আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৫৬- পানাহার সংক্রান্ত অধ্যায়
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৫৪০৩
২৮৫১. সিলক ও যব প্রসঙ্গে
৫০১১। ইয়াহয়া ইবনে বুকায়র (রাহঃ) ......... সাহল ইবনে সা’দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জুম‘আর দিন আসলে আমরা অত্যধিক খুশী হতাম। এক বৃদ্ধা আমাদের জন্য সিলক (মূলা জাতীয় এক প্রকার সুস্বাদু সবজি) -এর মূল তুলে তা তার ডেগে চড়িয়ে দিতেন। তারপর এতে সামান্য কিছু যব ছেড়ে দিতেন। নামাযের পর আমরা তাঁর সাথে দেখা করতে গেলে তিনি এ খাবার আমাদের পরিবেশন করতেন। এ কারণেই জুম‘আর দিন আসলে আমরা খুব খুশী হতাম। আমরা সকালের আহার এবং বিশ্রাম গ্রহণ করতাম না জুম‘আর পর ছাড়া। আল্লাহর কসম! সে খাদ্যে কোন চর্বি বা তৈলাক্ত কিছু থাকতো না।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হযরত সাহ্ল রাযি.-এর বর্ণনাটি এখানে সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিস্তারিত বর্ণনায় আছে, তিনি বলেন, জুমু'আর দিন আমরা আনন্দিত হতাম। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে এখানে উল্লিখিত এ কথাগুলো বলেন। অর্থাৎ জুমু'আর নামাযের পরে ওই বৃদ্ধার কাছে এসে যে খাবার খেতে পারতেন, সেটাই ছিল আনন্দের কারণ। এ বৃদ্ধার নাম জানা যায় না। তবে তিনি তাঁর এক কীর্তিতে স্মরণীয় হয়ে আছেন ও থাকবেন। তিনি জুমু'আর মুসল্লীদের আপ্যায়িত করতেন। আপ্যায়নের উপকরণ ছিল নিতান্তই সাধারণ। চরম ক্ষুধার্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ তা খেতে চাবে না। বাগান থেকে পালং জাতীয় এক প্রকার সবজি মূলসহ তুলতেন। তারপর সামান্য যবের দানা পিষে তা -এই সবজির সঙ্গে মিশিয়ে পানিতে সেদ্ধ করতেন। না তেল, না কোনও মশলা। মুসুল্লীগণ জুমু'আর নামায পড়ে ফেরার সময় তাকে সালাম দিতেন। তাদের উদ্দেশ্য হত তার অতিথি হিসেবে ওই খাবার খাওয়া। তিনি তাদেরকে পরম স্নেহে ওই খাবার খেতে দিতেন। তারা পরমানন্দে তা খেয়ে নিতেন। তাদের জন্য এটা ছিল অনেক বড় প্রাপ্তি। তাই তারা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে এ কথা মনে রেখেছেন এবং পরবর্তীদের কাছে এটা প্রকাশ ও প্রচারও করেছেন।
এর দ্বারা আঁচ করা যায় সাহাবায়ে কেরাম কত গরীব ছিলেন। তাদের খাদ্যের কত অভাব ছিল। তা না হলে অত তুচ্ছ ও সাধারণ খাবার এমন আনন্দে তারা কেন খাবেন? এমনই কষ্ট-ক্লেশের জীবন তারা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে যাপন করতেন। এরই মধ্য দিয়ে তারা দীন শিখতেন এবং বিপুল উদ্দীপনায় দীনের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় প্রাণ বিলাতেন। তাদের সে অসামান্য ত্যাগের বদৌলতেই এ মহান দীন আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে।
সাহাবীগণ যখন এ বৃদ্ধার কাছে আসতেন, তখন তারা তাকে সালাম দিতেন। বোঝা গেল বৃদ্ধা নারী মাহরাম না হলেও তাকে সালাম দেওয়া যেতে পারে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ফিতনার আশঙ্কা না থাকলে পরনারীকে সালাম দেওয়া যাবে। বৃদ্ধা নারীর ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য।
খ. আপন সামর্থ্য অনুযায়ী মেহমানকে আপ্যায়ন করা চাই। তাতে খাবারের বস্তু যত সাধারণই হোক না কেন।
গ. আন্তরিকতার সঙ্গে যে খাবার পেশ করা হয় তা যত সাধারণই হোক না কেন, পরম আনন্দের সঙ্গেই তা গ্রহণ করা উচিত।
ঘ. কারও দ্বারা কোনওভাবে উপকৃত হলে তা লুকাতে নেই: অকুণ্ঠভাবে প্রকাশ কর উচিত। এটাও কৃতজ্ঞতার অন্তর্ভুক্ত।
এর দ্বারা আঁচ করা যায় সাহাবায়ে কেরাম কত গরীব ছিলেন। তাদের খাদ্যের কত অভাব ছিল। তা না হলে অত তুচ্ছ ও সাধারণ খাবার এমন আনন্দে তারা কেন খাবেন? এমনই কষ্ট-ক্লেশের জীবন তারা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে যাপন করতেন। এরই মধ্য দিয়ে তারা দীন শিখতেন এবং বিপুল উদ্দীপনায় দীনের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় প্রাণ বিলাতেন। তাদের সে অসামান্য ত্যাগের বদৌলতেই এ মহান দীন আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে।
সাহাবীগণ যখন এ বৃদ্ধার কাছে আসতেন, তখন তারা তাকে সালাম দিতেন। বোঝা গেল বৃদ্ধা নারী মাহরাম না হলেও তাকে সালাম দেওয়া যেতে পারে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ফিতনার আশঙ্কা না থাকলে পরনারীকে সালাম দেওয়া যাবে। বৃদ্ধা নারীর ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য।
খ. আপন সামর্থ্য অনুযায়ী মেহমানকে আপ্যায়ন করা চাই। তাতে খাবারের বস্তু যত সাধারণই হোক না কেন।
গ. আন্তরিকতার সঙ্গে যে খাবার পেশ করা হয় তা যত সাধারণই হোক না কেন, পরম আনন্দের সঙ্গেই তা গ্রহণ করা উচিত।
ঘ. কারও দ্বারা কোনওভাবে উপকৃত হলে তা লুকাতে নেই: অকুণ্ঠভাবে প্রকাশ কর উচিত। এটাও কৃতজ্ঞতার অন্তর্ভুক্ত।
