শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৬০৫
দুগ্ধ পোষ্য ছেলে এবং মেয়ের পেশাবের বিধান
৬০৫. ফাহাদ (রাহঃ).... উম্মুল ফযল (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, যখন হুসাইন (রাযিঃ) জন্মগ্রহণ করেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাঁকে আমাকে দান করুন, যেন আমি তার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করতে পারি অথবা বলেছেন, আমি তাকে আমার দুগ্ধ পান করাতে পারি। তিনি অনুমতি দিলেন। তারপর আমি তাঁকে (একদিন) নিয়ে এলাম এবং তিনি তাকে তাঁর বুকে নিলেন, শিশুটি তখন পেশাব করেছে, যা তাঁর চাদরে লেগে যায়। আমি বললাম! হে আল্লাহর রাসূল! আপনার চাদরটি আমাকে দিন, আমি তা ধৌত করে দিব। তিনি বললেনঃ দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাবে পানি ঢেলে দিতে হবে এবং দুগ্ধপোষ্য মেয়ের পেশাব ধৌত করতে হবে।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর ব্যাখ্যা
ইমাম আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেছেনঃ উন্মুল ফযল (রাযিঃ)-এর এই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাবে পানি ঢেলে দিতে হবে। পক্ষান্তরে তারই হাদীসে যা আমরা অনুচ্ছেদের শুরুভাগে উল্লেখ করেছি- ব্যক্ত হয়েছে যে, ছেলের পেশাবে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। যখন বিষয়টি এরূপ, যা আমরা উল্লেখ করেছি, তাহলে সাব্যস্ত হল যে, প্রথমোক্ত হাদীসে যে ছিটানোর কথা উল্লেখ রয়েছে তাতে পানি ঢেলে দেয়াই বুঝানো হয়েছে, যা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এভাবে উভয় হাদীসে বৈপরিত্য থাকে না। আর আবু লায়লা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসও এর বিরোধী নয়। তিনি নবী তাকে দেখছেন যে, তিনি পেশাবে পানি ঢেলেছেন। সুতরাং এই সমস্ত হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হল যে, দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাবকেও ধৌত করার বিধান। তবে সেই ধৌত করার মধ্যে শুধু পানি প্রবাহিত করে দেয়াই যথেষ্ট এবং দুগ্ধপোষ্য মেয়ের পেশাবকেও ধৌত করার বিধান। তিনি উভয়ের মাঝে (বিধান বর্ণনা করতে গিয়ে) শাব্দিক পার্থক্য করেছেন, যদিও উভয়টি অর্থগতভাবে অভিন্ন। উক্ত পার্থক্যের কারণ পেশাব বের হওয়ার স্থান সংকীর্ণ এবং প্রশস্ত হওয়া, যা আমরা উল্লেখ করেছি। বস্তুত এটাই হচ্ছে হাদীস সমূহ বর্ণনার নিরিখে এই অনুচ্ছেদের বিশ্লেষণ।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ) এর যুক্তি-ভিত্তিক প্রমাণ
অতএব যুক্তির নিরিখে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বর্ণনা নিম্নরূপঃ আমরা লক্ষ্য করছি যে, দুগ্ধপোষ্য ছেলে এবং মেয়ে আহার শুরু করার পর তাদের উভয়ের পেশাবের বিধান অভিন্ন। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, উভয়ে আহার শুরু করার পূর্বে (দুগ্ধপোষ্য অবস্থায়) ও উভয়টি অভিন্ন হবে। যেহেতু দুগ্ধপোষ্য মেয়ের পেশাব নাপাক, তাই দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাবও নাপাক। আর এটাই ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর ব্যাখ্যা
ইমাম আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেছেনঃ উন্মুল ফযল (রাযিঃ)-এর এই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাবে পানি ঢেলে দিতে হবে। পক্ষান্তরে তারই হাদীসে যা আমরা অনুচ্ছেদের শুরুভাগে উল্লেখ করেছি- ব্যক্ত হয়েছে যে, ছেলের পেশাবে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। যখন বিষয়টি এরূপ, যা আমরা উল্লেখ করেছি, তাহলে সাব্যস্ত হল যে, প্রথমোক্ত হাদীসে যে ছিটানোর কথা উল্লেখ রয়েছে তাতে পানি ঢেলে দেয়াই বুঝানো হয়েছে, যা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এভাবে উভয় হাদীসে বৈপরিত্য থাকে না। আর আবু লায়লা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসও এর বিরোধী নয়। তিনি নবী তাকে দেখছেন যে, তিনি পেশাবে পানি ঢেলেছেন। সুতরাং এই সমস্ত হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হল যে, দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাবকেও ধৌত করার বিধান। তবে সেই ধৌত করার মধ্যে শুধু পানি প্রবাহিত করে দেয়াই যথেষ্ট এবং দুগ্ধপোষ্য মেয়ের পেশাবকেও ধৌত করার বিধান। তিনি উভয়ের মাঝে (বিধান বর্ণনা করতে গিয়ে) শাব্দিক পার্থক্য করেছেন, যদিও উভয়টি অর্থগতভাবে অভিন্ন। উক্ত পার্থক্যের কারণ পেশাব বের হওয়ার স্থান সংকীর্ণ এবং প্রশস্ত হওয়া, যা আমরা উল্লেখ করেছি। বস্তুত এটাই হচ্ছে হাদীস সমূহ বর্ণনার নিরিখে এই অনুচ্ছেদের বিশ্লেষণ।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ) এর যুক্তি-ভিত্তিক প্রমাণ
অতএব যুক্তির নিরিখে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বর্ণনা নিম্নরূপঃ আমরা লক্ষ্য করছি যে, দুগ্ধপোষ্য ছেলে এবং মেয়ে আহার শুরু করার পর তাদের উভয়ের পেশাবের বিধান অভিন্ন। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, উভয়ে আহার শুরু করার পূর্বে (দুগ্ধপোষ্য অবস্থায়) ও উভয়টি অভিন্ন হবে। যেহেতু দুগ্ধপোষ্য মেয়ের পেশাব নাপাক, তাই দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাবও নাপাক। আর এটাই ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
605 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ، قَالَ: ثنا أَبُو غَسَّانَ، قَالَ: ثنا شَرِيكٌ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ قَابُوسٍ، عَنْ أُمِّ الْفَضْلِ، قَالَتْ: " لَمَّا وُلِدَ الْحُسَيْنُ , قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ أَعْطِنِيهِ , أَوِ ادْفَعْهُ إِلَيَّ فَلِأَكْفُلْهُ أَوْ أُرْضِعْهُ بِلَبَنِي فَفَعَلَ. فَأَتَيْتُهُ بِهِ فَوَضَعَهُ عَلَى صَدْرِهِ فَبَالَ عَلَيْهِ فَأَصَابَ إِزَارَهُ , فَقُلْتُ لَهُ: يَا رَسُولَ اللهِ , أَعْطِنِي إِزَارَكَ أَغْسِلْهُ. قَالَ: «إِنَّمَا يُصَبُّ عَلَى بَوْلِ الْغُلَامِ , وَيُغْسَلُ بَوْلُ الْجَارِيَةِ» قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَهَذِهِ أُمُّ الْفَضْلِ فِي حَدِيثِهَا هَذَا , إِنَّمَا يُصَبُّ عَلَى بَوْلِ الْغُلَامِ. وَفِي حَدِيثِهَا الَّذِي ذَكَرْنَاهُ فِي الْفَصْلِ الْأَوَّلِ , إِنَّمَا يُنْضَحُ مِنْ بَوْلِ الْغُلَامِ. فَلَمَّا كَانَ مَا ذَكَرْنَاهُ كَذَلِكَ , ثَبَتَ أَنَّ النَّضْحَ الَّذِي أَرَادَ بِهِ فِي الْحَدِيثِ الْأَوَّلِ , هُوَ الصَّبُّ الْمَذْكُورُ هَاهُنَا , حَتَّى لَا يَتَضَادَّ الْأَثَرَانِ. وَهَذَا أَبُو لَيْلَى فَلَمْ يَخْتَلِفْ عَنْهُ أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَبَّ عَلَى الْبَوْلِ الْمَاءَ. فَثَبَتَ بِهَذِهِ الْآثَارِ أَنَّ حُكْمَ بَوْلِ الْغُلَامِ هُوَ الْغَسْلُ , إِلَّا أَنَّ ذَلِكَ الْغَسْلَ , يُجْزِئُ مِنْهُ الصَّبُّ , وَأَنَّ حُكْمَ بَوْلِ الْجَارِيَةِ هُوَ الْغَسْلُ أَيْضًا. وَفَرَّقَ فِي اللَّفْظِ بَيْنَهُمَا وَإِنْ كَانَا مُسْتَوِيَيْنِ فِي الْمَعْنَى , لِلْعِلَّةِ الَّتِي ذَكَرْنَا , مِنْ ضِيقِ الْمَخْرَجِ وَسَعَتِهِ. فَهَذَا حُكْمُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ الْآثَارِ , وَأَمَّا وَجْهُهُ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا رَأَيْنَا الْغُلَامَ وَالْجَارِيَةَ , حُكْمُ أَبْوَالِهِمَا سَوَاءٌ , بَعْدَمَا يَأْكُلَانِ الطَّعَامَ. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ أَيْضًا سَوَاءً قَبْلَ أَنْ يَأْكُلَا الطَّعَامَ , فَإِذَا كَانَ بَوْلُ الْجَارِيَةِ نَجِسًا فَبَوْلُ الْغُلَامِ أَيْضًا نَجِسٌ. وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ , رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى


বর্ণনাকারী: