয়ায়েতে আছে যে, কোন এক যুদ্ধের উদ্দেশ্যে একবার আমি, ইরাক গমন করি। সেখানে গিয়ে আমি হযরত সাআদ (রাযিঃ)-কে মোযার উপর মাসেহ করতে দেখি। তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, এটি আবার কি? তিনি আমাকে বললেনঃ হযরত উমরের নিকট যাওয়ার পর তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে। হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, অতঃপর আমি বাড়ি ফিরে এসে এ সম্পর্কে হযরত উমর (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন : আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে (মোযার উপর) মাসেহ করতে দেখেছি। তাই আমরাও মাসেহ করতে শুরু করেছি।
অপর এক রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, আমি গাযওয়ায়ে জলুলায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে ইরাক পৌঁছি। সেখানে হযরত সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাযিঃ)-কে মোযার উপর মাসেহ করতে দেখি। আমি তাকে বললাম, হে সাআদ, এটা কি ? তিনি আমাকে বললেন : যখন তুমি আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর (রাযিঃ)-এর সাথে সাক্ষাত করবে, তখন তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করবে। অতঃপর ফিরে এসে আমি হযরত উমর (রাযিঃ)-এর সাথে সাক্ষাত করলাম এবং তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। হযরত উমর (রাযিঃ) বললেন : হযরত সাআদ (রাযিঃ) সত্যবাদী। আমি হুযুর (ﷺ)-কে এরূপ করতে দেখেছি। তখন আমরাও এরূপ (মাসেহ) করেছি।
অন্য এক রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, আমরা জিহাদের জন্য ইরাক গমন করি। তখন সেখানে হযরত সাআদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস (রাযিঃ)-কে মোযার উপর মাসেহ করতে দেখি। আমি এটাকে নতুন পদ্ধতি মনে করলাম। তখন হযরত সাআদ (রাযিঃ) আমাকে বললেন : যখন তুমি হযরত উমর (রাযিঃ)-এর নিকট যাবে, তখন এ বিষয়ে তাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করবে। ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, যখন আমি হযরত উমর (রাযিঃ)-এর নিকট পৌছি, তখন আমি তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করি। তিনি বলেন, তোমার চাচা (হযরত সাআদ) তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী ও ফকীহ্! আমি হুযূর (ﷺ)-কে (মোযার উপর) মাসেহ করতে দেখেছি। তখন আমরাও মাসেহ করেছি।
অন্য এক রিওয়ায়েতে আছে যে, কোন এক যুদ্ধের উদ্দেশ্যে একবার আমি, ইরাক গমন করি। সেখানে গিয়ে আমি হযরত সাআদ (রাযিঃ)-কে মোযার উপর মাসেহ করতে দেখি। তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, এটি আবার কি? তিনি আমাকে বললেনঃ হযরত উমরের নিকট যাওয়ার পর তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে। হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, অতঃপর আমি বাড়ি ফিরে এসে এ সম্পর্কে হযরত উমর (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন : আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে (মোযার উপর) মাসেহ করতে দেখেছি। তাই আমরাও মাসেহ করতে শুরু করেছি।
অপর এক রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, আমি গাযওয়ায়ে জলুলায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে ইরাক পৌঁছি। সেখানে হযরত সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাযিঃ)-কে মোযার উপর মাসেহ করতে দেখি। আমি তাকে বললাম, হে সাআদ, এটা কি ? তিনি আমাকে বললেন : যখন তুমি আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর (রাযিঃ)-এর সাথে সাক্ষাত করবে, তখন তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করবে। অতঃপর ফিরে এসে আমি হযরত উমর (রাযিঃ)-এর সাথে সাক্ষাত করলাম এবং তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। হযরত উমর (রাযিঃ) বললেন : হযরত সাআদ (রাযিঃ) সত্যবাদী। আমি হুযুর (ﷺ)-কে এরূপ করতে দেখেছি। তখন আমরাও এরূপ (মাসেহ) করেছি।
অন্য এক রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, আমরা জিহাদের জন্য ইরাক গমন করি। তখন সেখানে হযরত সাআদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস (রাযিঃ)-কে মোযার উপর মাসেহ করতে দেখি। আমি এটাকে নতুন পদ্ধতি মনে করলাম। তখন হযরত সাআদ (রাযিঃ) আমাকে বললেন : যখন তুমি হযরত উমর (রাযিঃ)-এর নিকট যাবে, তখন এ বিষয়ে তাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করবে। ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেন, যখন আমি হযরত উমর (রাযিঃ)-এর নিকট পৌছি, তখন আমি তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করি। তিনি বলেন, তোমার চাচা (হযরত সাআদ) তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী ও ফকীহ্! আমি হুযূর (ﷺ)-কে (মোযার উপর) মাসেহ করতে দেখেছি। তখন আমরাও মাসেহ করেছি।
عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي الْجَهْمِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَدِمْتُ عَلَى غَزْوَةِ الْعِرَاقِ، فَإِذَا سَعْدُ بْنُ مَالِكٍ يَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ، فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ فَقَالَ: يَا بْنَ عُمَرَ، إذَا قَدِمْتَ عَلَى أَبِيكَ فَسَلْهُ عَنْ ذَلِكَ، وَقَالَ: فَأَتَيْتُهُ فَسَأَلْتُهُ، فَقَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «يَمْسَحُ» .
وَفِي رِوَايَةٍ، قَالَ: قَدِمْتُ الْعِرَاقَ لِلْغَزْوِ، فَإِذَا سَعْدُ بْنُ مَالِكٍ يَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ، فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَ: إِذَا قَدِمْتَ عَلَى عُمَرَ فَسَلْهُ، فَقَالَ: قَدِمْتُ عَلَى عُمَرَ فَسَأَلْتُهُ، فَقَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «يَمْسَحُ فَمَسَحْنَا» .
وَفِي رِوَايَةٍ، قَالَ: " قَدِمْتُ الْعِرَاقَ لِغَزْوَةِ جَلُولَاءَ، فَرَأَيْتُ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ يَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ، فَقُلْتُ: مَا هَذَا يَا سَعْدُ؟ فَقَالَ: إذَا لَقِيتَ أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ فَاسْأَلْهُ، قَالَ: فَلَقِيتُ عُمَرَ، فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا صَنَعَ، فَقَالَ عُمَرُ: صَدَقَ سَعْدٌ، رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُهُ، فَصَنَعْنَا ".
وَفِي رِوَايَةٍ، قَالَ: قَدِمْنَا عَلَى غَزْوِ الْعِرَاقِ، فَرَأَيْتُ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ يَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ، فَأَنْكَرْتُ عَلَيْهِ، فَقَالَ لِي: إِذَا قَدِمْتَ عَلَى عُمَرَ فَاسْأَلْهُ عَنْ ذَلِكَ، قَالَ ابْنُ عُمَرَ: فَلَمَّا قَدِمْتُ عَلَيْهِ سَأَلْتُهُ وَذَكَرْتُ لَهُ مَا صَنَعَ، فَقَالَ: عَمُّكَ أَفْقَهُ مِنْكَ، رَأَيْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «يَمْسَحُ فَمَسَحْنَا»
وَفِي رِوَايَةٍ، قَالَ: قَدِمْتُ الْعِرَاقَ لِلْغَزْوِ، فَإِذَا سَعْدُ بْنُ مَالِكٍ يَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ، فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَ: إِذَا قَدِمْتَ عَلَى عُمَرَ فَسَلْهُ، فَقَالَ: قَدِمْتُ عَلَى عُمَرَ فَسَأَلْتُهُ، فَقَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «يَمْسَحُ فَمَسَحْنَا» .
وَفِي رِوَايَةٍ، قَالَ: " قَدِمْتُ الْعِرَاقَ لِغَزْوَةِ جَلُولَاءَ، فَرَأَيْتُ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ يَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ، فَقُلْتُ: مَا هَذَا يَا سَعْدُ؟ فَقَالَ: إذَا لَقِيتَ أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ فَاسْأَلْهُ، قَالَ: فَلَقِيتُ عُمَرَ، فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا صَنَعَ، فَقَالَ عُمَرُ: صَدَقَ سَعْدٌ، رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُهُ، فَصَنَعْنَا ".
وَفِي رِوَايَةٍ، قَالَ: قَدِمْنَا عَلَى غَزْوِ الْعِرَاقِ، فَرَأَيْتُ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ يَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ، فَأَنْكَرْتُ عَلَيْهِ، فَقَالَ لِي: إِذَا قَدِمْتَ عَلَى عُمَرَ فَاسْأَلْهُ عَنْ ذَلِكَ، قَالَ ابْنُ عُمَرَ: فَلَمَّا قَدِمْتُ عَلَيْهِ سَأَلْتُهُ وَذَكَرْتُ لَهُ مَا صَنَعَ، فَقَالَ: عَمُّكَ أَفْقَهُ مِنْكَ، رَأَيْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «يَمْسَحُ فَمَسَحْنَا»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
মুহাদ্দিসীনের একটি দল কর্তৃক এই হাদীস বর্ণিত আছে। বুখারী শরীফে মরফূ হাদীসে এভাবে বর্ণিত আছে যে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর (রা)-এর নিকট মোযার উপর মাসেহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি তখন বললেনঃ যখন হযরত সাআদ (রা) তোমাদের নিকট কোন হাদীস বর্ণনা করে, তখন অন্য কারো নিকট এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করো না।
এই মাসআলা সম্পর্কে হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর (রা)-এর অবগত না হওয়া এই কারণে ছিল যে, এ যাবত উক্ত মাসয়ালা সম্পর্কে প্রথম থেকে কোন খবর তাঁর নিকট পৌঁছেনি। অথবা তিনি এটা ধারণা করেছিলেন যে, মোযার উপর মাসেহ করা শুধু সফরের জন্যই প্রযোজ্য, স্থায়ী আবাসে নয়। তাই হযরত সাআাদ (রা)-কে যখন স্থায়ী আবাসে মাসেহ করতে দেখেন, তখন অবাক হয়ে গেলেন এবং হঠাৎ তা মেনে নিতে পারেননি। তাই অবশেষে স্বীয় পিতার নিকট থেকে এ মাসয়ালা সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হলেন।
এই মাসআলা সম্পর্কে হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর (রা)-এর অবগত না হওয়া এই কারণে ছিল যে, এ যাবত উক্ত মাসয়ালা সম্পর্কে প্রথম থেকে কোন খবর তাঁর নিকট পৌঁছেনি। অথবা তিনি এটা ধারণা করেছিলেন যে, মোযার উপর মাসেহ করা শুধু সফরের জন্যই প্রযোজ্য, স্থায়ী আবাসে নয়। তাই হযরত সাআাদ (রা)-কে যখন স্থায়ী আবাসে মাসেহ করতে দেখেন, তখন অবাক হয়ে গেলেন এবং হঠাৎ তা মেনে নিতে পারেননি। তাই অবশেষে স্বীয় পিতার নিকট থেকে এ মাসয়ালা সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হলেন।
