শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৪৬৯
আন্তর্জাতিক নং: ১৪৭০
নামাযের অধ্যায়
ফজরের সালাত ও অন্যান্য সালাতে দু'আ কুনূত পাঠ করা ।
১৪৬৯-১৪৭০। আবু দাউদ (রাহঃ) আবু বাকরা (রাহঃ)..... আশ'আস (রাহঃ)-এর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, ইব্‌ন উমার (রাযিঃ)-কে কুনূত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বলেন- কুনূত কি? তিনি বলেন : ইমাম যখন শেষ রাক'আতের কিরা'আত শেষ করবেন তখন দাঁড়িয়ে থেকে দু'আ করবেন। তিনি (রাযিঃ) বলেন- আমি কাউকে তা করতে দেখিনি; বরং হে ইরাকবাসী, আমার ধারণা, এটা তোমরাই করছ।

আবু বাকরা (রাহঃ).... তামীম ইবন সালামা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, ইবন উমর (রাযিঃ)-কে কুনূত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অনুরূপ উল্লেখ করেন। তবে এই বর্ণনায় রয়েছে, তিনি বলেন, আমি দেখিওনি এবং অবগতও নই।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইবন উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হচ্ছে এই যে, তিনি নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে শেষ রাক'আত থেকে মাথা উত্তোলন করে কুনূত পাঠ করতে দেখেছেন আয়াতটি হচ্ছে_ لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ يُعَذِّبَهُمْ فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ

"তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দিবেন- এই বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নাই, কারণ তারা যালিম"। (৩:১২৮) তারপর এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণে তিনি (ﷺ) যে কুনত পাঠ করতেন তা থেকে বিরত থাকেন। আবু মিজলায় (রাহঃ) ইবন উমর (রাযিঃ)-কে করলেন যে, বার্ধক্য আপনাকে কুনূত থেকে বিরত রাখছে? তিনি উত্তরে বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর সাহাবীগণের কারো কুনূত পাঠ করা আমার নিকট প্রমাণিত নয়, অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কুনূত পাঠ ছেড়ে দেয়ার পর তাঁরা তা পাঠ করতেন না।

ইবন উমর (রাযিঃ)-কে আবুশ শা'ছা কুনূত সম্পর্কে প্রশ্ন করেন এবং ইবন উমর (রাযিঃ) তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, কুনূত পাঠ কি ? তিনি তাঁকে অবহিত করলেন যে, ইমাম ফজরের সালাতের শেষ রাক'আতে যখন কিরা'আত শেষ করবেন তখন দাঁড়িয়ে থেকে দু'আ করবেন। তখন তিনি বললেন, আমি কাউকে কুনূত পাঠ করতে দেখিনি। যেহেতু তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক পঠিত কুনূত সম্পর্কে যা জানতেন তা ছিলো রুকু’র পরে দু'আ করা। আর রুকু'র পূর্বে তিনি রাসূলুল্লাহ্ ( ‌ﷺ) এবং তাঁর পরে অন্য কাউকে কুনূত পাঠ করতে দেখেন নি। এই কারণেই তিনি তা অস্বীকার করেছেন।

বস্তুত আমরা তাঁর সূত্রে যে হাদীস বর্ণনা করেছি এর দ্বারা প্রমাণিত হয়ে গেল যে, রুকূ'র পরে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক কুনূত পাঠ করা রহিত হয়ে গেছে এবং রুকু'র পূর্বে কোন অবস্থাতেই যে কুনূত পাঠ নেই তাও প্রমাণিত হয়ে গেল। রহিত হয়ে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও তাঁর পরবর্তী খুলাফায়ে রাশেদীন তা পাঠ করতেন না।

রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে কুনূত পাঠ সম্পর্কে আরেক রাবী হচ্ছেন_ আব্দুর রহমান ইবন আবু বাকার (রাযিঃ)। তিনি তাঁর বর্ণনাকৃত হাদীসে অবহিত করেছেন (যা আমরা বর্ণনা করে এসেছি) যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কুনূতে কাফিরদের বিরুদ্ধে বদ্ দু'আ করতেন। আর আল্লাহ্ তা'আলা তা নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা রহিত করে দিয়েছেন- لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ يُعَذِّبَهُمْ “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দিবেন-এই বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নেই” (৩:১২৮)। বস্তুত এতেও ফজরের সালাতে কুনূত পাঠ পরিত্যাগ করার বিষয়টি অবধারিতভাবে প্রমাণিত হয়।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে কুনূত পাঠ সংক্রান্ত বর্ণনাকারীদের মধ্যে খুফাফ ইব্‌ন ঈ'মা (রাযিঃ) অন্যতম। তিনি উল্লেখ করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন রুকু থেকে মাথা উত্তোলন করলেন তখন বললেন : আসলাম গোত্রকে, আল্লাহ্ নিরাপদ রাখুন,' গিফার গোত্রকে আল্লাহ্ ক্ষমা করুন, উসাইয়া গোত্র আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করেছে, হে আল্লাহ্! বানূ লাহ্ইয়ানকে অভিসম্পাত কর এবং তাদেরকেও, যাদের কথা তাদের সাথে তিনি উল্লেখ করেছেন।

বস্তুত ইব্‌ন উমার (রাযিঃ) ও আব্দুর রহমান (রাযিঃ)-এর হাদীসদ্বয়ের ন্যায় এই হাদীসেও রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কাফির গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে অভিসম্পাত করেছেন, যা স্পষ্টত বুঝা যাচ্ছে। তাঁরা উভয়ে তাদের বর্ণিত হাদীসে এই মর্মে অবহিত করছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর উপর পূর্বোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হলে তিনি কুনূত পাঠ পরিত্যাগ করেন।

অতএব যেমনিভাবে তাঁদের বর্ণিত উভয় হাদীস রহিত হয়ে গেছে, অনুরূপভাবে খুফাফ ইবন ঈ'মা‌ (রাযিঃ)-এর হাদীসও রহিত হয়ে গেছে। বরং ইবন ঈ'মা (রাযিঃ)-এর হাদীস অপেক্ষা তাদের উভয়ের হাদীস উত্তম। এতেও কুনূত পাঠ পরিত্যাগ করার বিষয়টি অবধারিতভাবে প্রমাণিত হয়। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে কুনূত সংক্রান্ত বর্ণনাকারীগণের মধ্যে বারা (রাযিঃ)ও একজন। তাঁর থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফজর ও মাগরিবের সালাতে কুনূত পাঠ করতেন। কিন্তু তিনি তাঁর কুনুতের স্বরূপ ব্যাখ্যা করেননি। সম্ভবত তাঁর রিওয়ায়াতে সে-ই কুনূত-ই উদ্দেশ্য, যা ইবন উমর (রাযিঃ) ও আব্দুর রহমান ইবন আবু বাকার (রাযিঃ)-এর রিওয়ায়াতদ্বয়ে এবং অন্যান্যদের রিওয়ায়াতে বর্ণিত হয়েছে। তারপর তাও এই আয়াত দ্বারা রহিত হয়ে যায়।

এই হাদীসে ফজর এবং মাগরিবকে মিলিত করে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) উভয় সালাতে কুনূত পাঠ করতেন। বস্তুত আমাদের বিপক্ষ অবলম্বনকারীদের নিকটও মাগরিবের সালাতে কুনূত পাঠ রহিতকরণ একটি স্বীকৃত বিষয়। কারো জন্য উক্ত সালাতে কুনুত পাঠ করা বৈধ নয়। অতএব এটা-ই প্রমাণ বহন করছে যে, ফজরের সালাতে কুনূত পাঠ করাও অনুরূপভাবে রহিত হয়ে গেছে।

রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে ফজরের সালাতে কুনূত পাঠ সংক্রান্ত রাবীদের মধ্যে আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ) অন্যতম। আমর ইবন উবায়দ (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফজরের সালাতের রুকূ'র পরে সর্বদা এবং আজীবন কুনূত পাঠ করতেন। এই হাদীসে ফজরের সালাতে কুনূত পাঠ প্রমাণিত করা হয়েছে এবং কুনূত পাঠ যে রহিত হয় নাই তা ব্যক্ত হয়েছে।

বস্তুত আনাস (রাযিঃ) থেকে উল্লিখিত (আমর ইবন উবায়দের) রিওয়ায়াতের বিপরীতে একাধিক রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে। আয়্যূব (রাহঃ) মুহাম্মাদ ইবন সীরীন (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আনাস (রাযিঃ)-কে এই মর্মে প্রশ্ন করা হয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফজরের সালাতে কুনূত পাঠ করেছেন ? তিনি উত্তরে বলেন, হ্যাঁ, তারপর তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়- রুকু'র পূর্বে না পরে? তিনি বলেছেন, রুকু'র সামান্য পরে। ইসহাক ইব্‌ন আব্দুল্লাহ ইবন আবু তালহা (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ত্রিশ দিন রি'ল ও যাক্ওয়ান গোত্রদ্বয়ের বিরুদ্ধে বদ্ দু'আ স্বরূপ কুনূত পাঠ করেছেন। কাতাদা (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। হুমায়দ (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।

হুমায়দ (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বিশ দিন কুনূত পাঠ করেছেন। উল্লিখিত সকলে আমর ইবন উবায়দ... হাসান বসরী (রাহঃ) সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াতের পরিপন্থী রিওয়ায়াত করেছেন। আসিম (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে রুকু'র পরে কুনূত পাঠকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করার কথা বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) শুধু একমাস কুনূত পাঠ করেছেন। কিন্তু কুনূত পাঠ ছিলো রুকু'র পূর্বে। অতএব এটাও আমর ইবন উবায়দ-এর রিওয়ায়াতের পরিপন্থী ও বিপরীত হলো। বস্তুত আনাস (রাযিঃ)-এর রিওয়ায়াত দু'ভাবে দুই সূত্রে এসেছে। কারো জন্য দুই সূত্রের কোন একটিকে প্রাধান্য দিয়ে প্রমাণ পেশ করা ঠিক হবে না। যেহেতু তার পরিপন্থী সূত্র দ্বারা প্রমাণ পেশ করার অবকাশ রয়েছে।অবশ্য তাঁর উক্তি, “কিন্তু কুনুত পাঠ রুকূ’র পূর্বে” এটা তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে শুনেছেন বলে উল্লেখ করেননি । সম্ভবত আনাস (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পরে কোন সাহাবী থেকে এটা নিয়েছেন। অথবা এটা আনাস (রাযিঃ) এর ইজতিহাদ প্রসূত অভিমত, যা অন্যান্য সাহাবীদের অভিমত ও বর্ণনার পরিপন্থী । সুতরাং সুস্পষ্ট কোনরূপ শরয়ী প্রমাণ ব্যতীত তার প্রতিপক্ষ আনাস (রাযিঃ)-এর অভিমত তার প্রতিপক্ষ অপরাপর সাহাবীর অভিমতের উপর প্রধান্য পেতে পারেনা।

কোন প্রশ্নকারী যদি প্রশ্ন করে যে, আবু জা'ফর রাযী (রাহঃ) রাবী' ইব্‌ন আনাস (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আমি আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ)-এর নিকট বসা ছিলাম। তাঁকে বলা হলো- রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এক মাস কাল কুনূত পাঠ করেছেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সর্বদা ফজরের সালাতে কুনূত পাঠ করতেন, তারপর তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।

এর উত্তরে বলা যায়, বর্ণিত কুনূতটি সে-ই কুনূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আমর ইবন উবায়দ (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। যদি তাই হয় তাহলে তো এটা আমাদের পূর্বোল্লেখিত বর্ণনার পরিপন্থী। আর যদি কুনূত বলতে রুকূ'র পূর্বের কুনূত বুঝানো হয়ে থাকে, যা আসিম (রাহঃ)-এর সূত্রে আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। ফলে আমাদের নিকট রুকূ'র পূর্বে কুনূত সংক্রান্ত কোন হাদীস রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে আনাস (রাযিঃ) সূত্রে প্রমাণিত নয়। প্রমাণিত আছে তাঁর থেকে কেবলমাত্র রুকূ'র পরে কুনূত পাঠ রহিত হয়ে যাওয়ার বিষয়টি।

রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে ফজরের সালাতে কুনূত পাঠ করার বিষয়ে বর্ণনাকারীদের মধ্যে আবু হুরায়রা (রাযিঃ)ও অন্যতম। সেই কুনূতে এক সম্প্রদায়ের জন্য ছিলো মুক্তির দু'আ; আরেক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ছিলো অভিসম্পাতের বদ্ দু'আ। তাঁর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর প্রতি যখন আল্লাহ্ তা'আলা لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ আয়াত অবতীর্ণ করেন তখন তিনি তা পাঠ করা থেকে বিরত থাকেন।

কেউ যদি প্রশ্ন করেন, এটা কিভাবে সম্ভব ? অথচ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ইন্তিকালের পরে আবু হুরায়রা (রাযিঃ) ফজরের সালাতে কুনূত পাঠ করতেন। যেমন_
كتاب الصلاة
1469 - وَكَمَا حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ قَالَ: ثنا أَبُو دَاوُدَ قَالَ: ثنا زَائِدَةُ , عَنِ الْأَشْعَثِ , عَنْ أَبِيهِ قَالَ: سُئِلَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ الْقُنُوتِ ; فَقَالَ: " وَمَا الْقُنُوتُ؟ فَقَالَ: إِذَا فَرَغَ الْإِمَامُ مِنَ الْقِرَاءَةِ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ , قَامَ يَدْعُو قَالَ: مَا رَأَيْتُ أَحَدًا يَفْعَلُهُ وَإِنِّي لَأَظُنُّكُمْ مَعَاشِرَ أَهْلِ الْعِرَاقِ تَفْعَلُونَهُ "

1470 - وَكَمَا حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ قَالَ: ثنا أَبُو دَاوُدَ قَالَ: ثنا زَائِدَةُ , عَنْ مَنْصُورٍ , عَنْ تَمِيمِ بْنِ سَلَمَةَ قَالَ: سُئِلَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ الْقُنُوتِ , فَذَكَرَ مِثْلَهُ إِلَّا أَنَّهُ قَالَ: «مَا رَأَيْتُ وَلَا عَلِمْتُ» فَوَجْهُ مَا رُوِيَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي هَذَا الْبَابِ أَنَّهُ " رَأَى رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ قَنَتَ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ يُعَذِّبَهُمْ فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ} [آل عمران: 128] فَتَرَكَ لِذَلِكَ الْقُنُوتَ الَّذِي كَانَ يَقْنُتُهُ ". وَسَأَلَهُ أَبُو مِجْلَزٍ فَقَالَ: «آلْكِبْرُ يَمْنَعُكَ مِنَ الْقُنُوتِ؟» فَقَالَ: «مَا أَحْفَظُهُ مِنْ أَحَدٍ مِنْ أَصْحَابِي» يَعْنِي مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيْ أَنَّهُمْ لَمْ يَفْعَلُوهُ بَعْدَ تَرْكِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِيَّاهُ. وَسَأَلَهُ أَبُو الشَّعْثَاءِ عَنِ الْقُنُوتِ وَسَأَلَهُ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ ذَلِكَ الْقُنُوتِ مَا هُوَ فَأَخْبَرَهُ أَنَّ الْإِمَامَ إِذَا فَرَغَ مِنَ الْقِرَاءَةِ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ قَامَ يَدْعُو. فَقَالَ: «مَا رَأَيْتُ أَحَدًا يَفْعَلُهُ» لِأَنَّ مَا كَانَ هُوَ عَلِمَهُ مِنْ قُنُوتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا كَانَ الدُّعَاءُ بَعْدَ الرُّكُوعِ وَأَمَّا قَبْلَ الرُّكُوعِ فَلَمْ يَرَهُ مِنْهُ وَلَا مِنْ غَيْرِهِ فَأَنْكَرَ ذَلِكَ مِنْ أَجْلِهِ. فَقَدْ ثَبَتَ بِمَا رَوَيْنَا عَنْهُ , نَسْخُ قُنُوتِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ الرُّكُوعِ , وَنَفْيُ الْقُنُوتِ قَبْلَ الرُّكُوعِ أَصْلًا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَمْ يَكُنْ يَفْعَلُهُ وَلَا خُلَفَاؤُهُ مِنْ بَعْدِهِ. وَكَانَ أَحَدُ مَنْ رُوِيَ عَنْهُ الْقُنُوتُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ فَأَخْبَرَ فِي حَدِيثِهِ الَّذِي رَوَيْنَاهُ عَنْهُ بِأَنَّ مَا كَانَ يَقْنُتُ بِهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دُعَاءٌ عَلَى مَنْ كَانَ يَدْعُو عَلَيْهِ , وَأَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ نَسَخَ ذَلِكَ بِقَوْلِهِ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ يُعَذِّبَهُمْ} [آل عمران: 128] الْآيَةَ , فَفِي ذَلِكَ أَيْضًا وُجُوبُ تَرْكِ الْقُنُوتِ فِي الْفَجْرِوَكَانَ أَحَدُ مَنْ رُوِيَ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَلِكَ أَيْضًا خُفَافُ بْنُ إِيمَاءٍ فَذَكَرَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ لَمَّا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَالَ: «أَسْلَمُ سَالَمَهَا اللهُ , وَغِفَارٌ غَفَرَ اللهُ لَهَا , وَعُصَيَّةُ عَصَتِ اللهَ وَرَسُولَهُ , اللهُمَّ الْعَنْ بَنِي لِحْيَانَ» وَمَنْ ذُكِرَ مَعَهُمْ. فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ لَعَنَ مَنْ لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَفِي حَدِيثَيِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ وَقَدْ أَخْبَرَاهُمَا فِي حَدِيثِهِمَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَرَكَ ذَلِكَ حِينَ أُنْزِلَتْ عَلَيْهِ الْآيَةُ الَّتِي ذَكَرْنَا. فَفِي حَدِيثِهِمَا النَّسْخُ كَمَا فِي حَدِيثِ خُفَافِ بْنِ إِيمَاءٍ فَهُمَا أَوْلَى مِنْ حَدِيثِ ابْنِ إِيمَاءٍ , وَفِي ذَلِكَ وُجُوبُ تَرْكِ الْقُنُوتِ أَيْضًا. وَكَانَ أَحَدُ مَنْ رُوِيَ عَنْهُ ذَلِكَ أَيْضًا الْبَرَاءُ , فَرُوِيَ عَنْهُ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْنُتُ فِي الْفَجْرِ وَالْمَغْرِبِ» , وَلَمْ يُخْبِرْ بِقُنُوتِهِ ذَلِكَ مَا هُوَ فَقَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ ذَلِكَ الْقُنُوتُ الَّذِي رَوَاهُ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ وَمَنْ رَوَى ذَلِكَ مَعَهُمَا , ثُمَّ نُسِخَ ذَلِكَ بِهَذِهِ الْآيَةِ أَيْضًا وَقَدْ قَرَنَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْفَجْرِ فَذَكَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْنُتُ فِيهِمَا. فَفِي إِجْمَاعِ مُخَالِفِنَا لَنَا , عَلَى أَنَّ مَا كَانَ يَفْعَلُهُ فِي الْمَغْرِبِ مِنْ ذَلِكَ مَنْسُوخٌ , لَيْسَ لِأَحَدٍ بَعْدَهُ أَنْ يَفْعَلَهُ دَلِيلٌ عَلَى أَنَّ مَا كَانَ يَفْعَلُهُ فِي الْفَجْرِ أَيْضًا كَذَلِكَ. وَكَانَ أَحَدُ مَنْ رُوِيَ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيْضًا الْقُنُوتَ فِي الْفَجْرِ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ. فَرَوَى عَمْرُو بْنُ عُبَيْدٍ عَنِ الْحَسَنِ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَزَلْ يَقْنُتُ بَعْدَ الرُّكُوعِ فِي صَلَاةِ الْغَدَاةِ , حَتَّى فَارَقَهُ» فَأَثْبَتَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ الْقُنُوتَ فِي صَلَاةِ الْغَدَاةِ وَأَنَّ ذَلِكَ لَمْ يُنْسَخْ. وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ وُجُوهٍ , خِلَافُ ذَلِكَ , فَرَوَى أَيُّوبُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ قَالَ: سُئِلَ أَنَسٌ أَقَنَتَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي صَلَاةِ الصُّبْحِ فَقَالَ: نَعَمْ. فَقِيلَ لَهُ: قَبْلَ الرُّكُوعِ أَوْ بَعْدَهُ. فَقَالَ: بَعْدَ الرُّكُوعِ يَسِيرًا ". وَرَوَى إِسْحَاقُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ: «قَنَتَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثِينَ صَبَاحًا , عَلَى رَعْلٍ وَذَكْوَانَ» . وَرَوَى قَتَادَةُ عَنْهُ نَحْوًا مِنْ ذَلِكَ. وَرَوَى عَنْهُ حُمَيْدٌ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا قَنَتَ عِشْرِينَ يَوْمًا. فَهَؤُلَاءِ كُلُّهُمْ قَدْ أَخْبَرُوا عَنْهُ خِلَافَ مَا رَوَى عَمْرٌو عَنِ الْحَسَنِ , وَقَدْ رَوَى عَاصِمٌ عَنْهُ إِنْكَارَ الْقُنُوتِ بَعْدَ الرُّكُوعِ أَصْلًا وَأَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا فَعَلَ ذَلِكَ شَهْرًا وَلَكِنَّ الْقُنُوتَ قَبْلَ الرُّكُوعِ فَضَادَّ ذَلِكَ أَيْضًا مَا رَوَى عَمْرُو بْنُ عُبَيْدٍ وَخَالَفَهُ. فَلَمْ يَجُزْ لِأَحَدٍ أَنْ يَحْتَجَّ فِي حَدِيثِ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بِأَحَدِ الْوَجْهَيْنِ مِمَّا رُوِيَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لِأَنَّ لِخَصْمِهِ أَنْ يَحْتَجَّ عَلَيْهِ بِمَا رُوِيَ عَنْ أَنَسٍ مِمَّا يُخَالِفُ ذَلِكَ. وَأَمَّا قَوْلُهُ: وَلَكِنَّ الْقُنُوتَ قَبْلَ الرُّكُوعِ فَلَمْ يَذْكُرْ ذَلِكَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ ذَلِكَ أَخَذَهُ عَمَّنْ بَعْدَهُ أَوْ رَأْيًا رَآهُ. فَقَدْ رَأَى غَيْرُهُ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خِلَافَ ذَلِكَ , فَلَا يَكُونُ قَوْلُهُ أَوْلَى مِنْ قَوْلِ مَنْ خَالَفَهُ إِلَّا بِحُجَّةٍ تُبَيِّنُ لَنَا. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: فَقَدْ رَوَى أَبُو جَعْفَرٍ الرَّازِيُّ عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ أَنَسٍ قَالَ: " كُنْتُ جَالِسًا عِنْدَ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَقِيلَ لَهُ: إِنَّمَا قَنَتَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَهْرًا. فَقَالَ: «مَا زَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْنُتُ فِي صَلَاةِ الْغَدَاةِ , حَتَّى فَارَقَ الدُّنْيَا» . قِيلَ لَهُ قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ ذَلِكَ الْقُنُوتُ هُوَ الْقُنُوتَ الَّذِي رَوَاهُ عَمْرٌو عَنِ الْحَسَنِ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَإِنْ كَانَ ذَلِكَ كَذَلِكَ فَقَدْ ضَادَّهُ مَا قَدْ ذَكَرْنَا. وَيَجُوزُ أَنْ يَكُونَ ذَلِكَ الْقُنُوتُ هُوَ الْقُنُوتَ قَبْلَ الرُّكُوعِ الَّذِي ذَكَرَهُ أَنَسٌ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي حَدِيثِ عَاصِمٍ. فَلَمْ يَثْبُتْ لَنَا عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْقُنُوتِ قَبْلَ الرُّكُوعِ شَيْءٌ , وَقَدْ ثَبَتَ عَنْهُ النَّسْخُ لِلْقُنُوتِ بَعْدَ الرُّكُوعِ. وَكَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَحَدَ مَنْ رُوِيَ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيْضًا الْقُنُوتُ فِي الْفَجْرِ , فَذَلِكَ الْقُنُوتُ هُوَ دُعَاءٌ لِقَوْمٍ وَدُعَاءٌ عَلَى آخَرِينَ. وَفِي حَدِيثِهِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَرَكَ ذَلِكَ حِينَ أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ { «لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ» } [آل عمران: 128] الْآيَةَ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: فَكَيْفَ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ هَذَا هَكَذَا , وَقَدْ كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَعْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْنُتُ فِي الصُّبْحِ فَذَكَرَ مَا قَدْ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ১৪৬৯ | মুসলিম বাংলা