শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ২৩৯১
মুসাফিরের সালাত
২৩৯১। ইব্ন আবী দাউদ (রাহঃ)….. আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ প্রথম অবস্থায় সালাত দু’রাক’আত করে ফরয করা হয়। যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মদীনায় আগমন করলেন তখন মাগরিব ব্যতীত প্রত্যেক সালাতে দু’রাক’আত বৃদ্ধি করলেন। যেহেতু মাগরিব হলো দিনের বিত্র, আর ফজরের সালাত দীর্ঘ কিরাআতের কারণে পূর্ব অবস্থায় (দু’রাক’আত) বহাল থাকল। আর তিনি যখন সফর করতেন তখন প্রাথমিক যুগের সালাতের (দু’রাক’আত) দিকে প্রত্যাবর্তন করে কসর করতেন।
বস্তুত এই আয়েশা (রাযিঃ) বর্ণনা করছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) দু’রাক’আত করে পড়তেন, তারপর মদীনা আগমন করলে প্রত্যেক সালাতকে এর দ্বিগুণ করে পড়লেন। আর যখন তিনি সফর করতেন তখন তিনি পূর্বেকার সালাতের দিকে (দু’রাক’আত) প্রত্যাবর্তন করতেন। বস্তুত এটি ফাহাদ বর্ণিত হাদীসের পরিপন্থী যা আমরা অনুচ্ছেদের শুরুতে উল্লেখ করে এসেছি যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সফরে সালাত পূর্ণও করেছেন এবং কসরও করেছেন।
আর ই’লা ইব্ন মুন্ইয়া (রাহঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসঃ যেহেতু প্রথম মত পোষণকারী আলিমগণ নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা দলীল পেশ করেন, যাতে আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেনঃ وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ এবং তোমরা যখন দেশ-বিদেশে সফর করবে, (৪:১০১ পূর্ণ আয়াত দ্রষ্টব্য)। তাঁরা বলেন, এ আয়াতে ব্যক্ত হয়েছে, সালাত কসর করা তাদের জন্য আল্লাহ্ প্রদত্ত একটি সুযোগ। এর দ্বারা এটি তাদের উপর অপরিহার্য হওয়া প্রমাণিত হয় না। বস্তুত এটি হচ্ছে অনুরূপ যেমন আয়াতে ব্যক্ত হয়েছেঃ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَنْ يَتَرَاجَعَا অর্থাৎ তবে তাদের পুনর্মিলনে কারো কোন অপরাধ হবে না। (২ : ২৩০)
এতে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে তাদের জন্য পুনর্মিলনের সুযোগ দেয়া হয়েছে, তাদের উপর তাঁর পক্ষ থেকে তা অপরিহার্য করা হয়নি।
তাঁদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মতের অনুসারী আলিমগণের দলীল হচ্ছে এই যে, فَلَا جُنَاحَ (কোন অপরাধ নেই, দোষ নেই) শব্দটি কখনো সে অর্থে ব্যবহৃত হয় যা তাঁরা উল্লেখ করেছেন আবার কখনো অন্য অর্থেও ব্যবহৃত হয় । যেমন আল্লাহ্ তাআলা বলেছেনঃ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا
অর্থঃ সুতরাং যে কেউ কা’বাগৃহের হজ্জে কিংবা উমরা সম্পন্ন করে এ দু’টির মধ্যে যাতায়াত করলে তার কোন পাপ নেই । (২ : ১৫৮) বস্তুত এখানে , لَا جُنَاحَ শব্দটি সমস্ত আলিমদের মতে ‘অপরিহার্যতা’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যেহেতু যে কেউ হজ্জ কিংবা উমরা করবে তার জন্য এ দু’টির মধ্যে যাতায়াত তথা সাঈ না করা জায়িয নেই ।
অতএব যখন ‘অপরাধ নেই’ শব্দটি কখনো ওয়াজিব (অপরিহার্য) আবার কখনো ইখতিয়ার (ইচ্ছাধীন) অর্থে ব্যবহৃত হয়, তখন কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমার কোনরূপ দলীল ব্যতীত কোন একটি অর্থ নির্ধারণ করা কারো জন্য সঠিক হবে না।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে অনেক মুতাওয়াতির হাদীস বর্ণিত আছে, যাতে তাঁর সমস্ত সফরগুলোতে তিনি যে সালাত সংক্ষিপ্ত (কসর) করেছেন সে কথা ব্যক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে বর্ণিত হাদীসগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যঃ
বস্তুত এই আয়েশা (রাযিঃ) বর্ণনা করছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) দু’রাক’আত করে পড়তেন, তারপর মদীনা আগমন করলে প্রত্যেক সালাতকে এর দ্বিগুণ করে পড়লেন। আর যখন তিনি সফর করতেন তখন তিনি পূর্বেকার সালাতের দিকে (দু’রাক’আত) প্রত্যাবর্তন করতেন। বস্তুত এটি ফাহাদ বর্ণিত হাদীসের পরিপন্থী যা আমরা অনুচ্ছেদের শুরুতে উল্লেখ করে এসেছি যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সফরে সালাত পূর্ণও করেছেন এবং কসরও করেছেন।
আর ই’লা ইব্ন মুন্ইয়া (রাহঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসঃ যেহেতু প্রথম মত পোষণকারী আলিমগণ নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা দলীল পেশ করেন, যাতে আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেনঃ وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ এবং তোমরা যখন দেশ-বিদেশে সফর করবে, (৪:১০১ পূর্ণ আয়াত দ্রষ্টব্য)। তাঁরা বলেন, এ আয়াতে ব্যক্ত হয়েছে, সালাত কসর করা তাদের জন্য আল্লাহ্ প্রদত্ত একটি সুযোগ। এর দ্বারা এটি তাদের উপর অপরিহার্য হওয়া প্রমাণিত হয় না। বস্তুত এটি হচ্ছে অনুরূপ যেমন আয়াতে ব্যক্ত হয়েছেঃ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَنْ يَتَرَاجَعَا অর্থাৎ তবে তাদের পুনর্মিলনে কারো কোন অপরাধ হবে না। (২ : ২৩০)
এতে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে তাদের জন্য পুনর্মিলনের সুযোগ দেয়া হয়েছে, তাদের উপর তাঁর পক্ষ থেকে তা অপরিহার্য করা হয়নি।
তাঁদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মতের অনুসারী আলিমগণের দলীল হচ্ছে এই যে, فَلَا جُنَاحَ (কোন অপরাধ নেই, দোষ নেই) শব্দটি কখনো সে অর্থে ব্যবহৃত হয় যা তাঁরা উল্লেখ করেছেন আবার কখনো অন্য অর্থেও ব্যবহৃত হয় । যেমন আল্লাহ্ তাআলা বলেছেনঃ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا
অর্থঃ সুতরাং যে কেউ কা’বাগৃহের হজ্জে কিংবা উমরা সম্পন্ন করে এ দু’টির মধ্যে যাতায়াত করলে তার কোন পাপ নেই । (২ : ১৫৮) বস্তুত এখানে , لَا جُنَاحَ শব্দটি সমস্ত আলিমদের মতে ‘অপরিহার্যতা’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যেহেতু যে কেউ হজ্জ কিংবা উমরা করবে তার জন্য এ দু’টির মধ্যে যাতায়াত তথা সাঈ না করা জায়িয নেই ।
অতএব যখন ‘অপরাধ নেই’ শব্দটি কখনো ওয়াজিব (অপরিহার্য) আবার কখনো ইখতিয়ার (ইচ্ছাধীন) অর্থে ব্যবহৃত হয়, তখন কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমার কোনরূপ দলীল ব্যতীত কোন একটি অর্থ নির্ধারণ করা কারো জন্য সঠিক হবে না।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে অনেক মুতাওয়াতির হাদীস বর্ণিত আছে, যাতে তাঁর সমস্ত সফরগুলোতে তিনি যে সালাত সংক্ষিপ্ত (কসর) করেছেন সে কথা ব্যক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে বর্ণিত হাদীসগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যঃ
2391 - أَنَّ ابْنَ أَبِي دَاوُدَ حَدَّثَنَا قَالَ: ثنا أَبُو عُمَرَ الْحَوْضِيُّ , قَالَ: ثنا مُرَجَّى بْنُ رَجَاءٍ , قَالَ: ثنا دَاوُدُ عَنِ الشَّعْبِيِّ , عَنْ مَسْرُوقٍ , عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ: «أَوَّلُ مَا فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ , فَلَمَّا قَدِمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ صَلَّى إِلَى كُلِّ صَلَاةٍ مِثْلَهَا , غَيْرَ الْمَغْرِبِ , فَإِنَّهَا وِتْرُ النَّهَارِ , وَصَلَاةُ الصُّبْحِ لِطُولِ قِرَاءَتِهَا , وَكَانَ إِذَا سَافَرَ , عَادَ إِلَى صَلَاتِهِ الْأُولَى» فَهَذِهِ عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا تُخْبِرُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي , رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ , حَتَّى قَدِمَ الْمَدِينَةَ فَصَلَّى إِلَى كُلِّ صَلَاةٍ مِثْلَهَا وَأَنَّهُ كَانَ إِذَا سَافَرَ , عَادَ إِلَى صَلَاتِهِ الْأُولَى. فَأَخْبَرَتْ أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّي فِي سَفَرِهِ كَمَا كَانَ يُصَلِّي قَبْلَ أَنْ يُؤْمَرَ بِتَمَامِ الصَّلَاةِ , وَذَلِكَ رَكْعَتَانِ. فَذَلِكَ خِلَافُ حَدِيثِ فَهْدٍ الَّذِي ذَكَرْنَاهُ فِي الْفَصْلِ الْأَوَّلِ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَمَّ الصَّلَاةَ فِي السَّفَرِ , وَقَصَرَ» . وَأَمَّا حَدِيثُ يَعْلَى بْنِ مُنْيَةَ فَإِنَّ أَهْلَ الْمَقَالَةِ الْأُولَى احْتَجُّوا بِالْآيَةِ الْمَذْكُورَةِ فِيهِ , وَهِيَ قَوْلُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ {وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ} [النساء: 101] الْآيَةَ. قَالُوا: فَذَلِكَ عَلَى الرُّخْصَةِ مِنَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ لَهُمْ فِي التَّقْصِيرِ , لَا عَلَى الْحَتْمِ عَلَيْهِمْ بِذَلِكَ , وَهُوَ كَقَوْلِهِ {فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَنْ يَتَرَاجَعَا} [البقرة: 230] فَذَلِكَ عَلَى التَّوْسِعَةِ مِنْهُ لَهُمْ فِي الْمُرَاجَعَةِ , لَا عَلَى إِيجَابِهِ ذَلِكَ عَلَيْهِمْ. فَكَانَ مِنْ حُجَّتِنَا عَلَيْهِمْ لِأَهْلِ الْمَقَالَةِ الْأُخْرَى أَنَّ هَذَا اللَّفْظَ قَدْ يَكُونُ عَلَى مَا ذَكَرُوا , وَيَكُونُ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ قَالَ: اللهُ تَعَالَى {فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا} [البقرة: 158] وَذَلِكَ عَلَى الْحَتْمِ عِنْدَ جَمِيعِ الْعُلَمَاءِ لِأَنَّهُ لَيْسَ لِأَحَدٍ حَجَّ أَوِ اعْتَمَرَ أَنْ لَا يَطَّوَّفَ بِهِمَا. فَلَمَّا كَانَ نَفْيُ الْجُنَاحِ , قَدْ يَكُونُ عَلَى التَّخْيِيرِ , وَقَدْ يَكُونُ عَلَى الْإِيجَابِ , لَمْ يَكُنْ لِأَحَدٍ أَنْ يَحْمِلَ ذَلِكَ عَلَى أَحَدِ الْمَعْنَيَيْنِ دُونَ الْمَعْنَى الْآخَرِ إِلَّا بِدَلِيلٍ يَدُلُّهُ عَلَى ذَلِكَ , مِنْ كِتَابٍ , أَوْ سُنَّةٍ , أَوْ إِجْمَاعٍ. وَقَدْ جَاءَتِ الْآثَارُ مُتَوَاتِرَةً عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِتَقْصِيرِهِ فِي أَسْفَارِهِ كُلِّهَا
فَمِمَّا رُوِيَ عَنْهُ فِي ذَلِكَ
فَمِمَّا رُوِيَ عَنْهُ فِي ذَلِكَ
