শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১১৯৩
সালাতে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম পড়া
১১৯৩। রবীউল মুয়াযযিন (রাহঃ) ..... ইয়া'লা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি উম্মু সালামা (রাযিঃ)-কে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর কিরাআত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি তাঁকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর কিরাআত স্পষ্ট করে এক এক অক্ষর করে বিবরণ পেশ করেন।
বিশ্লেষণ
এই হাদীসে উম্মু সালামা (রাযিঃ)-এর পক্ষ থেকে 'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম' পড়ার উল্লেখ করা এদিকে ইঙ্গিত বহন করে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পুরা কুরআনের কিরাআত কিরূপ ছিল, এর দ্বারা তার বিবরণ দিচ্ছেন। এতে রাসূলুল্লাহ্ 'বিসমিল্লাহ .....' পড়তেন বলে কোনরূপ দলীল নেই । 'তাই এর মর্ম ইব্ন জুরায়জ (রাহঃ)-এর রিওয়ায়াতের মর্ম থেকে ভিন্ন।
এটাও হতে পারে যে, ইবন জুরায়জ (রাহঃ)-এর হাদীসে সূরা ফাতিহার যে উল্লেখ রয়েছে এতে সম্ভাবনা রয়েছে যে, ইবন জুরায়জ (রাহঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কিরাআত এক এক অক্ষর করে স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছেন। যেমনিভাবে লায়স (রাহঃ) ইবন আবী মুলায়কা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। সুতরাং উন্মু সালামা (রাযিঃ)-এর ওই হাদীসে কারো জন্য দলীল সাব্যস্ত হল না। তাঁরা তাঁদের (প্রথমোক্ত মত পোষণকারীদের)-কে এটাও বলেছেন, যা কিছু তোমরা সাঈদ ইবন জুবাইর (রাহঃ) সূত্রে ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا مِنَ الْمَثَانِي (আমি তো তোমাকে দিয়েছি সাত আয়াত যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্ত হয়, সূরাঃ ১৫ আয়াতঃ ৮৭) সম্পর্কে রিওয়ায়াত করেছেন এবং বলেছেন, এটা (সূরা ফাতিহা) ‘সাবয়ে মাসানী' (সাত আয়াত যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্ত হয়)-এর অন্তর্ভুক্ত। আমরা এ বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হব না। কিন্তু আপনারা যা বলেছেন যে 'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম' তার অংশ এবং ইবন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে এটা বর্ণিত আছে এ বিষয়ে কিন্তু অন্যদের থেকে (যাদের থেকে আমরা এই অনুচ্ছেদে হাদীস রিওয়ায়াত করেছি) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) 'বিসমিল্লাহ' জোরে পড়েননি মর্মে হাদীস বর্ণিত আছে, যেগুলো ইবন আব্বাস (রাযিঃ)-এর বর্ণনার বিরুদ্ধে প্রমাণ বহন করে। এতে তাদের কারো মতভেদ নেই যে, সূরা ফাতিহা সাত আয়াত বিশিষ্ট। সুতরাং যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ ..... কে তার অংশ সাব্যস্ত করেছে সে এটাকে ভিন্ন এক আয়াত গণ্য করেছে। আর যে ব্যক্তি এটাকে ফাতিহার অংশ সাব্যস্ত করেনি সে أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ -কে এক আয়াত গণ্য করেছে। বস্তুত যখন এ বিষয়ে তাঁরা মতভেদ করেছেন তখন গভীর পর্যবেক্ষণ জরুরী। আমরা বিষয়টিকে যথাস্থানে ইনশাআল্লাহ্ বর্ণনা করব।
উসমান ইব্ন আফফান (রাযিঃ) থেকে এ বিষয়ে (নিম্নোক্ত হাদীস) বর্ণিত আছেঃ
বিশ্লেষণ
এই হাদীসে উম্মু সালামা (রাযিঃ)-এর পক্ষ থেকে 'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম' পড়ার উল্লেখ করা এদিকে ইঙ্গিত বহন করে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পুরা কুরআনের কিরাআত কিরূপ ছিল, এর দ্বারা তার বিবরণ দিচ্ছেন। এতে রাসূলুল্লাহ্ 'বিসমিল্লাহ .....' পড়তেন বলে কোনরূপ দলীল নেই । 'তাই এর মর্ম ইব্ন জুরায়জ (রাহঃ)-এর রিওয়ায়াতের মর্ম থেকে ভিন্ন।
এটাও হতে পারে যে, ইবন জুরায়জ (রাহঃ)-এর হাদীসে সূরা ফাতিহার যে উল্লেখ রয়েছে এতে সম্ভাবনা রয়েছে যে, ইবন জুরায়জ (রাহঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কিরাআত এক এক অক্ষর করে স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছেন। যেমনিভাবে লায়স (রাহঃ) ইবন আবী মুলায়কা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। সুতরাং উন্মু সালামা (রাযিঃ)-এর ওই হাদীসে কারো জন্য দলীল সাব্যস্ত হল না। তাঁরা তাঁদের (প্রথমোক্ত মত পোষণকারীদের)-কে এটাও বলেছেন, যা কিছু তোমরা সাঈদ ইবন জুবাইর (রাহঃ) সূত্রে ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا مِنَ الْمَثَانِي (আমি তো তোমাকে দিয়েছি সাত আয়াত যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্ত হয়, সূরাঃ ১৫ আয়াতঃ ৮৭) সম্পর্কে রিওয়ায়াত করেছেন এবং বলেছেন, এটা (সূরা ফাতিহা) ‘সাবয়ে মাসানী' (সাত আয়াত যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্ত হয়)-এর অন্তর্ভুক্ত। আমরা এ বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হব না। কিন্তু আপনারা যা বলেছেন যে 'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম' তার অংশ এবং ইবন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে এটা বর্ণিত আছে এ বিষয়ে কিন্তু অন্যদের থেকে (যাদের থেকে আমরা এই অনুচ্ছেদে হাদীস রিওয়ায়াত করেছি) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) 'বিসমিল্লাহ' জোরে পড়েননি মর্মে হাদীস বর্ণিত আছে, যেগুলো ইবন আব্বাস (রাযিঃ)-এর বর্ণনার বিরুদ্ধে প্রমাণ বহন করে। এতে তাদের কারো মতভেদ নেই যে, সূরা ফাতিহা সাত আয়াত বিশিষ্ট। সুতরাং যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ ..... কে তার অংশ সাব্যস্ত করেছে সে এটাকে ভিন্ন এক আয়াত গণ্য করেছে। আর যে ব্যক্তি এটাকে ফাতিহার অংশ সাব্যস্ত করেনি সে أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ -কে এক আয়াত গণ্য করেছে। বস্তুত যখন এ বিষয়ে তাঁরা মতভেদ করেছেন তখন গভীর পর্যবেক্ষণ জরুরী। আমরা বিষয়টিকে যথাস্থানে ইনশাআল্লাহ্ বর্ণনা করব।
উসমান ইব্ন আফফান (রাযিঃ) থেকে এ বিষয়ে (নিম্নোক্ত হাদীস) বর্ণিত আছেঃ
1193 - كَمَا حَدَّثَنَا رَبِيعٌ الْمُؤَذِّنُ قَالَ: ثنا شُعَيْبُ بْنُ اللَّيْثِ قَالَ: ثنا اللَّيْثُ , عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ , عَنْ يَعْلَى «أَنَّهُ سَأَلَ أُمَّ سَلَمَةِ عَنْ قِرَاءَةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنَعَتَتْ لَهُ قِرَاءَةَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مُفَسَّرَةً حَرْفًا حَرْفًا» فَفِي هَذَا أَنَّ ذِكْرَ قِرَاءَةِ {بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ} [الفاتحة: 1] مِنْ أُمِّ سَلَمَةَ , تَنْعَتُ بِذَلِكَ قِرَاءَةَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِسَائِرِ الْقُرْآنِ , كَيْفَ كَانَتْ؟ وَلَيْسَ فِي ذَلِكَ دَلِيلٌ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْرَأُ {بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ} [الفاتحة: 1] فَمَعْنَى هَذَا غَيْرُ مَعْنَى حَدِيثِ ابْنِ جُرَيْجٍ. وَقَدْ يَجُوزُ أَيْضًا أَنْ يَكُونَ تَقْطِيعُ فَاتِحَةِ الْكِتَابِ الَّذِي فِي حَدِيثِ ابْنِ جُرَيْجٍ , كَانَ مِنِ ابْنِ جُرَيْجٍ أَيْضًا حِكَايَةً مِنْهُ لِلْقِرَاءَةِ الْمُفَسَّرَةِ حَرْفًا حَرْفًا , الَّتِي حَكَاهَا اللَّيْثُ , عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ. فَانْتَفَى بِذَلِكَ أَنْ يَكُونَ فِي حَدِيثِ أُمِّ سَلَمَةَ ذَلِكَ حُجَّةٌ لِأَحَدٍ. وَقَالُوا لَهُمْ أَيْضًا , فِيمَا رَوَوْهُ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ , عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فِي قَوْلِهِ: {وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا مِنَ الْمَثَانِي} [الحجر: 87] أَمَّا مَا ذَكَرْتُمُوهُ مِنْ أَنَّهَا هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي , فَإِنَّا لَا نُنَازِعُكُمْ فِي ذَلِكَ. وَأَمَّا مَا ذَكَرْتُمُوهُ مِنْ أَنَّ {بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ} [الفاتحة: 1] مِنْهَا , فَقَدْ رُوِيَ هَذَا عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا , كَمَا ذَكَرْتُمْ , وَقَدْ رُوِيَ عَنْ غَيْرِهِ مِمَّنْ رَوَيْنَا عَنْهُ , فِي هَذَا الْبَابِ , مَا يَدُلُّ عَلَى خِلَافِ ذَلِكَ أَنَّهُ لَمْ يَجْهَرْ بِهَا وَلَمْ يَخْتَلِفُوا جَمِيعًا أَنَّ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ سَبْعُ آيَاتٍ. فَمَنْ جَعَلَ {بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ} [الفاتحة: 1] مِنْهَا عَدَّهَا آيَةً , وَمَنْ لَمْ يَجْعَلْهَا مِنْهَا , عَدَّ {أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ} [الفاتحة: 7] آيَةً. فَلَمَّا اخْتَلَفُوا فِي ذَلِكَ , وَجَبَ النَّظَرُ وَسَنُبَيِّنُ ذَلِكَ فِي مَوْضِعِهِ إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى. وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
