শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

১২. জিহাদের বিধানাবলী সম্পর্কিত

হাদীস নং: ৫২৫৩
১০. বিজিত ভূমিতে ইমাম বা মুসলিম সরকার প্রধান কি কর্মপদ্ধতি অবলম্বন করবেন
৫২৫৩। আব্দুল্লাহ্ ইবন মুহাম্মাদ ইবন সাঈদ ইবন আবী মারইয়াম (রাহঃ)..... আব্দুল্লাহ্ ইবন আমর ইবন আ'স (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমর ইবনুল 'আস্ (রাযিঃ) মিশর-ভূখণ্ড জয় করলেন তখন তিনি নিজের সঙ্গে থাকা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সমস্ত সাহাবাদের একত্রিত করে তাদের থেকে পরামর্শ নিলেন যে, মিশরের ঐ ভূমিকে ওই সমস্ত লোকদের মাঝে বণ্টন করা হবে, যারা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে, যেমন তিনি তাদের মাঝে গনীমতের সম্পদ বণ্টন করেছেন এবং যেভাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) খায়বারের ভূমি ঐ সমস্ত লোকদের মাঝে বণ্টন করেছেন, যারা সেখানে উপস্থিত ছিল। অথবা সেটাকে সেভাবেই ছেড়ে দেয়া হবে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমীরুল মু'মিনীন-এর অভিমত জ্ঞাত হবে। তাঁদের কিছু সংখ্যক যাঁদের মধ্যে যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রাযিঃ) ও ছিলেন, বললেন, আল্লাহর কসম! এটা আপনার এবং (আমীরুল মু'মিনীন) উমার (রাযিঃ)-এর ইখতিয়ারে নেই। এটা সেই ভূমি, যা আল্লাহ্ তা'আলা আমাদের হাতে জয় করেছেন। আমরা এর উপর আমাদের অশ্ববাহিনী ও লোকদেরকে দৌড়ায়েছি এবং এর মাঝে যা কিছু রয়েছে তা আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি। সুতরাং আপনার জন্য সেটা বণ্টন করা সম্পদ বণ্টন করা অপেক্ষা অধিক জরুরী। আবার তাদের কেউ কেউ বললেন যে, আমরা এ বিষয়ে আমীরুল মু'মিনীনের অভিমত না জেনে তা কিছুতেই বণ্টন করবো না। তারপর তারা একমত হলেন যে, তাঁরা সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে উমার (রাযিঃ) কে লিখবেন এবং তাঁকে তাঁদের অভিমত সম্পর্কে অবহিত করবেন। উমার (রাযিঃ) তাঁদেরকে লিখলেন :

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম (দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে)
হামদ ও সালাতের পর আমার নিকট তোমাদের পক্ষ থেকে এই মর্মে সংবাদ পৌঁছেছে যে, তোমরা ঐকমত্য পোষণ করেছ যে, তোমরা মুসলমানদের উপহারসমূহ, শত্রু ও কাফিরদের মুকাবিলায় লড়াইকারীদের মেহনত ও পরিশ্রমকে ছিনতাই করবে। আমি যদি তা তোমাদের মাঝে বণ্টন করে দেই তাহলে তোমাদের পরবর্তী মুসলমানদের জন্য এরূপ কোন বস্তু অবশিষ্ট থাকবে না, যা দ্বারা তারা তোমাদের শত্রুর বিরুদ্ধে শক্তি অর্জনে সক্ষম হবে। যদি তোমাদেরকে আল্লাহর রাহে উৎসাহিত করা, মুসলমানদের থেকে তাদের বোঝা বিদূরিত করা এবং তাদের দুর্বল ও রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের উপর জারী করা না হত, তাহলে আমি তা তোমাদের মাঝে বণ্টন করে দিতাম। সুতরাং তা অবশিষ্ট মুসলমানদের জন্য গনীমত হিসাবে রেখে দাও, যতক্ষণ না মুসলমানদের আখেরী বা সর্বশেষ দল জিহাদ করে খতম হয়ে যায়।

ওয়াসসালামু আলাইকুম

আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেন : এই হাদীসে বিজিত ভূমি সম্পর্কে ঐ বিধানই বর্ণিত হয়েছে, যা আমরা উল্লেখ করেছি। অধিকন্তু এর বিধান অবশিষ্ট সেই সমস্ত সম্পদ থেকে পৃথক যা শত্রু থেকে গনীমত হিসাবে লাভ হয়েছে। যদি কোন প্রশ্নকারী বলে যে, এই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, সাহাবা কিরাম রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন যে, তিনি খায়বারকে ঐ সমস্ত লোকদের মাঝে বণ্টন করে দিলেন, যারা সেখানে হাযির ছিলো। সুতরাং খায়বারের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর আমল ঐ সমস্ত লোকদের প্রমাণকে অস্বীকার করছে যারা ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম সুফইয়ান (সওরী) এবং তাদের অনুসারীদের মতাদর্শকে অনুসরণ করছে যে, বিজিত ভূমি মুসলমানদের প্রয়োজনে ছেড়ে দেয়া হবে।

তাকে (উত্তরে) বলা হবে যে, এই হাদীসটি আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খায়বার সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ বিষয় তুলে ধরেনি। কিন্তু অন্য হাদীসে বিশদ বিবরণ রয়েছে :
5253 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ , قَالَ: ثنا نُعَيْمُ بْنُ حَمَّادٍ , قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ , عَنْ عَمْرِو بْنِ قَيْسٍ السَّكُونِيِّ , عَنْ أَبِيهِ , عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ , قَالَ " لَمَّا فَتَحَ عَمْرُو بْنُ الْعَاصِ أَرْضَ مِصْرَ , جَمَعَ مَنْ كَانَ مَعَهُ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاسْتَشَارَهُمْ فِي قِسْمَةِ أَرْضِهَا بَيْنَ مَنْ شَهِدَهَا , كَمَا قَسَمَ بَيْنَهُمْ غَنَائِمَهُمْ , وَكَمَا قَسَمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْبَرَ بَيْنَ مَنْ شَهِدَهَا أَوْ يُوقِفُهَا , حَتَّى رَاجَعَ فِي ذَلِكَ رَأْيَ أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ , فَقَالَ نَفَرٌ مِنْهُمْ , فِيهِمُ الزُّبَيْرُ بْنُ الْعَوَّامِ , وَاللهِ مَا ذَاكَ إِلَيْكَ , وَلَا إِلَى عُمَرَ , إِنَّمَا هِيَ أَرْضٌ فَتَحَ اللهُ عَلَيْنَا , وَأَوْجَفْنَا عَلَيْهَا خَيْلَنَا وَرِجَالَنَا , وَحَوَيْنَا مَا فِيهَا , فَمَا قِسْمَتُهَا بِأَحَقَّ مِنْ قِسْمَةِ أَمْوَالِهَا , وَقَالَ نَفَرٌ مِنْهُمْ: لَا نَقْسِمُهَا حَتَّى نُرَاجِعَ رَأْيَ أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ فِيهَا , فَاتَّفَقَ رَأْيُهُمْ عَلَى أَنْ يَكْتُبُوا إِلَى عُمَرَ فِي ذَلِكَ , وَيُخْبِرُوهُ فِي كِتَابِهِمْ إِلَيْهِ , بِمَقَالَتِهِمْ , فَكَتَبَ إِلَيْهِمْ عُمَرُ " بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ: أَمَّا بَعْدُ , فَقَدْ وَصَلَ إِلَيَّ مَا كَانَ مِنْ إِجْمَاعِكُمْ عَلَى أَنْ تَغْتَصِبُوا عَطَايَا الْمُسْلِمِينَ , وَمُؤَنَ مَنْ يَغْزُو أَهْلَ الْعَدُوِّ , وَأَهْلَ الْكُفْرِ , وَإِنِّي إِنْ قَسَمْتُهَا بَيْنَكُمْ , لَمْ يَكُنْ لِمَنْ بَعْدَكُمْ مِنَ الْمُسْلِمِينَ مَادَّةً يُقَوُّونَ بِهِ عَلَى عَدُوِّكُمْ , وَلَوْلَا مَا أَحْمِلُ عَلَيْهِ فِي سَبِيلِ اللهِ , وَأَدْفَعُ عَنِ الْمُسْلِمِينَ مِنْ مُؤَنِهِمْ , وَأَجْرِي عَلَى ضُعَفَائِهِمْ وَأَهْلِ الدِّيوَانِ مِنْهُمْ , لَقَسَمْتُهَا بَيْنَكُمْ , فَأَوْقِفُوهَا فَيْئًا , عَلَى مَنْ بَقِيَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ حَتَّى يَنْقَرِضَ آخِرُ عِصَابَةٍ تَغْزُو مِنَ الْمُؤْمِنِينَ , وَالسَّلَامُ عَلَيْكُمْ " قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ , مَا قَدْ دَلَّ فِي حُكْمِ الْأَرْضِينَ الْمُفْتَتَحَةِ عَلَى مَا ذَكَرْنَا , وَأَنَّ حُكْمَهُمَا , خِلَافُ حُكْمِ مَا سِوَاهَا مِنْ سَائِرِ الْأَمْوَالِ الْمَغْنُومَةِ مِنَ الْعَدُوِّ فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ ذَكَرَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ قَسَمَ خَيْبَرَ بَيْنَ مَنْ كَانَ شَهِدَهَا» , فَذَلِكَ يَنْفِي أَنْ يَكُونَ فِيمَا فَعَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي خَيْبَرَ حُجَّةً لِمَنْ ذَهَبَ إِلَى مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ أَبُو حَنِيفَةَ , وَسُفْيَانُ , وَمَنْ تَابَعَهُمَا , فِي إِيقَافِ الْأَرْضِينَ الْمُفْتَتَحَةِ لِنَوَائِبِ الْمُسْلِمِينَ , قِيلَ لَهُ: هَذَا حَدِيثٌ لَمْ يُفَسِّرْ لَنَا فِيهِ كُلَّ الَّذِي كَانَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي خَيْبَرَ , [ص:251] وَقَدْ جَاءَ غَيْرُهُ فَبَيَّنَ لَنَا مَا كَانَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهَا
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৫২৫৩ | মুসলিম বাংলা