শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৬৬৮
তায়াম্মুমের পদ্ধতি কিরূপ
৬৬৮। আহমদ ইবন আব্দির রহমান (রাহঃ) আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রলেছেন, একবার আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর সঙ্গে এক যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করছিলাম। যখন আমরা মদীনার নিকটবর্তী 'মু'আররাস' নামক স্থানে পৌঁছলাম তখন রাতে আমার ঘুম এসে যায়। আমার গলায় একটি হার ছিল, যাকে 'সাত' বলা হত, যা নাভি পর্যন্ত পৌছাত। আমি ঘুমাচ্ছিলাম এবং তা আমার গলা থেকে পড়ে যায়। যখন আমি ফজরের সালাতের জন্য রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর সঙ্গে অবতরণ করি তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার হার গলা থেকে পড়ে গিয়েছে। তিনি বললেন, হে লোক সকল, তোমাদের মাতার হার হারিয়ে গেছে, তা তালাশ কর। লোকেরা তা তালাশ করল, অথচ তাদের সঙ্গে পানি ছিল না। তারা হার তালাশে ব্যস্ত হয়ে পড়ল অবশেষে সালাতের ওয়াক্ত হয়ে গেল। তারা হার তো পেলেন কিন্তু পানির সন্ধান পেলেন না। তাদের কেউ কবজি পর্যন্ত তায়াম্মুম করেন কেউ কাঁধ পর্যন্ত তায়াম্মুম করেন এবং কেউ তো পূর্ণ শরীরের উপর তায়াম্মুম করেন। যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর নিকট বিষয়টির সংবাদ পৌঁছে তখন তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল হয়।

বিশ্লেষণ
বস্তুত এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তায়াম্মুমের আয়াতের অবতরণ সেই তায়াম্মুমের পরে হয়েছে, যাতে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কাঁধ পর্যন্ত তায়াম্মুম করেছেন। এতে আমরা বুঝতে পেরেছি যে,
তাঁরা সেই সময় তায়াম্মুম করেছেন, যখন তাঁদের নিকট মূল তায়াম্মুম পূর্ব থেকে সাব্যস্ত ছিল। আর আয়েশা (রাযিঃ)-এর উক্তি যে আল্লাহ্ তা'আলা তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করেছেন, এর দ্বারা জানা যাচ্ছে, যা কিছু তাদের আমলের পরে নাযিল হয়েছে তা ছিল তায়াম্মুমের পদ্ধতি। আমাদের মতে আম্মার (রাযিঃ)-এর হাদীসের মর্ম এটাই।
এ বিষয়ে তাঁরা যে আমল করেছেন এ আয়াত তা রহিত করে দেয়। এর স্বপক্ষে প্রমাণ বহনকারী নিম্নোক্ত রিওয়ায়াতটিও অন্যতম যে, আম্মার ইবন ইয়াসির (রাযিঃ)-ই তা নবী থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। আর অন্যরা তাঁর সূত্রে সেই তায়াম্মুমের ব্যাপারে এর পরবর্তী আমলও রিওয়ায়াত করেছেন, যা এর পরিপন্থী। তা থেকে কিছু রিওয়ায়াত নিম্নরূপঃ
668 - حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ثنا عَمِّي عَبْدُ اللهِ بْنُ وَهْبٍ , عَنِ ابْنِ لَهِيعَةَ , عَنْ أَبِي الْأَسْوَدِ حَدَّثَهُ أَنَّهُ سَمِعَ عُرْوَةَ يُخْبِرُهُ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ: أَقْبَلْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ غَزْوَةٍ لَهُ حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالْمُعَرَّسِ , قَرِيبًا مِنَ الْمَدِينَةِ , نَعَسْتُ مِنَ اللَّيْلِ , وَكَانَتْ عَلَيَّ قِلَادَةٌ تُدْعَى السِّمْطَ , تَبْلُغُ السُّرَّةَ , فَجَعَلَتْ أَنْعَسُ , فَخَرَجَتْ مِنْ عُنُقِي. فَلَمَّا نَزَلْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِصَلَاةِ الصُّبْحِ , قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ خَرَّتْ قِلَادَتِي مِنْ عُنُقِي. فَقَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ , إِنَّ أُمَّكُمْ قَدْ ضَلَّتْ قِلَادَتَهَا , فَابْتَغُوهَا» [ص:112] فَابْتَغَاهَا النَّاسُ , وَلَمْ يَكُنْ مَعَهُمْ مَاءٌ , فَاشْتُغِلُوا بِابْتِغَائِهَا إِلَى أَنْ حَضَرَتْهُمُ الصَّلَاةُ , وَوَجَدُوا الْقِلَادَةَ , وَلَمْ يَقْدِرُوا عَلَى مَاءٍ. فَمِنْهُمْ مَنْ تَيَمَّمَ إِلَى الْكَفِّ , وَمِنْهُمْ مَنْ تَيَمَّمَ إِلَى الْمَنْكِبِ , وَبَعْضُهُمْ عَلَى جَسَدِهِ. فَبَلَغَ ذَلِكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَأُنْزِلَتْ آيَةُ التَّيَمُّمِ فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ نُزُولَ آيَةِ التَّيَمُّمِ , كَانَ بَعْدَمَا تَيَمَّمُوا هَذَا التَّيَمُّمَ الْمُخْتَلَفَ , الَّذِي بَعْضُهُ إِلَى الْمَنَاكِبِ فَعَلِمْنَا تَيَمُّمَهُمْ , أَنَّهُمْ لَمْ يَفْعَلُوا ذَلِكَ إِلَّا وَقَدْ تَقَدَّمَ عِنْدَهُمْ أَصْلُ التَّيَمُّمِ , وَعَلِمْنَا بِقَوْلِهَا: فَأَنْزَلَ اللهُ آيَةَ التَّيَمُّمِ أَنَّ الَّذِي نَزَلَ بَعْدَ فِعْلِهِمْ هُوَ صِفَةُ التَّيَمُّمِ. فَهَذَا وَجْهُ حَدِيثِ عَمَّارٍ عِنْدَنَا. وَمِمَّا يَدُلُّ أَيْضًا , عَلَى أَنَّ هَذِهِ الْآيَةَ تَنْفِي مَا فَعَلُوا مِنْ ذَلِكَ , أَنَّ عَمَّارَ بْنَ يَاسِرٍ هُوَ الَّذِي رَوَى ذَلِكَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ رَوَى غَيْرُهُ عَنْهُ فِي التَّيَمُّمِ الَّذِي عَمِلَهُ بَعْدَ ذَلِكَ خِلَافَ ذَلِكَ فَمِنْهُ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৬৬৮ | মুসলিম বাংলা