শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৫৭৪
সালাতে সিজ্‌দা সাহো সালামের পূর্বে না পরে ?
২৫৭৪। ইব্‌ন আবী দাউদ(রাহঃ) ..... সাঈদ ইব্‌ন আব্দুল আযীয (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমাকে (ইব্‌ন শিহাব) যুহ্‌রী (রাহঃ) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি উমর ইব্‌ন আব্দুল আযীয (রাহঃ)-কে সালামের পূর্বে সিজ্‌দা (সাহো) সম্পর্কে বললে তিনি তা গ্রহণ করেননি। (বরং তা প্রত্যাখ্যান করেছেন)। বস্তুত এটি-ই হচ্ছে এই অনুচ্ছেদে উল্লিখিত হাদীসের বিশ্লেষণগত দিক।
এ বিষয়ে (সালামের পরে সিজ্‌দা) ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণঃ বস্তুত আমরা লক্ষ্য করেছি যে, কোন ব্যক্তি যদি সালাতে ভুল করে তাহলে তাকে তৎক্ষণাৎ সিজ্‌দার নির্দেশ দেয়া হয় না বরং তা বিলম্বের নির্দেশ দেয়া হয়। কতক আলিম বলেন, সালামের পর পর্যন্ত বিলম্ব করা হবে। আবার কতক আলিম বলেন, সালাতের শেষে সালামের পূর্ব পর্যন্ত বিলম্ব করা হবে।
পক্ষান্তরে আমরা চিন্তা-ভাবনা করে দেখেছি যে, কেউ যদি সালাতে সিজ্‌দার আয়াত তিলাওয়াত করে তাহলে তিলাওয়াতের কারণে তাঁর উপরে তখনই সিজ্‌দা করা ওয়াজিব হয়ে যায় (বিলম্ব করা জায়িয নয়), অথবা যদি ভুলে যায় তাহলে সালাতের মধ্যে যখনই স্মরণ হবে যে, তার উপরে সিজ্‌দায়ে তিলাওয়াত রয়েছে তখনই সিজ্‌দা করার নির্দেশ এসেছে। সালাতের অন্য স্থানে তা বিলম্বের বিধান নেই। অতএব প্রমাণিত হলো যে, সালাতের সিজ্‌দায়ে তিলাওয়াত যেখানে ওয়াজিব হয় সেখানেই আদায় করা ওয়াজিব; উক্ত স্থান থেকে বিলম্ব করা যায় না।
পক্ষান্তরে সিজ্‌দা সাহো’র ব্যাপারে সকলের ঐকমত্য রয়েছে যে, এটি ভুলের স্থান থেকে বিলম্ব করা একটি বিধান। এমনকি সালাম ব্যতীত সমস্ত সালাত চালিয়ে যাবে। তবে সালামের পূর্বে সিজ্‌দা সাহো হবে, না পরে হবে এ বিষয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
বস্তুত আমাদের পূর্বোল্লিখিত বিষয়ে যুক্তি হচ্ছে যে, মতবিরোধপূর্ণ সালামের বিধানকে সালাম পূর্ব সালাতের অপরাপর ঐকমত্য কার্যাদির বিধানের সাথে তুলনা করা হবে। যেমনিভাবে সালাতের অপরাপর সমস্ত কার্যাদি সিজ্‌দা সাহো’র উপরে অগ্রণী হয়, অনুরূপভাবে সালামও সিজ্‌দা সাহো’র উপরে অগ্রবর্তী হবে। এটিই হচ্ছে কিয়াস ও যুক্তি, যা আমরা উল্লেখ করেছি। আর এটিই হচ্ছে- ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
2574 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ قَالَ: ثنا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ قَالَ: ثنا بَقِيَّةُ بْنُ الْوَلِيدِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ، قَالَ: حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ، قَالَ: " قُلْتُ لِعُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ: السُّجُودُ قَبْلَ السَّلَامِ؟ فَلَمْ يَأْخُذْ بِهِ " فَهَذَا وَجْهُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ الْآثَارِ. وَأَمَّا وَجْهُهُ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا رَأَيْنَا الرَّجُلَ إِذَا سَهَا فِي صَلَاتِهِ , لَمْ يُؤْمَرْ بِالسُّجُودِ لِلسَّهْوِ , سَاعَةَ كَانَ السَّهْوُ , وَأُمِرَ بِتَأْخِيرِهِ. فَقَالَ قَائِلُونَ: إِلَى مَا بَعْدَ السَّلَامِ , وَقَالَ آخَرُونَ: إِلَى آخِرِ صَلَاتِهِ قَبْلَ السَّلَامِ وَكَانَ مَنْ تَلَا سَجْدَةً فِي صَلَاتِهِ , فَوَجَبَ عَلَيْهِ بِتِلَاوَتِهِ أَوْ ذَكَرَ وَهُوَ فِي صَلَاتِهِ , أَنَّ عَلَيْهِ لِمَا تَقَدَّمَ مِنْهَا سَجْدَةً أَنَّهُ يُؤْمَرُ أَنْ يَأْتِيَ بِهَا حِينَئِذٍ , وَلَا يُؤْمَرُ بِتَأْخِيرِهَا إِلَى غَيْرِ ذَلِكَ الْمَوْضِعِ مِنْ صَلَاتِهِ. فَكَانَ مَا يَجِبُ مِنَ السُّجُودِ فِي الصَّلَاةِ , يُؤْتَى بِهِ حَيْثُ وَجَبَ مِنْهَا , وَلَا يُؤَخَّرُ إِلَى مَا بَعْدَ ذَلِكَ , وَكَانَ سُجُودُ السَّهْوِ قَدْ أُجْمِعَ عَلَى تَأْخِيرِهِ عَنْ مَوْضِعِ السَّهْوِ , حَتَّى يَمْضِيَ كُلُّ الصَّلَاةِ , لَا السَّلَامُ فَإِنَّهُ قَدِ اخْتُلِفَ فِي تَقْدِيمِهِ قَبْلَ السُّجُودِ لِلسَّهْوِ , وَفِي تَقْدِيمِ السُّجُودِ لِلسَّهْوِ عَلَيْهِ فَكَانَ النَّظَرُ عَلَى مَا ذَكَرْنَا أَنْ يَكُونَ حُكْمُ السَّلَامِ الْمُخْتَلَفِ فِيهِ , حُكْمَ مَا قَبْلَهُ مِنَ الصَّلَاةِ الْمُجْتَمَعِ عَلَيْهِ. فَكَمَا كَانَ ذَلِكَ مُقَدَّمًا عَلَى سُجُودِ السَّهْوِ , كَانَ كَذَلِكَ السَّلَامُ أَيْضًا مُقَدَّمًا عَلَى سُجُودِ السَّهْوِ , قِيَاسًا وَنَظَرًا عَلَى مَا ذَكَرْنَا. وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান