শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
৪. যাকাতের অধ্যায়
হাদীস নং: ২৯৭৭
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৭৮
বনু হাশিমকে যাকাত প্রদান প্রসঙ্গে।
২৯৭৭-৭৮। আহমদ ইবন আব্দুল মু'মিন আল-খুরাসানী (রাহঃ) ….. আব্দুল্লাহ ইবন বুরায়দা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি আমার পিতা বুরায়দা (রাযিঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন মদীনা আগমন করেন তখন সালমান ফারসী (রাযিঃ) তাঁর নিকট তাজা খেজুরের একটি খাঞ্চা নিয়ে এলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, হে সালমান। এটি কী ? তিনি বললেন, আপনার জন্য এবং আপনার সাহাবীদের জন্য সাদাকা। তিনি বললেন, 'এটি উঠিয়ে নাও, আমরা সাদাকা খাইনা। তিনি তা উঠিয়ে নিলেন। এরপর তিনি পরের দিন অনুরূপভাবে তাঁর নিকট আসলেন এবং তা তাঁর সম্মুখে রাখলেন। তিনি বললেন, 'হে সালমান! এটি কী ? তিনি বললেন, হাদিয়া'। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁর সাহাবীদেরকে বললেন, ('খাওয়ার জন্য হাত) প্রসারিত কর'।
আবু জা'ফর (তাহাবী র) বলেনঃ এই সমস্ত হাদীস বনু হাশিমের উপরে সাদাকা হারাম (নিষিদ্ধ) হওয়ার বিষয়টি ব্যক্ত করছে। আমাদের জানা মতে এমন কোন হাদীস নেই, যা এই সমস্ত হাদীস কে রহিত করে দিয়েছে এবং এইগুলোর বিরোধী হয়েছে। তবে সেই হাদীস যা আমরা এই অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছি যাতে এরূপ কিছু নেই যা এই গুলোর বিরুদ্ধে প্রমাণ বহন করে।
প্রশ্নঃ কোন প্রশ্নকারী যদি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন যে, (বনু হাশিমের জন্য যে সাদাকা হারাম) উক্ত সাদাকা দ্বারা তো বিশেষ করে যাকাত উদ্দেশ্য। পক্ষান্তরে যাকাত ব্যতীত অপরাপর (ওয়াজিব) সাদাকা সমূহতে কোন অসুবিধা নেই (অর্থাৎ তা বনু হাশিমের জন্য হালাল হওয়া উচিত)।
উত্তরঃ উত্তরে তাঁকে বলা হবে যে, আপনি যা সাব্যস্ত করতে চাচ্ছেন উক্ত হাদীসগুলোতে তা রোধ করা হয়েছে। আর তা এভাবে বাহয ইবন হাকীম (রাযিঃ) এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট কোন কিছু আনা হলে, তিনি জিজ্ঞাসা করতেন ‘এটি হাদিয়া না সাদাকা ? যদি লোকেরা বলত সাদাকা তাহলে তিনি তাঁর সাহাবীদের বলতেন, তোমরা খেয়ে নাও। সাদাকা নিয়ে আগন্তুক জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি উক্তির ‘এটা সাদাকা’-এর পরে যাকাত না অন্য কিছু তিনি এই প্রশ্নের প্রয়োজন মনে করতেন না। অতএব এতে প্রমাণিত হল যে, এ ব্যাপারে অপরাপর (যাকাত, ফিৎরা কাফফারা সহ) সমস্ত সাদাকার বিধান অভিন্ন। সালমান (ফারসী রা)-এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, তিনি বলেছেনঃ এরপর আরেক বার আমি তার দরবারে আসলাম, তিনি বললেন, একি হাদিয়া না সাদাকা ? আমি বললাম বরং সাদাকা। যেহেতু আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, আপনারা একদল অভাবী লোক। সুতরাং তিনি এই (সাদাকা হওয়ার) কারণে তা খেতে বিরত থেকেছেন। আর সালমান (ফারসী রা) তখন গোলাম ছিলেন যার উপর যাকাত ওয়াজিব নয়। সুতরাং এতে প্রমাণিত হল, নফল এবং অন্য সাদাকা ভক্ষণ করা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও সমস্ত বনু হাশিমের (বংশের) উপরে হারাম ।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল
বস্তুত যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণও প্রমাণ করে যে, উক্ত বিষয়ে ফরয ও নফল-এর বিধান অভিন্ন। আর তা এভাবেঃ আমরা লক্ষ্য করছি যে, বনু হাশিম ব্যতীত অপরাপর ধনী ও ফকীরগণ ফরয ও নফল সাদাকার ব্যাপারে সমান ও অভিন্ন। যার জন্য ফরয সাদাকা গ্রহণ করা হারাম তার জন্য অন্য (নফল) সাদাকা গ্রহণ করাও হারাম। সুতরাং যখন বনু হাশিমের জন্য ফরয সাদাকা গ্রহণ করা হারাম তখন তাঁদের জন্য ফরয ব্যতীত অন্য (নফল) সাদাকা গ্রহণ করাও হারাম। এটিই হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ এবং এটিই হচ্ছে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত ।
এ বিষয়ে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) থেকে বিভিন্ন রিওয়ায়াত বর্ণিত আছেঃ তাঁর থেকে এক রিওয়ায়াত এরূপ বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, বনু হাশিমের জন্য সমস্ত (রকমের) সাদাকা গ্রহণে অসুবিধা নেই (জায়িয আছে)। আমাদের মতে তা এই জন্য যে, বায়তুল মালের খুমুসে (তাঁর (ﷺ) স্বজনদের নির্ধারিত অংশের কারণে তাঁদের (হাশেমীদের) উপরে সাদাকা হারাম ছিল রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ইন্তিকালের কারণে যখন তা তাঁদের থেকে বন্ধ হয়ে অন্যদের দিকে চলে যায় এতে তাঁদের জন্য যা হারাম ছিল তা হালাল হয়ে যায়।
২৭৫৬. সুলায়মান ইবন শু'আয়ব (রাহঃ) …… আবু হানীফা (রাহঃ) থেকে এই বিষয়ে আবু ইউসুফ (রাহঃ)-এর অনুরূপ অভিমত বর্ণনা করেছেন। আর এটিই আমরা গ্রহণ করছি।
কোন প্রশ্নকারী যদি প্রশ্ন করে যে, তোমরা কি বনু হাশিমের আযাদকৃত গোলামদের উপরে তা (ওয়াজিব সাদাকা) হারাম সাব্যস্ত কর ?
উত্তরে বলব, হ্যাঁ, আমরা তা আবু রাফি' (বা)-এর হাদীস দ্বারা হারাম সাব্যস্ত করব যা আমরা এই অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছি। আর আবু ইউসুফ (রাহঃ) 'আল-ইমলা' গ্রন্থে তা বলেছেন এবং আমাদের ফকীহদের কারো ব্যাপারে আমার জানা নেই যে, এ বিষয়ে তারা (জায়িয না হওয়ার) বিরোধিতা করেছেন।
কোন প্রশ্নকারী যদি প্রশ্ন করেন যে, হাশেমীদের জন্য সাদাকা (যাকাত) উসূল করার বিনিময়ে সাদাকা (যাকাত) গ্রহণ করা কি হারাম?
উত্তরে বলব যে, না (হারাম নয়)।
প্রশ্নঃ যদি বলা হয় যে, সাদাকা (যাকাত) উসূলকারী হয়ে বিনিময়ে ওয়াজিব সাদাকা গ্রহণ করা হারাম হবে না কেন ? অথচ (পূর্বে) রবী'আ ইবনুল হারিস ও ফযল ইবন আব্বাস (রাযিঃ)-এর হাদীসে আপনি উল্লেখ করেছেন যে, নবী করীম (ﷺ) তাঁদের দুই জনকে এর থেকে নিষেধ করেছেন।
উত্তরে বলব যে, এতে তা থেকে নিষেধাজ্ঞা নেই। যেহেতু তাঁরা তাঁর নিকট সাদাকা উসুলকারী হয়ে এর বিনিময়ে সাদাকা গ্রহণ করার আবেদন করেছিলেন যেন এর দ্বারা তাঁরা নিজেদের অভাব-অনটন দূর করতে সক্ষম হন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) অন্যভাবে (বায়তুলমালে খুমুস দ্বারা) তাঁদের অভাব দূর করেছেন। অথবা এমনটিও হতে পারে যে, তিনি তাঁদেরকে নিষেধ করার উদ্দেশ্য ছিল, মানুষের ময়লার বিনিময়ে তাদেরকে কাজ দেয়া তিনি পসন্দ করেননি। তাদের জন্য তা হারাম হওয়ার কারণে নিষেধ করেন নি। এর প্রমাণ স্বরূপ আমরা নিম্নোক্ত রিওয়ায়াত পেয়েছিঃ
আবু জা'ফর (তাহাবী র) বলেনঃ এই সমস্ত হাদীস বনু হাশিমের উপরে সাদাকা হারাম (নিষিদ্ধ) হওয়ার বিষয়টি ব্যক্ত করছে। আমাদের জানা মতে এমন কোন হাদীস নেই, যা এই সমস্ত হাদীস কে রহিত করে দিয়েছে এবং এইগুলোর বিরোধী হয়েছে। তবে সেই হাদীস যা আমরা এই অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছি যাতে এরূপ কিছু নেই যা এই গুলোর বিরুদ্ধে প্রমাণ বহন করে।
প্রশ্নঃ কোন প্রশ্নকারী যদি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন যে, (বনু হাশিমের জন্য যে সাদাকা হারাম) উক্ত সাদাকা দ্বারা তো বিশেষ করে যাকাত উদ্দেশ্য। পক্ষান্তরে যাকাত ব্যতীত অপরাপর (ওয়াজিব) সাদাকা সমূহতে কোন অসুবিধা নেই (অর্থাৎ তা বনু হাশিমের জন্য হালাল হওয়া উচিত)।
উত্তরঃ উত্তরে তাঁকে বলা হবে যে, আপনি যা সাব্যস্ত করতে চাচ্ছেন উক্ত হাদীসগুলোতে তা রোধ করা হয়েছে। আর তা এভাবে বাহয ইবন হাকীম (রাযিঃ) এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট কোন কিছু আনা হলে, তিনি জিজ্ঞাসা করতেন ‘এটি হাদিয়া না সাদাকা ? যদি লোকেরা বলত সাদাকা তাহলে তিনি তাঁর সাহাবীদের বলতেন, তোমরা খেয়ে নাও। সাদাকা নিয়ে আগন্তুক জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি উক্তির ‘এটা সাদাকা’-এর পরে যাকাত না অন্য কিছু তিনি এই প্রশ্নের প্রয়োজন মনে করতেন না। অতএব এতে প্রমাণিত হল যে, এ ব্যাপারে অপরাপর (যাকাত, ফিৎরা কাফফারা সহ) সমস্ত সাদাকার বিধান অভিন্ন। সালমান (ফারসী রা)-এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, তিনি বলেছেনঃ এরপর আরেক বার আমি তার দরবারে আসলাম, তিনি বললেন, একি হাদিয়া না সাদাকা ? আমি বললাম বরং সাদাকা। যেহেতু আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, আপনারা একদল অভাবী লোক। সুতরাং তিনি এই (সাদাকা হওয়ার) কারণে তা খেতে বিরত থেকেছেন। আর সালমান (ফারসী রা) তখন গোলাম ছিলেন যার উপর যাকাত ওয়াজিব নয়। সুতরাং এতে প্রমাণিত হল, নফল এবং অন্য সাদাকা ভক্ষণ করা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও সমস্ত বনু হাশিমের (বংশের) উপরে হারাম ।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল
বস্তুত যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণও প্রমাণ করে যে, উক্ত বিষয়ে ফরয ও নফল-এর বিধান অভিন্ন। আর তা এভাবেঃ আমরা লক্ষ্য করছি যে, বনু হাশিম ব্যতীত অপরাপর ধনী ও ফকীরগণ ফরয ও নফল সাদাকার ব্যাপারে সমান ও অভিন্ন। যার জন্য ফরয সাদাকা গ্রহণ করা হারাম তার জন্য অন্য (নফল) সাদাকা গ্রহণ করাও হারাম। সুতরাং যখন বনু হাশিমের জন্য ফরয সাদাকা গ্রহণ করা হারাম তখন তাঁদের জন্য ফরয ব্যতীত অন্য (নফল) সাদাকা গ্রহণ করাও হারাম। এটিই হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ এবং এটিই হচ্ছে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত ।
এ বিষয়ে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) থেকে বিভিন্ন রিওয়ায়াত বর্ণিত আছেঃ তাঁর থেকে এক রিওয়ায়াত এরূপ বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, বনু হাশিমের জন্য সমস্ত (রকমের) সাদাকা গ্রহণে অসুবিধা নেই (জায়িয আছে)। আমাদের মতে তা এই জন্য যে, বায়তুল মালের খুমুসে (তাঁর (ﷺ) স্বজনদের নির্ধারিত অংশের কারণে তাঁদের (হাশেমীদের) উপরে সাদাকা হারাম ছিল রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ইন্তিকালের কারণে যখন তা তাঁদের থেকে বন্ধ হয়ে অন্যদের দিকে চলে যায় এতে তাঁদের জন্য যা হারাম ছিল তা হালাল হয়ে যায়।
২৭৫৬. সুলায়মান ইবন শু'আয়ব (রাহঃ) …… আবু হানীফা (রাহঃ) থেকে এই বিষয়ে আবু ইউসুফ (রাহঃ)-এর অনুরূপ অভিমত বর্ণনা করেছেন। আর এটিই আমরা গ্রহণ করছি।
কোন প্রশ্নকারী যদি প্রশ্ন করে যে, তোমরা কি বনু হাশিমের আযাদকৃত গোলামদের উপরে তা (ওয়াজিব সাদাকা) হারাম সাব্যস্ত কর ?
উত্তরে বলব, হ্যাঁ, আমরা তা আবু রাফি' (বা)-এর হাদীস দ্বারা হারাম সাব্যস্ত করব যা আমরা এই অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছি। আর আবু ইউসুফ (রাহঃ) 'আল-ইমলা' গ্রন্থে তা বলেছেন এবং আমাদের ফকীহদের কারো ব্যাপারে আমার জানা নেই যে, এ বিষয়ে তারা (জায়িয না হওয়ার) বিরোধিতা করেছেন।
কোন প্রশ্নকারী যদি প্রশ্ন করেন যে, হাশেমীদের জন্য সাদাকা (যাকাত) উসূল করার বিনিময়ে সাদাকা (যাকাত) গ্রহণ করা কি হারাম?
উত্তরে বলব যে, না (হারাম নয়)।
প্রশ্নঃ যদি বলা হয় যে, সাদাকা (যাকাত) উসূলকারী হয়ে বিনিময়ে ওয়াজিব সাদাকা গ্রহণ করা হারাম হবে না কেন ? অথচ (পূর্বে) রবী'আ ইবনুল হারিস ও ফযল ইবন আব্বাস (রাযিঃ)-এর হাদীসে আপনি উল্লেখ করেছেন যে, নবী করীম (ﷺ) তাঁদের দুই জনকে এর থেকে নিষেধ করেছেন।
উত্তরে বলব যে, এতে তা থেকে নিষেধাজ্ঞা নেই। যেহেতু তাঁরা তাঁর নিকট সাদাকা উসুলকারী হয়ে এর বিনিময়ে সাদাকা গ্রহণ করার আবেদন করেছিলেন যেন এর দ্বারা তাঁরা নিজেদের অভাব-অনটন দূর করতে সক্ষম হন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) অন্যভাবে (বায়তুলমালে খুমুস দ্বারা) তাঁদের অভাব দূর করেছেন। অথবা এমনটিও হতে পারে যে, তিনি তাঁদেরকে নিষেধ করার উদ্দেশ্য ছিল, মানুষের ময়লার বিনিময়ে তাদেরকে কাজ দেয়া তিনি পসন্দ করেননি। তাদের জন্য তা হারাম হওয়ার কারণে নিষেধ করেন নি। এর প্রমাণ স্বরূপ আমরা নিম্নোক্ত রিওয়ায়াত পেয়েছিঃ
2977- حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ الْمُؤْمِنِ الْخُرَاسَانِيُّ , قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ شَقِيقٍ , قَالَ: ثنا الْحُسَيْنُ بْنُ وَاقِدٍ , قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ بُرَيْدَةَ , قَالَ: سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ: جَاءَ سَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ قَدِمَ الْمَدِينَةَ بِمَائِدَةٍ عَلَيْهَا رُطَبٌ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا هَذَا يَا سَلْمَانُ؟ قَالَ: صَدَقَةٌ عَلَيْكَ وَعَلَى أَصْحَابِكَ. قَالَ: «ارْفَعْهَا فَإِنَّا لَا نَأْكُلُ الصَّدَقَةَ» . فَرَفَعَهَا , فَجَاءَهُ مِنَ الْغَدِ بِمِثْلِهِ , فَوَضَعَهُ بَيْنَ يَدَيْهِ، فَقَالَ: «مَا هَذَا يَا سَلْمَانُ؟» قَالَ هَدِيَّةٌ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَصْحَابِهِ: انْبَسِطُوا ". قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَهَذِهِ الْآثَارُ كُلُّهَا قَدْ جَاءَتْ بِتَحْرِيمِ الصَّدَقَةِ عَلَى بَنِي هَاشِمٍ , وَلَا نَعْلَمُ شَيْئًا نَسَخَهَا وَلَا عَارَضَهَا إِلَّا مَا قَدْ ذَكَرْنَاهُ فِي هَذَا الْبَابِ , مِمَّا لَيْسَ فِيهِ دَلِيلٌ عَلَى مُخَالَفَتِهَا. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: تِلْكَ الصَّدَقَةُ , إِنَّمَا هِيَ الزَّكَاةُ خَاصَّةً , فَأَمَّا مَا سِوَى ذَلِكَ مِنْ سَائِرِ الصَّدَقَاتِ فَلَا بَأْسَ بِهِ. قِيلَ لَهُ: فِي هَذِهِ الْآثَارِ مَا قَدْ دَفَعَ مَا ذَهَبْتَ إِلَيْهِ، وَذَلِكَ مَا فِي حَدِيثِ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أُتِيَ بِالشَّيْءِ سَأَلَ أَهَدِيَّةٌ أَمْ صَدَقَةٌ؟ فَإِنْ قَالُوا صَدَقَةٌ , قَالَ لِأَصْحَابِهِ كُلُوا» وَاسْتَغْنَى بِقَوْلِ الْمَسْئُولِ إِنَّهُ صَدَقَةٌ عَنْ أَنْ يَسْأَلَهُ صَدَقَةٌ مِنْ زَكَاةٍ , أَمْ غَيْرِ ذَلِكَ؟ فَدَلَّ ذَلِكَ عَلَى أَنَّ حُكْمَ سَائِرِ الصَّدَقَاتِ فِي ذَلِكَ سَوَاءٌ. وَفِي حَدِيثِ سَلْمَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَقَالَ: فَجِئْتُ فَقَالَ: «أَهَدِيَّةٌ أَمْ صَدَقَةٌ» , فَقُلْتُ: بَلْ صَدَقَةٌ , لِأَنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّكُمْ قَوْمٌ فُقَرَاءُ " فَامْتَنَعَ مِنْ أَكْلِهَا لِذَلِكَ , وَإِنَّمَا كَانَ سَلْمَانُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَوْمَئِذٍ عَبْدًا , مِمَّنْ لَا يَجِبُ عَلَيْهِ زَكَاةٌ. فَدَلَّ ذَلِكَ عَلَى أَنَّ كُلَّ الصَّدَقَاتِ مِنَ التَّطَوُّعِ وَغَيْرِهِ قَدْ كَانَ مُحَرَّمًا عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَعَلَى سَائِرِ بَنِي هَاشِمٍ. وَالنَّظَرُ أَيْضًا يَدُلُّ عَلَى اسْتِوَاءِ حُكْمِ الْفَرَائِضِ وَالتَّطَوُّعِ فِي ذَلِكَ , وَذَلِكَ أَنَّا رَأَيْنَا غَيْرَ بَنِي هَاشِمٍ مِنَ الْأَغْنِيَاءِ وَالْفُقَرَاءِ، فِي الصَّدَقَاتِ الْمَفْرُوضَاتِ وَالتَّطَوُّعِ، سَوَاءٌ مَنْ حَرُمَ عَلَيْهِ أَخْذُ صَدَقَةٍ مَفْرُوضَةٍ , حَرُمَ عَلَيْهِ أَخْذُ صَدَقَةٍ غَيْرِ مَفْرُوضَةٍ. فَلَمَّا حَرُمَ عَلَى بَنِي هَاشِمٍ أَخْذُ الصَّدَقَاتِ الْمَفْرُوضَاتِ , حَرُمَ عَلَيْهِمْ أَخْذُ الصَّدَقَاتِ غَيْرِ الْمَفْرُوضَاتِ. فَهَذَا هُوَ النَّظَرُ فِي هَذَا الْبَابِ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى. وَقَدِ اخْتُلِفَ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ رَحِمَهُ اللهُ فِي ذَلِكَ , فَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ: لَا بَأْسَ بِالصَّدَقَاتِ كُلِّهَا عَلَى بَنِي هَاشِمٍ. وَذَهَبَ فِي ذَلِكَ عِنْدَنَا إِلَى أَنَّ الصَّدَقَاتِ إِنَّمَا كَانَتْ حَرُمَتْ عَلَيْهِمْ مِنْ أَجْلِ مَا جُعِلَ لَهُمْ فِي الْخُمُسِ مِنْ سَهْمِ ذَوِي الْقُرْبَى. فَلَمَّا انْقَطَعَ ذَلِكَ عَنْهُمْ وَرَجَعَ إِلَى غَيْرِهِمْ , بِمَوْتِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حَلَّ لَهُمْ بِذَلِكَ مَا قَدْ كَانَ مُحَرَّمًا عَلَيْهِمْ مِنْ أَجْلِ مَا قَدْ كَانَ أُحِلَّ لَهُمْ.
2978- وَقَدْ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ شُعَيْبٍ , عَنْ أَبِيهِ , عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي يُوسُفَ , عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ رَحِمَهُمُ اللهُ فِي ذَلِكَ , مِثْلَ قَوْلِ أَبِي يُوسُفَ رَحِمَهُ اللهُ , فَبِهَذَا نَأْخُذُ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: أَفَتَكْرَهُهَا عَلَى مَوَالِيهِمْ؟ قُلْتُ: نَعَمْ , لِحَدِيثِ أَبِي رَافِعٍ الَّذِي قَدْ ذَكَرْنَاهُ فِي هَذَا الْبَابِ , وَقَدْ قَالَ ذَلِكَ أَبُو يُوسُفَ رَحِمَهُ اللهُ فِي كِتَابِ الْإِمْلَاءِ , وَمَا عَلِمْتُ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِنَا خَالَفَهُ فِي ذَلِكَ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: أَفَتَكْرَهُ لِلْهَاشِمِيِّ أَنْ يَعْمَلَ عَلَى الصَّدَقَةِ؟ قُلْتُ: لَا. فَإِنْ قَالَ: وَلِمَ , وَفِي حَدِيثِ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ وَالْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ الَّذِي ذَكَرْتُ مَنْعُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِيَّاهُمَا مِنْ ذَلِكَ؟ قُلْتُ: مَا فِيهِ مَنْعٌ مِنْ ذَلِكَ , لِأَنَّهُمْ سَأَلُوهُ أَنْ يَسْتَعْمِلَهُمْ عَلَى الصَّدَقَةِ , لِيَسُدُّوا بِذَلِكَ فَقْرَهُمْ , فَسَدَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقْرَهُمْ بِغَيْرِ ذَلِكَ. وَقَدْ يَجُوزُ أَيْضًا أَنْ يَكُونَ أَرَادَ بِمَنْعِهِمْ أَنْ يُؤَكِّلَهُمْ عَلَى الْعَمَلِ عَلَى أَوْسَاخِ النَّاسِ , لَا لِأَنَّ ذَلِكَ يَحْرُمُ عَلَيْهِمْ , لِاجْتِعَالِهِمْ مِنْهُ عِمَالَتَهُمْ عَلَيْهِ. وَقَدْ وَجَدْنَا مَا يَدُلُّ عَلَى هَذَا
2978- وَقَدْ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ شُعَيْبٍ , عَنْ أَبِيهِ , عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي يُوسُفَ , عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ رَحِمَهُمُ اللهُ فِي ذَلِكَ , مِثْلَ قَوْلِ أَبِي يُوسُفَ رَحِمَهُ اللهُ , فَبِهَذَا نَأْخُذُ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: أَفَتَكْرَهُهَا عَلَى مَوَالِيهِمْ؟ قُلْتُ: نَعَمْ , لِحَدِيثِ أَبِي رَافِعٍ الَّذِي قَدْ ذَكَرْنَاهُ فِي هَذَا الْبَابِ , وَقَدْ قَالَ ذَلِكَ أَبُو يُوسُفَ رَحِمَهُ اللهُ فِي كِتَابِ الْإِمْلَاءِ , وَمَا عَلِمْتُ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِنَا خَالَفَهُ فِي ذَلِكَ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: أَفَتَكْرَهُ لِلْهَاشِمِيِّ أَنْ يَعْمَلَ عَلَى الصَّدَقَةِ؟ قُلْتُ: لَا. فَإِنْ قَالَ: وَلِمَ , وَفِي حَدِيثِ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ وَالْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ الَّذِي ذَكَرْتُ مَنْعُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِيَّاهُمَا مِنْ ذَلِكَ؟ قُلْتُ: مَا فِيهِ مَنْعٌ مِنْ ذَلِكَ , لِأَنَّهُمْ سَأَلُوهُ أَنْ يَسْتَعْمِلَهُمْ عَلَى الصَّدَقَةِ , لِيَسُدُّوا بِذَلِكَ فَقْرَهُمْ , فَسَدَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقْرَهُمْ بِغَيْرِ ذَلِكَ. وَقَدْ يَجُوزُ أَيْضًا أَنْ يَكُونَ أَرَادَ بِمَنْعِهِمْ أَنْ يُؤَكِّلَهُمْ عَلَى الْعَمَلِ عَلَى أَوْسَاخِ النَّاسِ , لَا لِأَنَّ ذَلِكَ يَحْرُمُ عَلَيْهِمْ , لِاجْتِعَالِهِمْ مِنْهُ عِمَالَتَهُمْ عَلَيْهِ. وَقَدْ وَجَدْنَا مَا يَدُلُّ عَلَى هَذَا
