শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২১৫৫
জুমু'আর দিন ইমামের খুতবা দানকালে কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে সালাত পড়বে কিনা?
২১৫৫। মুহাম্মাদ ইবন হুমায়দ ইবন হিশাম আর রুহাইনী (রাহঃ) ..... আবু সাঈদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল, রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) তখন মিম্বরের উপর উপবিষ্ট। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁকে ডাকলেন, বলতে থাকলেন, কাছে এস, কাছে এস, ফলে সে নিকটবর্তী হল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাকে (সালাতের) নির্দেশ দিলেন। সে বসার পূর্বে দু'রাক'আত সালাত আদায় করল। তার গায়ে ছিলো পুরোনো পোশাক। দ্বিতীয় জুমু'আতেও সে তাই করল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও তাকে তাই নির্দেশ দিলেন, সেও সে হুকুম তামিল করল। অনুরূপ ঘটনা ঘটল তৃতীয় জুমু'আতে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাকে অনুরূপ নির্দেশ দিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) লোকদেরকে বললেন, তোমরা (তাকে) দান কর। সাহাবীগণ তাকে অনেক কাপড় দান করলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাকে দুটি কাপড় নিতে বললেন। পরবর্তীতে তিনি লোকজনকে সাদাকা করতে নির্দেশ দিলেন। এক ব্যক্তি তার দুটি কাপড়ের একটি দান করলো। এতে বাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর ক্রোধান্বিত হলেন। তারপর তিনি তাকে তার কাপড়টি নিয়ে নিতে নির্দেশ দিলেন।
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ একদল আলিম এ মত গ্রহণ করেছেন যে, জুমু'আর দিন ইমামের মিম্বরের উপর খুতবা দানকালে যদি কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তাহলে তার উচিত সংক্ষেপে দু'রাক'আত সালাত আদায় করা। তাঁরা উপরোক্ত হাদীসগুলো দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন। পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ এ বিষয়ে তাঁদের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলেন, ইমামের খুতবা দানকালে উক্ত ব্যক্তি বসে থাকবে, তার জন্য সালাত আদায় উচিত নয়।
বস্তুত তাদের এ বিষয়ে একটি প্রমাণ হলো, (এখানে মোট তিনটি সম্ভাবনা আছে) হতে পারে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) খুতবা বন্ধ করে দিয়ে সুলাইক (রাযিঃ)-কে দু'রাক'আত সালাত পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর ইচ্ছা ছিলো লোকজন যাতে জানতে পারে মসজিদে প্রবেশ করলে প্রথমে কি করতে হয়। তারপর তিনি পুনঃ খুতবা আরম্ভ করেছেন। আবার এও হতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তখন খুতবা শুরু করেছিলেন এমতাবস্থায় সুলাইক (রাযিঃ)-কে সালাতের নির্দেশ প্রদান করেছেন। আর এ হুকুমটি ছিলো তখনকার, যখন সালাতে কথা বলার অনুমতি ছিলো। তারপর যখন সালাতে কথা বলার হুকুম বাতিল হয়ে যায় তখন খুতবা চলাকালীন সালাতের হুকুমও রহিত হয়ে যায়। অথবা এমনও হতে পারে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক খুতবা প্রদানের সময় সালাতের হুকুমটি তেমনি ছিলো যেমনটি বলেছেন প্রথমোক্ত প্রবক্তাগণ এবং এ দু'রাক'আত সালাত আদায় করা একটি করণীয় সুন্নত।
এবার আমরা দেখব মূলত এর বিরোধী কোন রিওয়ায়াত আছে কি না? আমরা দেখি আছে। এর প্রমাণঃ
2155 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدِ بْنِ هِشَامٍ الرُّعَيْنِيُّ , قَالَ: ثنا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ , قَالَ: أنا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ , قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ عَجْلَانَ , عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَخْبَرَهُ , عَنْ أَبِي سَعِيدٍ ,: أَنَّ رَجُلًا دَخَلَ الْمَسْجِدَ وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْمِنْبَرِ , فَنَادَاهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَمَا زَالَ يَقُولُ: «ادْنُ» حَتَّى دَنَا , فَأَمَرَهُ , فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ وَعَلَيْهِ خِرْقَةُ خَلَقٍ , ثُمَّ صَنَعَ مِثْلَ ذَلِكَ فِي الثَّانِيَةِ , فَأَمَرَهُ بِمِثْلِ ذَلِكَ , ثُمَّ صَنَعَ مِثْلَ ذَلِكَ فِي الْجُمُعَةِ الثَّالِثَةِ , فَأَمَرَهُ بِمِثْلِ ذَلِكَ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلنَّاسِ: «تَصَدَّقُوا» فَأَلْقَوُا الثِّيَابَ , فَأَمَرَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَخْذِ ثَوْبَيْنِ فَلَمَّا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَمَرَ النَّاسَ أَنْ يَتَصَدَّقُوا , فَأَلْقَى الرَّجُلُ أَحَدَ ثَوْبَيْهِ , فَغَضِبَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , ثُمَّ أَمَرَهُ أَنْ يَأْخُذَ ثَوْبَهُ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى أَنَّ مَنْ دَخَلَ الْمَسْجِدَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالْإِمَامُ عَلَى الْمِنْبَرِ يَخْطُبُ , فَيَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَرْكَعَ رَكْعَتَيْنِ يَتَجَوَّزُ فِيهِمَا. وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ بِهَذِهِ الْآثَارِ. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَقَالُوا: يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَجْلِسَ وَلَا يَرْكَعُ , وَالْإِمَامُ يَخْطُبُ. وَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ لَهُمْ فِي ذَلِكَ أَنَّهُ قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ سُلَيْكًا بِمَا أَمَرَهُ بِهِ مِنْ ذَلِكَ , فَقَطَعَ بِذَلِكَ خُطْبَتَهُ إِرَادَةً مِنْهُ أَنْ يُعَلِّمَ النَّاسَ كَيْفَ يَفْعَلُونَ إِذَا دَخَلُوا الْمَسْجِدَ , ثُمَّ اسْتَأْنَفَ الْخُطْبَةَ. وَيَجُوزُ أَيْضًا أَنْ يَكُونَ بَنَى عَلَى خُطْبَتِهِ , وَكَانَ ذَلِكَ قَبْلَ أَنْ يُنْسَخَ الْكَلَامُ فِي الصَّلَاةِ , ثُمَّ نُسِخَ الْكَلَامُ فِي الصَّلَاةِ , فَنُسِخَ أَيْضًا فِي الْخُطْبَةِ. وَقَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ مَا أَمَرَهُ بِهِ مِنْ ذَلِكَ , كَمَا قَالَ أَهْلُ الْمَقَالَةِ الْأُولَى , وَيَكُونَ سُنَّةً مَعْمُولًا بِهَا. فَنَظَرْنَا , هَلْ رُوِيَ شَيْءٌ يُخَالِفُ ذَلِكَ؟
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ২১৫৫ | মুসলিম বাংলা