শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৪৮৩
নামাযের অধ্যায়
মুসাফিরের সালাত
২৪৮৩। আবু বাকরা ..... আবু মুহাল্লাব (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ উসমান ইব্‌ন আফ্ফান (রাযিঃ) লিখিত ফরমান জারী করেন যে, আমার কাছে খবর পৌঁছেছে, এক দল লোক ব্যবসা অথবা খারাজ (ভূমিকর) উসূল করার জন্য অথবা লোকালয় থেকে দূরবর্তী চারণভূমিতে বের হয়ে সালাতকে কসর করে। অথচ সালাত কসর করবে সে-ই ব্যক্তি, যে সফরে যাত্রা করবে অথবা শত্রুর সন্মুখে অবস্থানরত হবে। আর উসমান ইব্‌ন আফ্ফান (রাযিঃ)-এর মাযহাব হচ্ছে, একমাত্র সেই ব্যক্তি কসর করবে, যে সফরের পাথেয় ও পানির মশ্ক বহনের মুখোপেক্ষী এবং সফরে যাত্রারত। আর যে ব্যক্তি শহরে অবস্থান করবে এবং পাথেয় ও পানির মশ্ক বহন থেকে মুক্ত, সে ব্যক্তিকে পুরো সালাত পড়বে ।
তাঁরা বলেছেনঃ এ জন্যই তিনি (উসমান রা) মিনাতে সালাত পুরো আদায় করেছেন। যেহেতু সে সময়ে মিনার অধিবাসী অধিক ছিলো, যাতে করে সেটি শহরে পরিণত হয়ে গিয়েছিলো এবং সফরের পাথেয় ও পানির মশ্ক বহন থেকে মুক্ত হয়ে পড়েছিলো।
বস্তুত এ মতটি আমাদের নিকট অসার ও ভ্রান্ত হিসাবে বিবেচিত। যেহেতু রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর যুগ অপেক্ষা উসমান (রাযিঃ)-এর যুগে মিনা মক্কা অপেক্ষা অধিক আবাদ ছিলো না। (বরং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর যুগে এমনিভাবে মক্কা মিনা অপেক্ষা বড় ছিলো, অনুরূপভাবে উসমান (রাযিঃ)-এর যুগেও তাই ছিল)। আর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মক্কায় দু’রাক’আত আদায় করেছেন, তাঁর পরে এতে আবু বকর (রাযিঃ) অনুরূপ সালাত (দু’রাক’আত) আদায় করেছেন । তারপর আবু বকর (রাযিঃ)-এর পরে উমর (রাযিঃ) এতে অনুরূপ সালাত আদায় করেছেন। যখন মক্কাতে সফরের পাথেয় ও পানির মশ্ক বহনের প্রয়োজনীয়তা না থাকা সত্ত্বেও তাতে সালাত কসর করা হয়, তাহলে মক্কা অপেক্ষা ছোট ছোট স্থান (শহর, উপশহর গুলোতে অনুরূপ হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়)। এতে অবশ্যই মা’মার সূত্রে যুহ্‌রী থেকে বর্ণিত প্রথম মত ছাড়া অন্যান্য সমস্ত মতের অসারতা প্রমাণিত হলো যে, উস্‌মান (রাযিঃ) উল্লেখিত কোন এক কারণে কসর সালাত পড়েছেন। যেহেতু সম্ভাবনা রয়েছে যে, তিনি উক্ত (ইকামতের) কারণে সালাতকে পুরো পড়েছেন। আর উক্ত হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে, তিনি ইকামাতের নিয়্যতের কারণে সালাতকে পুরো পড়েছেন।
আর যে রিওয়ায়াতটি আমরা হুযায়ফা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করে এসেছি, এতেও সফরে পুরো সালাত আদায় করার স্বপক্ষে কোনরূপ দলীল নেই যে, এটি পুণ্য কর্মের সফর ছিলো, না অন্য সফর ছিলো ? যেহেতু হতে পারে তাঁর অভিমত ছিলো, যে ব্যক্তি হজ্জ অথবা উমরা অথবা জিহাদ (ইত্যাদির) সফর করবে, সে-ই একমাত্র সালাতকে কসর পড়বে। যেমন- ইব্‌ন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছেঃ
كتاب الصلاة
2483 - حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ، قَالَ: ثنا رَوْحٌ، وَأَبُو عُمَرَ , قَالَا: أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، أَنَّ أَيُّوبَ السِّخْتِيَانِيَّ، أَخْبَرَهُمْ عَنْ أَبِي قِلَابَةَ الْجَرِيبِيِّ، عَنْ عَمِّهِ أَبِي الْمُهَلَّبِ، قَالَ: كَتَبَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ قَوْمًا يَخْرُجُونَ إِمَّا لِتِجَارَةٍ وَإِمَّا لِجِبَايَةٍ , وَإِمَّا لِحَشْرٍ , ثُمَّ يَقْصُرُونَ الصَّلَاةَ , وَإِنَّمَا يَقْصُرُ الصَّلَاةَ مَنْ كَانَ شَاخِصًا أَوْ بِحَضْرَةِ عَدُوٍّ " قَالَ: وَكَانَ مَذْهَبُ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنْ لَا يَقْصُرَ الصَّلَاةَ إِلَّا مَنْ كَانَ يَحْتَاجُ إِلَى حَمْلِ الزَّادِ وَالْمَزَادِ , وَمَنْ كَانَ شَاخِصًا , فَأَمَّا مَنْ كَانَ فِي سَفَرٍ مُسْتَغْنِيًا بِهِ عَنْ حَمْلِ الزَّادِ وَالْمَزَادِ فَإِنَّهُ يُتِمُّ الصَّلَاةَ. قَالُوا: وَلِهَذَا أَتَمَّ الصَّلَاةَ بِ مِنًى لِأَنَّ أَهْلَهَا فِي ذَلِكَ الْوَقْتِ كَثُرُوا , حَتَّى صَارَتْ مِصْرًا , اسْتَغْنَى مَنْ حَلَّ بِهِ عَنْ حَمْلِ الزَّادِ وَالْمَزَادِ وَهَذَا الْمَذْهَبُ عِنْدَنَا فَاسِدٌ لِأَنَّ مِنًى لَمْ تَصِرْ فِي زَمَنِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ , وَعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا مِنْ مَكَّةَ فِي زَمَنِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَقَدْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي بِهَا رَكْعَتَيْنِ , ثُمَّ صَلَّى بِهَا أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَعْدَهُ كَذَلِكَ , ثُمَّ صَلَّى بِهَا عُمَرُ بَعْدَ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ كَذَلِكَ. فَإِذَا كَانَتْ مَكَّةُ مَعَ عَدَمِ احْتِيَاجِ مَنْ حَلَّ بِهَا إِلَى حَمْلِ الزَّادِ وَالْمَزَادِ , يَقْصُرُ فِيهَا الصَّلَاةَ , فَمَا دُونَهَا مِنَ الْمَوَاطِنِ أَحْرَى أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ. فَقَدِ انْتَفَتْ هَذِهِ الْمَذَاهِبُ كُلُّهَا بِفَسَادِهَا , عَنْ عُثْمَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنْ يَكُونَ مِنْ أَجْلِ شَيْءٍ مِنْهَا قَصْرُ الصَّلَاةِ , [ص:427] غَيْرَ الْمَذْهَبِ الْأَوَّلِ الَّذِي حَكَاهُ مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ , فَإِنَّهُ يَحْتَمِلُ أَنْ يَكُونَ مِنْ أَجْلِهِ أَتَمَّهَا , وَفِي ذَلِكَ الْحَدِيثِ أَنَّ إِتْمَامَهُ لِنِيَّتِهِ الْإِقَامَةَ عَلَى مَا رَوَيْنَا فِيهِ , وَعَلَى مَا كَشَفْنَا مِنْ مَعْنَاهُ. وَأَمَّا مَا رَوَيْنَاهُ عَنْ حُذَيْفَةَ , فَلَيْسَ فِيهِ دَلِيلٌ أَيْضًا عَلَى الْإِتْمَامِ فِي السَّفَرِ , كَانَ ذَلِكَ سَفَرَ طَاعَةٍ أَوْ غَيْرَ طَاعَةٍ. لِأَنَّهُ قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ , كَانَ مِنْ رَأْيِهِ , أَنْ لَا يَقْصُرَ الصَّلَاةَ إِلَّا حَاجٌّ أَوْ مُعْتَمِرٌ أَوْ مُجَاهِدٌ , كَمَا قَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ২৪৮৩ | মুসলিম বাংলা