শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২১৩৮
আন্তর্জাতিক নং: ২১৪২
৫০. কেউ ঘরে সালাত আদায় করে মসজিদে এসে লোকদের (জামাআতে) সালাতরত দেখলে
২১৩৮-২১৪২। আবু বাকরা (রাহঃ) ..... মিহজান-আদদীলী (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আমাকে সালাতের ইকামাতের সময় জামাআতে শরীক না হয়ে বসে থাকতে দেখলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সালাত শেষ করে আমাকে বললেন, তুমি কি মুসলমান নও? আমি বললাম, নিশ্চয়ই। তারপর তিনি বললেন, তাহলে আমাদের সাথে সালাত আদায় করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল ? উত্তরে আমি বললাম, আমি আমার পরিবারের সাথে সালাত আদায় করে এসেছি। তখন তিনি বললেন, পরিবারের সাথে তুমি সালাত আদায় করলেও জামাআতে সালাত আদায় করবে।

ইবন আবু দাউদ (রাহঃ) ….. মিহজান আদদীলী (রাযিঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি আমার গৃহে যুহর অথবা আসরের সালাত আদায় করি। তারপর মসজিদের দিকে বেরিয়ে যাই। গিয়ে দেখলাম রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বসে আছেন, তাঁর পার্শ্বে সাহাবায়ে কিরাম, পরে সালাতের ইকামাত হল। তারপর তিনি পূর্বোক্তরূপ বর্ণনা করেছেন।

হুসাইন ইবন নসর (রাহঃ) ও ফাহাদ (রাহঃ) ….. মিজান আদদালী (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এই রিওয়ায়াতে কোন্ সালাত সেটির উল্লেখ নেই।

ইউনুস (রাহঃ) ….. বুসর ইবন মিহজান আদদীলী (রাহঃ) থেকে তিনি তার পিতা মিহজান (রাযিঃ) থেকে অথবা তাঁর চাচা সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
باب الرجل يصلي في رحله ثم يأتي المسجد والناس يصلون
2138 - حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ , قَالَ: ثنا أَبُو عَاصِمٍ , عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ , قَالَ: ثنا زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ , عَنْ بُسْرِ بْنِ مِحْجَنٍ الدِّيلِيِّ , عَنْ أَبِيهِ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ رَآهُ وَقَدْ أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ , قَالَ: فَجَلَسْتُ وَلَمْ أَقُمْ لِلصَّلَاةِ , فَلَمَّا قَضَى صَلَاتَهُ قَالَ لِي: «أَلَسْتَ مُسْلِمًا؟» قُلْتُ: بَلَى , قَالَ: «فَمَا مَنَعَكَ , أَنْ تُصَلِّيَ مَعَنَا؟» فَقُلْتُ: قَدْ كُنْتُ صَلَّيْتُ مَعَ أَهْلِي فَقَالَ: «صَلِّ مَعَ النَّاسِ وَإِنْ كُنْتَ قَدْ صَلَّيْتَ مَعَ أَهْلِكَ» [ص:363]

2139 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ , قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ صَالِحٍ الْوُحَاظِيُّ , قَالَ: ثنا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ , قَالَ: حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ , عَنْ بُسْرِ بْنِ مِحْجَنٍ الدِّيلِيِّ , عَنْ أَبِيهِ , قَالَ: «صَلَّيْتُ فِي بَيْتِي الظُّهْرَ , أَوِ الْعَصْرَ , ثُمَّ خَرَجْتُ إِلَى الْمَسْجِدِ , فَوَجَدْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسًا وَحَوْلَهُ أَصْحَابُهُ , ثُمَّ أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ» , ثُمَّ ذَكَرَ نَحْوَهُ

2140 - حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ نَصْرٍ، قَالَ: ثنا الْفِرْيَابِيُّ، ح.

2141 - وَحَدَّثَنَا فَهْدٌ، قَالَ: ثنا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَا: ثنا سُفْيَانُ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ بُسْرِ بْنِ مِحْجَنٍ الدِّيلِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوَهُ. غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ يَذْكُرْ أَيَّ صَلَاةٍ هِيَ

2142 - حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ: أنا ابْنُ وَهْبٍ، أَنَّ مَالِكًا، حَدَّثَهُ , عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ بُسْرِ بْنِ مِحْجَنٍ الدِّيلِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَوْ عَنْ عَمِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوَهُ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, কেউ একাকী নামায পড়ার পরে যদি কোন কারণে আবার ঐ নামাযের জামাতে উপস্থিত হয় তাহলে সে তাদের সাথে পুনরায় নামায পড়বে। (শামী: ২/৫৩) অবশ্য কোন্‌টি ফরয আর কোন্‌টি নফল হবে সে ব্যাপারে এ হাদীসে কিছু বলা হয়নি। হযরত আবু যর রা. থেকে মুসলিম: ১৩৪০, ১৩৪১ ও ১৩৪২ নাম্বার হাদীসে বর্ণিত আছে যে, একাকী নামায আদায়ের পরে জামাতে শরিক হলে জামাতের নামাযটি হবে তার জন্য নফল। এ কথা থেকে আরো একটি মাসআলা বের হয় যে, যে সব নামাযের পরে রসূলুলস্নাহ স. নফল পড়তে নিষেধ করেছেন সে সব ফরয নামাযের ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর হবে না। অন্যথায় এ আমল উক্ত হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে যাবে। সুতরাং ফজর এবং আছরের নামাযে এটা করা যাবে না। কেননা এ দুই নামাযের পরে নফল পড়া নিষেধ। যে সব হাদীসে এ দুই নামাযের পরে জামাতে শরিক হওয়ার নির্দেশ পাওয়া যায় সেগুলো হয়তো ইসলামের প্রথম দিকের ঘটনা যখন ফজর এবং আছরের নামাযের পরে নফল পড়ার নিষেধাজ্ঞা জারী হয়নি। আর মাগরিবের নামাযের পরেও এটা করা যাবে না। কেননা নফল নামায বেজোড় পড়ার আমল প্রমাণিত নয়। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (মারাকিল ফালাহ: ১/২০৭, অধ্যায়: ইদরাকুল ফরীযা)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ২১৩৮ | মুসলিম বাংলা