শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ৮৬৯
ফজরের আযান কখন দেয়া হবে, ফজর উদয়ের পরে না পূর্বে
৮৬৯। ইব্ন মারযূক (রাহঃ)..... আসওয়াদ (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি বললাম, হে উম্মুল মু‘মিনীন! আপনি বিতর এর সালাত কখন আদায় করেন? তিনি বললেন, যখন মআযযিন আযান দেয়।
বিশ্লেষণ
আসওয়াদ (রাহঃ) বললেন, মআযযিনগণ সুবহ হওয়ার পরে আযান দিতেন এবং তাঁদের এই আযান মসজিদে নববীতে হত। কারণ আয়িশা (রাহঃ) থেকে আসওয়াদ (রাহঃ) এর এই শ্রবণ মদীনায় হয়েছে আর উম্মুল মু‘মিনীন (রাযিঃ) নবী (ﷺ) থেকে সেই বিষয়টি শ্রবণ করেছেন যা আমরা তাঁর থেকে রিওয়ায়াত করেছি। সুতরাং সাহাবীগণ কর্তৃক ফজরের পূর্বে আযান পরিত্যাগ করার বিরুদ্দে কোন প্রতিবাদ হয়নি এবং অন্যরাও এর প্রতিবাদ করেন নি। এতে প্রতীয়মান হয় যে, বিলাল (রাযিঃ) এর উক্ত আযান দ্বারা উদ্দেশ্য ছিল ফজরের আযান। আর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর উক্তি “পনাহার কর যতহ্মণ না ইব্ন উম্মু মাকতূম (রাযিঃ) আযান দেয়” তা ছিল সঠিক ফজর উদয় হওয়ার ভিত্তিতে। যখন এই সমস্ত রিওয়ায়াত সেইভাবে বর্ণিত আছে যেভাবে আমরা উল্লেখ করেছি। হাফসা (রাযিঃ)-এর হাদীসে রয়েছে রয়েছে যে, তাঁরা ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত আযান দিতেন না। যদি বিষয়টি এরূপই হয়ে থাকে তাহলে সেই মত বাতিল হয়ে গেল, যা ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) গ্রহণ করেছেন। আর যদি বিষয়টি অন্যরূপ হয় এবং তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ফজরের পূর্বে আযান দিয়ে থাকেন, তাহলে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসে যেমনটি হাদীসে যেমনটি স্পষ্টরূপে বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে যে, উক্ত আযান সালাতের জন্য ছিল না। ইব্ন উম্মু মাকতূম (রাযিঃ)-এর ফজর উদয় হওয়ার পর আযান দেয়াতে প্রতীয়মান হয় যে, তা সেই সালাতের আযানের ওয়াক্ত ছিল। যদি তা আযানের ওয়াক্ত না হত তাহলে সেই ওয়াক্তে আযান জায়েয হতনা। যখন তা জায়েয হয়েছে তখন সাব্যস্ত হয়েছে যে, সেই ওয়াক্ত আযানের ওয়াক্ত ছিল। আর এর পূর্বে বিলাল (রাযিঃ)-এর আযানকে অগ্রবর্তী করাতে সেই সম্ভাবনা রয়েছে, যা আমরা উল্লেখ করেছি (অনুপস্থিতের উপস্থিতি ও নিদ্রিত ব্যক্তির জাগরণ)।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিক দলীল ও বিশ্লেষণ
তারপর আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়টিকে যুক্তির নিরিখেও বিবেচনা করেছি, যেন উভয় অভিমতের বিশুদ্ধতমটি নিরূপণ করতে সহ্মম হই। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ফজর ব্যতীত আপরাপর সালাতের জন্য সময় আসার পরেই আযান দেয়া হয়। তারা ফজরের মধ্যে মতভেদ করেছেন। একদল আলিম বলেন, এর জন্য ওয়াক্ত আসার পূর্বে আযান দেয়া হবে। অপরদল আলিম বলেন, বরং এর আযান ওয়াক্ত আসার পরে দেয়া হবে। সুতরাং আমরা যা বর্ণনা করেছি এর ভিত্তিতে যুক্তির দাবি হচ্ছে, এর জন্য আযানও অনুরূপ হবে যেমনিভাবে অপরাপর সালাতের জন্য হয়। যখন তা অপরাপর সালাতের ওয়াক্ত আসার পরে হয় তাহলে ফজরের জন্য অনুরূপভাবে হবে। এটাই হচ্ছে যুক্তি এবং ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) ও সুফইয়ান ছাওরী (রাহঃ)-এর অভিমত।
বিশ্লেষণ
আসওয়াদ (রাহঃ) বললেন, মআযযিনগণ সুবহ হওয়ার পরে আযান দিতেন এবং তাঁদের এই আযান মসজিদে নববীতে হত। কারণ আয়িশা (রাহঃ) থেকে আসওয়াদ (রাহঃ) এর এই শ্রবণ মদীনায় হয়েছে আর উম্মুল মু‘মিনীন (রাযিঃ) নবী (ﷺ) থেকে সেই বিষয়টি শ্রবণ করেছেন যা আমরা তাঁর থেকে রিওয়ায়াত করেছি। সুতরাং সাহাবীগণ কর্তৃক ফজরের পূর্বে আযান পরিত্যাগ করার বিরুদ্দে কোন প্রতিবাদ হয়নি এবং অন্যরাও এর প্রতিবাদ করেন নি। এতে প্রতীয়মান হয় যে, বিলাল (রাযিঃ) এর উক্ত আযান দ্বারা উদ্দেশ্য ছিল ফজরের আযান। আর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর উক্তি “পনাহার কর যতহ্মণ না ইব্ন উম্মু মাকতূম (রাযিঃ) আযান দেয়” তা ছিল সঠিক ফজর উদয় হওয়ার ভিত্তিতে। যখন এই সমস্ত রিওয়ায়াত সেইভাবে বর্ণিত আছে যেভাবে আমরা উল্লেখ করেছি। হাফসা (রাযিঃ)-এর হাদীসে রয়েছে রয়েছে যে, তাঁরা ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত আযান দিতেন না। যদি বিষয়টি এরূপই হয়ে থাকে তাহলে সেই মত বাতিল হয়ে গেল, যা ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) গ্রহণ করেছেন। আর যদি বিষয়টি অন্যরূপ হয় এবং তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ফজরের পূর্বে আযান দিয়ে থাকেন, তাহলে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসে যেমনটি হাদীসে যেমনটি স্পষ্টরূপে বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে যে, উক্ত আযান সালাতের জন্য ছিল না। ইব্ন উম্মু মাকতূম (রাযিঃ)-এর ফজর উদয় হওয়ার পর আযান দেয়াতে প্রতীয়মান হয় যে, তা সেই সালাতের আযানের ওয়াক্ত ছিল। যদি তা আযানের ওয়াক্ত না হত তাহলে সেই ওয়াক্তে আযান জায়েয হতনা। যখন তা জায়েয হয়েছে তখন সাব্যস্ত হয়েছে যে, সেই ওয়াক্ত আযানের ওয়াক্ত ছিল। আর এর পূর্বে বিলাল (রাযিঃ)-এর আযানকে অগ্রবর্তী করাতে সেই সম্ভাবনা রয়েছে, যা আমরা উল্লেখ করেছি (অনুপস্থিতের উপস্থিতি ও নিদ্রিত ব্যক্তির জাগরণ)।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিক দলীল ও বিশ্লেষণ
তারপর আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়টিকে যুক্তির নিরিখেও বিবেচনা করেছি, যেন উভয় অভিমতের বিশুদ্ধতমটি নিরূপণ করতে সহ্মম হই। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ফজর ব্যতীত আপরাপর সালাতের জন্য সময় আসার পরেই আযান দেয়া হয়। তারা ফজরের মধ্যে মতভেদ করেছেন। একদল আলিম বলেন, এর জন্য ওয়াক্ত আসার পূর্বে আযান দেয়া হবে। অপরদল আলিম বলেন, বরং এর আযান ওয়াক্ত আসার পরে দেয়া হবে। সুতরাং আমরা যা বর্ণনা করেছি এর ভিত্তিতে যুক্তির দাবি হচ্ছে, এর জন্য আযানও অনুরূপ হবে যেমনিভাবে অপরাপর সালাতের জন্য হয়। যখন তা অপরাপর সালাতের ওয়াক্ত আসার পরে হয় তাহলে ফজরের জন্য অনুরূপভাবে হবে। এটাই হচ্ছে যুক্তি এবং ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) ও সুফইয়ান ছাওরী (রাহঃ)-এর অভিমত।
869 - مَا حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ , قَالَ: ثنا وَهْبٌ , عَنْ شُعْبَةَ , عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ , عَنِ الْأَسْوَدِ قَالَ: قُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ , مَتَى تُوتِرِينَ؟ قَالَتْ «إِذَا أَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ» قَالَ الْأَسْوَدُ: وَإِنَّمَا كَانُوا يُؤَذِّنُونَ بَعْدَ الصُّبْحِ وَهَذَا تَأْذِينُهُمْ فِي مَسْجِدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَنَّ الْأَسْوَدَ إِنَّمَا كَانَ سَمَاعُهُ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا بِالْمَدِينَةِ , وَهِيَ قَدْ سَمِعَتْ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا رَوَيْنَا عَنْهَا ذَلِكَ , فَلَمْ يُنْكِرْ عَلَيْهِمْ تَرْكَهُمُ التَّأْذِينَ قَبْلَ الْفَجْرِ , وَلَا أَنْكَرَ ذَلِكَ غَيْرُهَا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَدَلَّ ذَلِكَ أَنَّ مُرَادَ بِلَالٍ بِأَذَانِهِ ذَلِكَ , الْفَجْرُ وَأَنَّ قَوْلَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُنَادِيَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ» إِنَّمَا هُوَ لِإِصَابَةِ طُلُوعِ الْفَجْرِ. فَلَمَّا رَوَيْتُ هَذِهِ الْآثَارَ عَلَى مَا ذَكَرْنَا , وَكَانَ فِي حَدِيثِ حَفْصَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا , أَنَّهُمْ كَانُوا لَا يُؤَذِّنُونَ حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ , فَإِنْ كَانَ ذَلِكَ كَذَلِكَ , فَقَدْ بَطَلَ الْمَعْنَى الَّذِي ذَهَبَ إِلَيْهِ , أَبُو يُوسُفَ. وَإِنْ كَانَ الْمَعْنَى عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ , وَكَانُوا يُؤَذِّنُونَ قَبْلَ الْفَجْرِ عَلَى الْقَصْدِ مِنْهُمْ لِذَلِكَ فَإِنَّ حَدِيثَ ابْنِ مَسْعُودٍ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ بَيَّنَ أَنَّ ذَلِكَ التَّأْذِينَ كَانَ لِغَيْرِ الصَّلَاةِ. وَفِي تَأْذِينِ ابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ دَلِيلُ أَنَّ ذَلِكَ مَوْضِعُ أَذَانٍ لِتِلْكَ الصَّلَاةِ. وَلَوْ لَمْ يَكُنْ ذَلِكَ مَوْضِعَ أَذَانٍ لَهَا لَمَا أُبِيحَ الْأَذَانُ فِيهَا. فَلَمَّا أُبِيحَ ذَلِكَ ثَبَتَ أَنَّ ذَلِكَ الْوَقْتَ , وَقْتٌ لِلْأَذَانِ , وَاحْتَمَلَ تَقْدِيمَهُمْ أَذَانَ بِلَالٍ قَبْلَ ذَلِكَ مَا ذَكَرْنَا. ثُمَّ اعْتَبَرْنَا ذَلِكَ أَيْضًا مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ لِنَسْتَخْرِجَ مِنَ الْقَوْلَيْنِ , قَوْلًا صَحِيحًا فَرَأَيْنَا سَائِرَ الصَّلَوَاتِ , غَيْرَ الْفَجْرِ لَا يُؤَذَّنُ لَهَا إِلَّا بَعْدَ دُخُولِ أَوْقَاتِهَا. وَاخْتَلَفُوا فِي الْفَجْرِ , فَقَالَ قَوْمٌ: التَّأْذِينُ لَهَا قَبْلَ دُخُولِ وَقْتِهَا. وَقَالَ آخَرُونَ: بَلْ هُوَ بَعْدَ دُخُولِ وَقْتِهَا. فَالنَّظَرُ عَلَى مَا وَصَفْنَا أَنْ يَكُونَ الْأَذَانُ لَهَا كَالْأَذَانِ لِغَيْرِهَا مِنَ الصَّلَوَاتِ , فَلَمَّا كَانَ ذَلِكَ بَعْدَ دُخُولِ أَوْقَاتِهَا , كَانَ أَيْضًا فِي الْفَجْرِ كَذَلِكَ. فَهَذَا هُوَ النَّظَرُ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , وَمُحَمَّدٍ وَسُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ
