শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

৪. যাকাতের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৯৭৯
বনু হাশিমকে যাকাত প্রদান প্রসঙ্গে।
২৯৭৯। আবু উমাইয়া (রাহঃ) ….. আলী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি আব্বাস (রাযিঃ)-কে একবার বললাম, আপনি নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট সাদাকা উসূলের কাজে আপনাকে নিয়োগ দানের জন্য আবেদন করুন। তিনি তাঁর নিকট আবেদন করলে তিনি বললেন, আমি আপনাকে মানুষের গোনাহের এঁটো পানির ব্যাপারে কর্মচারী নিয়োগ করা পছন্দ করি না।
আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না যে, তিনি তাঁর জন্য মানুষের গোনাহের এঁটো পানির ব্যাপারে নিয়োগ দানকে পছন্দ করেন নি। তা (উক্ত মজুরি) তাঁর জন্য হারাম হওয়ার কারণে তা অপছন্দ করেছেন, এমনটি নয়। ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) বনু হাশিমের জন্য সাদাকা উসূলের কাজে নিয়োজিত হয়ে তার থেকে মজুরি গ্রহণ করা মাকরূহ মনে করতেন। তিনি বলেছেন, যেহেতু সাদাকা (যাকাত) দাতার সম্পদ থেকে সাদাকা বের হয়ে সেই (আট) খাতের লোকদের দিকে স্থানান্তরিত হয় যেগুলোর নাম আল্লাহ্ তা'আলা (কুরআন শরীফে) উল্লেখ করেছেন সুতরাং এই প্রেক্ষিতে সাদাকা দাতা স্বয়ং এর কতক অংশের মালিক হয়ে যায় যা তার জন্য হালাল নয়। তিনি (আবু ইউসুফ র) এই বিষয়ে আবু রাফি' (রাযিঃ)-এর হাদীস দ্বারাও দলীল পেশ করেন, যখন মাখযুমী (ব্যক্তি) তাঁর নিকট আবেদন করল, যেন তিনি তার সাথে সাদাকা উসূল করার কাজে বের হন এর থেকে বিনিময় পাওয়ার প্রত্যাশায়। আর এর থেকে কিছু একটা পাওয়া বিনিময় ও মজুরি ব্যতীত অসম্ভব।
পক্ষান্তরে এই বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ আবু ইউসুফ (রাহঃ)-এর বিরোধিতা করেছেন এবং তাঁরা বলেছেন, সাদাকা থেকে বিনিময় হিসাবে গ্রহণ করায় হাশেমীদের জন্য অসুবিধা নেই। যেহেতু সে তাঁর কাজের উপর বিনিময় গ্রহণ করছে, আর তা ধনীদের জন্য হালাল হিসাবে বিবেচিত। যখন এটি ধনীদের উপরে হারাম হয় না, যাদের ধনাঢ্যতার কারণে তাদের উপরে সাদাকা হারাম। অনুরূপভাবে যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, তা বন্ধু হাশিমের উপরেও হারাম হবে না, যাদের বংশমর্যাদার কারণে তাঁদের জন্য সাদাকা গ্রহণ করা হারাম।
বারীরা (রাযিঃ)-এর সাদাকার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি তা থেকে আহার করেছেন এবং বলেছেনঃ এটি তার জন্য সাদাকা আর আমাদের জন্য হাদিয়া-এটিই নিম্মোক্ত সনদে ফাহাদ (রাহঃ) আমাকে বর্ণনা করেছেনঃ
2979 - حَدَّثَنَا أَبُو أُمَيَّةَ , قَالَ: ثنا قَبِيصَةُ بْنُ عُقْبَةَ , قَالَ: ثنا سُفْيَانُ , عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ , عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي رَزِينٍ , عَنْ أَبِي رَزِينٍ , عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قُلْتُ لِلْعَبَّاسِ: سَلِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَعْمِلُكَ عَلَى الصَّدَقَاتِ. فَسَأَلَهُ فَقَالَ: «مَا كُنْتُ لِأَسْتَعْمِلَكَ عَلَى غَسَّالَةِ ذُنُوبِ النَّاسِ» . أَفَلَا تَرَى أَنَّهُ إِنَّمَا كَرِهَ لَهُ الِاسْتِعْمَالَ عَلَى غَسَّالَةِ ذُنُوبِ النَّاسِ لَا لِأَنَّهُ حَرَّمَ ذَلِكَ عَلَيْهِ لِحُرْمَةِ الِاجْتِعَالِ مِنْهُ عَلَيْهِ. وَقَدْ كَانَ أَبُو يُوسُفَ رَحِمَهُ اللهُ يَكْرَهُ لِبَنِي هَاشِمٍ أَنْ يَعْمَلُوا عَلَى الصَّدَقَةِ إِذَا كَانَتْ جُعَالَتُهُمْ مِنْهَا قَالَ: " لِأَنَّ الصَّدَقَةَ تَخْرُجُ مِنْ مَالِ الْمُتَصَدِّقِ إِلَى الْأَصْنَافِ الَّتِي سَمَّاهَا اللهُ تَعَالَى , فَيَمْلِكُ الْمُصَّدِّقُ بَعْضَهَا , وَهِيَ لَا تَحِلُّ لَهُ. وَاحْتَجَّ فِي ذَلِكَ أَيْضًا بِحَدِيثِ أَبِي رَافِعٍ حِينَ سَأَلَهُ الْمَخْزُومِيُّ أَنْ يَخْرُجَ مَعَهُ لِيُصِيبَ مِنْهَا , وَمُحَالٌ أَنْ يُصِيبَ مِنْهَا شَيْئًا إِلَّا بِعِمَالَتِهِ عَلَيْهَا وَاجْتِعَالِهِ مِنْهَا. وَخَالَفَ أَبَا يُوسُفَ رَحِمَهُ اللهُ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَقَالُوا: لَا بَأْسَ أَنْ يَجْتَعِلَ مِنْهَا الْهَاشِمِيُّ , لِأَنَّهُ إِنَّمَا يَجْتَعِلُ عَلَى عَمَلِهِ , وَذَلِكَ قَدْ يَحِلُّ لِلْأَغْنِيَاءِ. فَلَمَّا كَانَ هَذَا لَا يَحْرُمُ عَلَى الْأَغْنِيَاءِ الَّذِينَ يُحَرِّمُ عَلَيْهِمْ غِنَاهُمُ الصَّدَقَةَ , كَانَ كَذَلِكَ أَيْضًا فِي النَّظَرِ , لَا يَحْرُمُ ذَلِكَ عَلَى بَنِي هَاشِمٍ الَّذِينَ يُحَرِّمُ عَلَيْهِمْ نَسَبُهُمْ أَخْذَ الصَّدَقَةِ. وَقَدْ رُوِيَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا تَصَدَّقَ بِهِ عَلَى بَرِيرَةَ أَنَّهُ أَكَلَ مِنْهُ وَقَالَ: «هُوَ عَلَيْهَا صَدَقَةٌ، وَلَنَا هَدِيَّةٌ»
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ২৯৭৯ | মুসলিম বাংলা