শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২০৩৯
এক রাক’আতে একাধিক সূরা পড়া
২০৩৯। আবু বাকরা (রাহঃ) … হুযায়ফা ইব্‌নুল ইয়ামান (রাযিঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন যে , তিনি বলেছেন , এক রাতে আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (স) –এর পাশে সালাত পড়েছি, তিনি সালাত আরম্ভ করেছেন সূরা বাকার দ্বারা , এ সূরা সমাপ্ত করার পর আরম্ভ করলেন সূরা আলে ইমরান । যখন তিনি তিলাওয়াত করতে করতে এরূপ কোন আয়াতে পৌছতেন, যাতে জান্নাত অথবা জাহান্নামের উল্লেখ রয়েছে , সেখানে থেমে যেতেন । তারপর (জান্নাতের ) আবেদন করতেন অথবা (জাহান্নাম) থেকে পানাহ চাইতেন অথবা বর্ণনাকারী এরূপ কোন বাক্য বলেছেন যার অর্থ অনুরূপ ।
অতএব এ সমস্ত রিওয়ায়াতে ব্যক্ত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্‌ (স) প্রতিটি রাক’আত দুটি করে সূরা মিলিয়ে পড়তেন । তাই আবুল আলিয়া (রাহঃ) এর বিবরণ এর বিপরীত এটাই উত্তম হিসাবে বিবেচিত হবে । কারণ, এটার সূত্র সঠিক ও বিশুদ্ধ । তবে ইব্‌ন মাসউদ (রাযিঃ) –এর পরবর্তী উক্তি মুফাস্‌সালকে এই নামে অভিহিত করা হয়েছে এজন্য যাতে তোমরা তা আলাদা করে পড়। রাসূলুল্লাহ্‌ (স) থেকে বর্ণনা করেছেন বলে উল্লেখ করেন নি। হতে পারে এটা তার নিজস্ব মতামত । যদি এটা তার নিজস্ব মতামতই হয়ে থাকে তাহলে উসমান ইব্‌ন আফফান (রাযিঃ) তো এর বিরোধীতা করেছেন। কারণ, তিনি এক রাক’আতে কুরআন মাজীদ খতম করতেন । শীঘ্রই এ বিষয়ে এ অনুচ্ছেদের শেষ ভাগে আলোচনা করার প্রয়াস পাব ইনশা আল্লাহ ।
রাসূলুল্লাহ্‌ (স) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি ফজরের সালাতের এক রাক’আতে সূরার কোন অংশ তিলাওয়াত করেছেন । এ বিষয়ে নিম্নোক্ত হাদীস রয়েছেঃ
2039 - حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ، قَالَ: ثنا أَبُو عُمَرَ الضَّرِيرُ، قَالَ: أنا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ الْأَعْمَشِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ الْمُسْتَوْرِدِ بْنِ الْأَحْنَفِ، عَنْ صِلَةَ بْنِ زُفَرَ، عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ، قَالَ: " صَلَّيْتُ إِلَى جَنْبِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ , فَاسْتَفْتَحَ سُورَةَ الْبَقَرَةِ , فَلَمَّا فَرَغَ مِنْهَا , اسْتَفْتَحَ آلَ عِمْرَانَ. فَكَانَ إِذَا أَتَى عَلَى آيَةٍ فِيهَا ذِكْرُ الْجَنَّةِ أَوِ النَّارِ , وَقَفَ فَسَأَلَ , أَوْ تَعَوَّذَ , أَوْ قَالَ: كَلَامًا هَذَا مَعْنَاهُ «فَفِي هَذِهِ الْآثَارِ ,» أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُقْرِنُ بَيْنَ السُّورَتَيْنِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ «. فَقَدْ خَالَفَ هَذَا مَا رَوَى أَبُو الْعَالِيَةِ , وَهُوَ أَوْلَى؛ لِاسْتِقَامَةِ طَرِيقِهِ وَصِحَّةِ مَجِيئِهِ. وَأَمَّا قَوْلُ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَعْدَ ذَلِكَ» إِنَّمَا سُمِّيَ الْمُفَصَّلَ لِتُفَصِّلُوهُ «فَإِنَّ ذَلِكَ لَمْ يَذْكُرْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَقَدْ يُحْتَمَلُ أَنْ يَكُونَ ذَلِكَ مِنْ رَأْيِهِ , فَإِنْ كَانَ ذَلِكَ مِنْ رَأْيِهِ , فَقَدْ خَالَفَهُ فِي ذَلِكَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لِأَنَّهُ كَانَ يَخْتِمُ الْقُرْآنَ فِي رَكْعَةٍ , وَسَنَذْكُرُ ذَلِكَ فِي آخِرِ هَذَا الْبَابِ , إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى. وَقَدْ رُوِيَ» عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَرَأَ فِي رَكْعَةٍ مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ بِبَعْضِ سُورَةٍ "

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রসূলুল্লাহ স. এক রাকাতে একাধিক সুরা পাঠ করতেন। অবশ্য এ হাদীসে ফরয বা নফল কোন কথা উল্লেখ না থাকায় নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে, এটা ফরযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না। তবে সাহাবায়ে কিরাম ফরয নামাযের একই রাকাতে একাধিক সুরা পড়ার আমল করতেন। তা থেকে অনুমিত হয় যে, এক রাকাতে একাধিক সুরা পড়ার আমলটি হয়তো রসূলুল্লাহ স.-এর ফরয নামাযেও ছিলো। আর সাহাবায়ে কিরাম তাঁর থেকেই এ আমল গ্রহণ করেছেন।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান