শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬৪৫
সালাতে সালাম ফরয না সুন্নত ?
১৬৪৫। রবীউল মু'আযযিন (রাহঃ) ..... আব্দুল্লাহ্‌ ইব্ন মাসউদ রো) সূত্রে এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হলো যে, রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) সালামের পূর্বে সালাত বহির্ভূত এক রাক'আত সালাতের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এটি সালাতের জন্য বিনষ্টকর মনে করেননি। যদি এটিকে সালাতের জন্য বিনষ্টকর মনে করতেন তাহলে অবশ্যই সেই সালাত পুন আদায় করতেন।
যখন তা পুন আদায় করেননি এবং তা থেকে সালাম ফিরানো ব্যতীত পঞ্চম রাক'আতের দিকে বের
হয়ে গেছেন, এতে প্রমাণিত হয় যে, সালাম সালাতের রুকনের অন্তর্ভুক্ত নয়। তুমি কি লক্ষ্য করনি
যে, কেউ যদি সিজদা পরিত্যাগ করে পঞ্চম রাক'আতের জন্য উঠে যান তাহলে এটি তার চার
রাক'আতকে বিনষ্ট করে দেয়। যেহেতু তিনি এগুলোর বহির্ভূত বস্তুকে এগুলোর সাথে মিশ্রিত করে
দিয়েছেন। অতএব যদি সালাতের সিজ্দার ন্যায় সালাম ফরয হতো তাহলে এ বিধানও অনুরূপ
হতো । কিন্তু তা এর থেকে ভিন্ন, বরং এটি (সালাম) সুন্নত (ওয়াজিব) ।

এর দলীল হিসাবে আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকেও বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) বলেছেঃ যখন তোমাদের কেউ সালাত আদায় করে এবং তার সন্দেহ হয়ে যায় যে, তিন রাক'আত পড়েছে, না চার রাক'আত, তাহলে নিশ্চিত এর উপর ভিত্তি করে সন্দেহকে পরিত্যাগ করবে । এখন তার সালাত যদি কম হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তা (সিজ্দা সাহউ'-এর সাথে) পূর্ণ করে ফেলেছে এবং সাহ্উ'র দু'সিজ্দা শয়তানকে লাঞ্ছিত করেছে। আর যদি তার সালাত পূর্ণ হয়ে থাকে তাহলে অতিরিক্ত দু'সিজ্দা তার জন্য নকল হিসাবে গণ্য হবে।

রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) অতিরিক্ত পঞ্চম রাক'আত এবং সাহ্উ'-এর দু'সিজ্দাকে নফল আখ্যায়িত করেছেন
এবং এর দ্বারা পূর্ববর্তী সালাতকে বিনষ্ট সাব্যস্ত করেননি। যদিও মুসল্লী অবশ্যই সালাত থেকে পঞ্চম
রাক'আতের দিকে বের হয়ে গিয়েছেন। অতএব এতে প্রমাণিত হলো যে, সালাম ব্যতীত সালাত পূর্ণ
হয়ে যায়। আর সালাতে সালাম ফিরানো হলো এর সুন্নত (ওয়াজিব), এর রুকন (ফরয) নয়।
বস্তুত এ বিষয়ে বর্ণিত হাদীসগুলোর অর্থগত বিশ্লেষণ ওই দলের অভিমতকে প্রমাণিত করে যারা
বলেন, তাশাহ্হুদ পরিমাণ না বসলে সালাতপূর্ণ হবে না। যেহেতু রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) থেকে আলী (রাযিঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে আমরা যা উল্লেখ করেছি তার সম্ভাবনা রয়েছে। আর আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌ন আমর (রাযিঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ)-এর হাদীস বিরোধপূর্ণ যা আমরা পূর্বে বর্ণনা করেছি। পক্ষান্তরে ইব্‌ন মাসউদ রো)-এর হাদীস এমন যার মধ্যে কোন বিরোধ নেই।

তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল
বস্তুত সংশ্লিষ্ট বিষয়ের যুক্তিভিত্তিক প্রমাণ হচ্ছে, যারা বলেন যে, মুসল্লী যখন সালাতে শেষ সিজ্দা থেকে মাথা তুলবে, অবশ্যই তার সালাত পূর্ণ হয়ে যাবে । তাঁরা বলেছেঃ আমরা লক্ষ্য করছি যে, এ বৈঠকটি (শেষ বৈঠক) এরূপ যার মধ্যে তাশাহহুদ পড়া হয় এবং সালাত থেকে বের হওয়ার জন্য সালামও ফিরানো হয়। আর আমরা এর পূর্বে সালাতের মধ্যে প্রথম বৈঠক এর প্রতি লক্ষ্য করে দেখেছি যে, সেটিও এরূপ বৈঠক যাতে তাশাহহুদ পড়া হয় এবং সমস্ত আলিমদের ঐকমত্য রয়েছেও যে, প্রথম বৈঠক এবং এর তাশাহ্হুদ সালাতের রুকন তথা ফরয নয়, বরং এটি সালাতের সুন্নত (ওয়াজিব)।
পক্ষান্তরে শেষ বৈঠকের ব্যাপারে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। অতএব আমাদের বর্ণনা মতে যুক্তি হচ্ছে যে, এটি-ও প্রথম বৈঠকের ন্যায় সুন্নত (ওয়াজিব) হবে এবং এর মধ্যে যা কিছু করা হয় তা সুন্নত (ওয়াজিব) হবে। যেমনিভাবে প্রথম বৈঠক এবং এর মধ্যে যা কিছু করা হয় সুন্নত (ওয়াজিব) ছিলো।
অনুরূপভাবে আমরা সমস্ত সালাতের কিয়াম (দাঁড়ানো), রুকু ও সিজদা ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য করেছি যে, সবই একরকম (অর্থাৎ ফরয)।
অতএব আমরা যা বর্ণনা করেছি সে মতে যুক্তি হচ্ছে যে, সালাতের সমস্ত বৈঠক গুলোর (বিধান) ও একই রকম হবে (অর্থাৎ ফরয না হওয়া)।

দ্বিতীয় দলের পক্ষ থেকে উপরোক্ত যুক্তিভিত্তিক দলীলের উত্তর
তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাপর আলিমগণ দলীল পেশ করে বলেছেনঃ আমরা লক্ষ্য করছি যে, কেউ যদি ভুলে প্রথম বৈঠক না করে পরিপূর্ণরূপে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে বৈঠকের দিকে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়া হয় না বরং তার কিয়াম-এর উপর অটল থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। আবার লক্ষ্য করছি যে, কেউ যদি শেষ বৈঠক না করে ভুলে পরিপূর্ণরূপে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে তাকে বৈঠকের দিকে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়া হয়। আলিমগণ বলেছেনঃ যে বৈঠক থেকে দাঁড়ানোর পরে এর দিকে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়া হয় এটি ফরয হিসাবে বিবেচিত হবে। আর যে বৈঠক থেকে দাঁড়ানোর পরে এর দিকে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়া হয় না তা ফরযরূপে বিবেচিত হবে না। তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, কেউ যদি তার সালাতের সিজদা ছেড়ে দিয়ে পরিপূর্ণরূপে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে তাকে সিজদার দিকে ফিরে আসার নির্দেশ রয়েছে। যেহেতু সে দাঁড়িয়ে ফরযকে পরিত্যাগ করেছে এজন্য তাকে সিজ্দার দিকে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়া হয়। অনুরূপভাবে শেষ বৈঠক, যখন- তা ছেড়ে দিলে এর দিকে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়া হয় এতেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, এটি ফরয, যদি এটি ফরয না হতো তাহলে এর দিকে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়া হতো না। যেমনি নির্দেশ দেয়া হয় না প্রথম বৈঠকের দিকে ফিরে আসার।

প্রথম দলের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় দলের উত্তরের সমালোচনাঃ তাদের উত্তরের বিরুদ্ধে অপরাপর আলিমদের দলীল হচ্ছেঃ যে ব্যক্তি প্রথম বৈঠক থেকে পরিপূর্ণরূপে দাঁড়িয়ে যায় তাকে তার কিয়ামের
উপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেয়া হয় এবং সে তার বৈঠকের দিকে ফিরে আসবে না। এর কারণ হচ্ছেঃ সে এরূপ বৈঠক থেকে দাঁড়িয়ে গিয়েছে যা ফরয নয় আর এরূপ কিয়ামের মধ্যে প্রবেশ করেছে যা ফরয। এজন্যই তাকে ফরয পরিত্যাগ করে ফরয নয় এমন কাজের দিকে প্রত্যাবর্তনের নির্দেশ দেয়া হয় না। বরং তাকে ফরযের উপর অটল থেকে তা পূর্ণ করার নির্দেশ দেয়া হয়। আর যদি সে প্রথম বৈঠক ছেড়ে পরিপূর্ণরূপে দাঁড়িয়ে না যায়, তাহলে তাকে বৈঠকের দিকে প্রত্যাবর্তনের নির্দেশ রয়েছে। যেহেতু যখন পূর্ণরূপে না দাঁড়ায় তখন সে ফরযের মধ্যে প্রবেশ করেনি। এজন্য তাকে এমন কাজ থেকে প্রত্যাবর্তনের নির্দেশ রয়েছে, যা সুন্নত (ওয়াজিব) ও নয় এবং ফরঘও নয় এরূপ বৈঠকের দিকে, যা সুন্নত (ওয়াজিব)। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি শেষ বৈঠক ছেড়ে দিয়ে পরিপূর্ণরূপে দাঁড়িয়ে যায়, সে ওয়াজিব কিংবা ফরযের মধ্যে প্রবেশ করেনি । আর সে অবশ্যই এমন বৈঠক থেকে দাঁড়িয়ে গিয়েছে যা ওয়াজিব। এজন্য তাকে এর দিকে প্রত্যাবর্তনের নির্দেশ রয়েছে এবং এমন সালাত অব্যাহত রাখা পরিহার করার কথা বলা হয়েছে, যা ওয়াজিবও নয় এবং ফরযও নয় । যেমন সে ব্যক্তির জন্য হুকুম রয়েছে, যে প্রথম বৈঠক ছেড়ে পরিপূর্ণরূপে দাঁড়ায়নি, ফলে সে ফরযের মধ্যে দাখিল হয়নি। তাই সে এ অবস্থা থেকে বৈঠকের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে, যা ওয়াজিব। অতএব যে ব্যক্তি শেষ বৈঠক ছেড়ে উঠে গিয়ে পরিপূর্ণরূপে দাঁড়ায়নি, তার জন্য হুকুম রয়েছে যে, সে বৈঠকের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। ব্যাপারটি সে রকম নয়, যা অপরাপর আলিমগণ বলেছেন।

আবু জা’ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেছেনঃ এ বিষয়ে আমাদের নিকট এটি-ই হচ্ছে যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ। এমনটি নয় যা অপরাপর আলিমগণ বলেছেন। (অর্থাৎ যারা শেষ বৈঠক ফরয হওয়াকে স্বীকার করেন
না) কিন্তু আবু হানীফা রে), আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও মুহাম্মাদ (রাহঃ) এ বিষয়ে তাঁদের অভিমতই গ্রহণ করেছেন যারা বলেন শেষ বৈঠক তাশাহহুদ পরিমাণ সালাতের রুকন, তথা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। বস্তুত তাঁরা এ বিষয়ে যা বলেছেন পূর্ববর্তী আলিমদের থেকে কেউ কেউ অনুরূপ বলেছেন। যেমনঃ
1645 -كَمَا حَدَّثَنَا رَبِيعٌ الْمُؤَذِّنُ , قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ حَسَّانٍ قَالَ: ثنا وُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ عَنْ مَنْصُورِ بْنِ الْمُعْتَمِرِ , عَنْ إِبْرَاهِيمَ , عَنْ عَلْقَمَةَ , عَنْ عَبْدِ اللهِ , عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِذَلِكَ. فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّهُ أَدْخَلَ فِي الصَّلَاةِ رَكْعَةً مِنْ غَيْرِهَا قَبْلَ السَّلَامِ , وَلَمْ يَرَ ذَلِكَ مُفْسِدًا لِلصَّلَاةِ , وَلَوْ رَآهُ مُفْسِدًا لَهَا إِذًا لَأَعَادَهَا فَلَمَّا لَمْ يُعِدْهَا , وَقَدْ خَرَجَ مِنْهَا إِلَى الْخَامِسَةِ لَا بِتَسْلِيمٍ , دَلَّ ذَلِكَ أَنَّ السَّلَامَ لَيْسَ مِنْ صُلْبِهَا. أَلَا تَرَى أَنَّهُ لَوْ كَانَ جَاءَ بِالْخَامِسَةِ , وَقَدْ بَقِيَ عَلَيْهِ مِمَّا قَبْلَهَا سَجْدَةٌ , كَانَ ذَلِكَ مُفْسِدًا لِلْأَرْبَعِ , لِأَنَّهُ خَلَطَهُنَّ بِمَا لَيْسَ مِنْهُنَّ فَلَوْ كَانَ السَّلَامُ وَاجِبًا كَوُجُوبِ سُجُودِ الصَّلَاةِ , لَكَانَ حُكْمُهُ أَيْضًا كَذَلِكَ , وَلَكِنَّهُ بِخِلَافِهِ فَهُوَ سُنَّةٌ. وَقَدْ رُوِيَ أَيْضًا فِي حَدِيثِ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ , أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلَمْ يَدْرِ أَثَلَاثًا صَلَّى أَمْ أَرْبَعًا فَلْيَبْنِ عَلَى الْيَقِينِ وَيَدَعِ الشَّكَّ , فَإِنْ كَانَتْ صَلَاتُهُ نَقَصَتْ , فَقَدْ أَتَمَّهَا , وَكَانَتِ السَّجْدَتَانِ تُرْغِمَانِ الشَّيْطَانَ , وَإِنْ كَانَتْ صَلَاتُهُ تَامَّةً , كَانَ مَا زَادَ وَالسَّجْدَتَانِ لَهُ نَافِلَةً» . فَقَدْ جَعَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْخَامِسَةَ الزَّائِدَةَ وَالسَّجْدَتَيْنِ اللَّتَيْنِ لِلسَّهْوِ تَطَوُّعًا , وَلَمْ يَجْعَلْ مَا تَقَدَّمَ مِنَ الصَّلَاةِ بِذَلِكَ فَاسِدًا وَإِنْ كَانَ الْمُصَلِّي قَدْ خَرَجَ مِنْهَا إِلَيْهِ , فَثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ الصَّلَاةَ تَتِمُّ بِغَيْرِ تَسْلِيمٍ وَأَنَّ التَّسْلِيمَ مِنْ سُنَنِهَا لَا مِنْ صُلْبِهَا. فَكَانَ تَصْحِيحُ مَعَانِي الْآثَارِ فِي هَذَا الْبَابِ يُوجِبُ مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ الَّذِينَ قَالُوا: لَا تَتِمُّ الصَّلَاةُ حَتَّى يَقْعُدَ مِقْدَارَ التَّشَهُّدِ لِأَنَّ حَدِيثَ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدِ احْتَمَلَ مَا ذَكَرْنَا وَاخْتُلِفَ فِي حَدِيثِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى مَا وَصَفْنَا وَأَمَّا حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ فَهُوَ الَّذِي لَمْ يُخْتَلَفْ فِيهِ. وَأَمَّا وَجْهُ ذَلِكَ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّ الَّذِينَ قَالُوا: إِنَّهُ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ آخِرِ سَجْدَةٍ مِنْ صَلَاتِهِ , فَقَدْ تَمَّتْ صَلَاتُهُ. قَالُوا: رَأَيْنَا هَذَا الْقُعُودَ قُعُودَ التَّشَهُّدِ وَفِيهِ ذِكْرٌ يُتَشَهَّدُ بِهِ وَتَسْلِيمٌ يُخْرَجُ بِهِ مِنَ الصَّلَاةِ , وَقَدْ رَأَيْنَا قَبْلَهُ فِي الصَّلَاةِ قُعُودًا فِيهِ ذِكْرٌ يُتَشَهَّدُ بِهِ. فَكُلٌّ قَدْ أَجْمَعَ أَنَّ ذَلِكَ الْقُعُودَ الْأَوَّلَ , وَمَا فِيهِ مِنَ الذِّكْرِ , لَيْسَ هُوَ مِنْ صُلْبِ الصَّلَاةِ , بَلْ هُوَ مِنْ سُنَنِهَا. وَاخْتُلِفَ فِي الْقُعُودِ الْأَخِيرِ فَالنَّظَرُ عَلَى مَا ذَكَرْنَا أَنْ يَكُونَ كَالْقُعُودِ الْأَوَّلِ , وَيَكُونُ مَا فِيهِ كَمَا فِي الْقُعُودِ الْأَوَّلِ , فَيَكُونُ سُنَّةً , وَكُلُّ مَا يُفْعَلُ فِيهِ سُنَّةٌ كَمَا كَانَ الْقُعُودُ الْأَوَّلُ سُنَّةً , وَكُلُّ مَا يُفْعَلُ فِيهِ سُنَّةٌ , وَقَدْ رَأَيْنَا الْقِيَامَ الَّذِي فِي كُلِّ الصَّلَاةِ وَالرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ الَّذِي فِيهَا أَيْضًا كُلَّهُ كَذَلِكَ فَالنَّظَرُ عَلَى مَا ذَكَرْنَا أَنْ يَكُونَ الْقُعُودُ فِيهَا أَيْضًا كُلُّهُ كَذَلِكَ. فَلَمَّا كَانَ بَعْضُهُ بِاتِّفَاقِهِمْ سُنَّةً كَانَ مَا بَقِيَ مِنْهُ كَذَلِكَ أَيْضًا فِي النَّظَرِ. وَاحْتَجَّ عَلَيْهِمُ الْآخَرُونَ فَقَالُوا: قَدْ رَأَيْنَا الْقُعُودَ الْأَوَّلَ مَنْ قَامَ عَنْهُ سَاهِيًا فَاسْتَتَمَّ قَائِمًا أُمِرَ بِالْمُضِيِّ فِي قِيَامِهِ وَلَمْ يُؤْمَرْ بِالرُّجُوعِ إِلَى الْقُعُودِ , وَقَدْ رَأَيْنَا مَنْ قَامَ مِنَ الْقُعُودِ الْآخِرِ سَاهِيًا حَتَّى اسْتَتَمَّ قَائِمًا أُمِرَ بِالرُّجُوعِ إِلَى قُعُودِهِ. قَالُوا فَمَا يُؤْمَرُ بِالرُّجُوعِ إِلَيْهِ بَعْدَ الْقِيَامِ عَنْهُ فَهُوَ الْفَرْضُ , وَمَا لَا يُؤْمَرُ بِالرُّجُوعِ إِلَيْهِ بَعْدَ الْقِيَامِ عَنْهُ , فَلَيْسَ ذَلِكَ بِفَرْضٍ. أَلَا تَرَى أَنَّ مَنْ قَامَ وَعَلَيْهِ سَجْدَةٌ مِنْ صَلَاتِهِ حَتَّى اسْتَتَمَّ قَائِمًا أُمِرَ بِالرُّجُوعِ إِلَى مَا قَامَ عَنْهُ لِأَنَّهُ قَامَ فَتَرَكَ فَرْضًا فَأُمِرَ بِالْعَوْدِ إِلَيْهِ , وَكَذَلِكَ الْقُعُودُ الْأَخِيرُ , لَمَّا أُمِرَ الَّذِي قَامَ عَنْهُ بِالرُّجُوعِ إِلَيْهِ كَانَ ذَلِكَ دَلِيلًا أَنَّهُ فَرْضٌ , وَلَوْ كَانَ غَيْرَ فَرْضٍ إِذًا لَمَا أُمِرَ بِالرُّجُوعِ إِلَيْهِ كَمَا لَمْ يُؤْمَرْ بِالرُّجُوعِ إِلَى الْقُعُودِ الْأَوَّلِ. فَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ عَلَيْهِمْ لِلْآخَرِينَ أَنَّهُ إِنَّمَا أُمِرَ الَّذِي قَامَ مِنَ الْقُعُودِ الْأَوَّلِ حَتَّى اسْتَتَمَّ قَائِمًا بِالْمُضِيِّ فِي قِيَامِهِ , وَأَنْ لَا يَرْجِعَ إِلَى قُعُودِهِ ; لِأَنَّهُ قَامَ مِنْ قُعُودٍ غَيْرِ فَرْضٍ فَدَخَلَ فِي قِيَامٍ فَرْضٍ فَلَمْ يُؤْمَرْ بِتَرْكِ الْفَرْضِ وَالرُّجُوعِ إِلَى غَيْرِ الْفَرْضِ وَأُمِرَ بِالتَّمَادِي عَلَى الْفَرْضِ حَتَّى يُتِمَّهُ. فَكَانَ لَوْ قَامَ عَنِ الْقُعُودِ الْأَوَّلِ فَلَمْ يَسْتَتِمَّ قَائِمًا أُمِرَ بِالْعَوْدِ إِلَى الْقُعُودِ لِأَنَّهُ مَا لَمْ يَسْتَتِمَّ قَائِمًا فَلَمْ يَدْخُلْ فِي فَرْضٍ فَأُمِرَ بِالْعَوْدِ مِمَّا لَيْسَ بِسُنَّةٍ وَلَا فَرْضٍ إِلَى الْقُعُودِ الَّذِي هُوَ سُنَّةٌ , وَكَانَ يُؤْمَرُ بِالْعَوْدِ مِمَّا لَيْسَ بِسُنَّةٍ وَلَا فَرِيضَةٍ إِلَى مَا هُوَ سُنَّةٌ , وَيُؤْمَرُ بِالْعَوْدِ مِنَ السُّنَّةِ إِلَى مَا هُوَ فَرِيضَةٌ , وَكَانَ الَّذِي قَامَ مِنَ الْقُعُودِ الْأَخِيرِ حَتَّى اسْتَتَمَّ قَائِمًا دَاخِلًا لَا فِي سُنَّةٍ وَلَا فِي فَرِيضَةٍ وَقَدْ قَامَ مِنْ قُعُودٍ هُوَ سُنَّةٌ فَأُمِرَ بِالْعَوْدِ إِلَيْهِ وَتَرْكِ التَّمَادِي فِيمَا لَيْسَ بِسُنَّةٍ وَلَا فَرِيضَةٍ. كَمَا أُمِرَ الَّذِي قَامَ مِنَ الْقُعُودِ الْأَوَّلِ الَّذِي هُوَ سُنَّةٌ فَلَمْ يَسْتَتِمَّ قَائِمًا فَيَدْخُلَ فِي الْفَرِيضَةِ أَنْ يَرْجِعَ مِنْ ذَلِكَ إِلَى الْقُعُودِ الَّذِي هُوَ سُنَّةٌ فَلِهَذَا أُمِرَ الَّذِي قَامَ مِنَ الْقُعُودِ الْأَخِيرِ حَتَّى اسْتَتَمَّ قَائِمًا بِالرُّجُوعِ إِلَيْهِ لَا لِمَا ذَهَبَ إِلَيْهِ الْآخَرُونَ. قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَهَذَا هُوَ النَّظَرُ عِنْدَنَا فِي هَذَا الْبَابِ لَا مَا قَالَ الْآخَرُونَ. وَلَكِنَّ أَبَا حَنِيفَةَ , وَأَبَا يُوسُفَ , وَمُحَمَّدًا , رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى , ذَهَبُوا فِي ذَلِكَ إِلَى قَوْلِ الَّذِينَ قَالُوا: إِنَّ الْقُعُودَ الْأَخِيرَ مِقْدَارَ التَّشَهُّدِ مِنْ صُلْبِ الصَّلَاةِ لِأَنَّهُ ثَبَتَ بِالنَّصِّ كَمَا ذَكَرْنَا. وَقَدْ قَالَ بَعْضُ الْمُتَقَدِّمِينَ بِمَا قَالُوا مِنْ ذَلِكَ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ১৬৪৫ | মুসলিম বাংলা