শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৪১
আন্তর্জাতিক নং: ৪৪২
অনুচ্ছেদঃ লজ্জাস্থান স্পর্শের কারণে উযূ ওয়াজিব হয় কি না?
৪৪১. আলী ইব্ন মা'বাদ (র.) ..... যায়দ ইব্ন খালিদ (র.) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলতে শুনেছিঃ “যে ব্যক্তি নিজ লজ্জাস্থান স্পর্শ করবে, তার জন্য উযূ করা আবশ্যক।"
৪৪২. ইব্ন আবী দাউদ (র.) ..... ইব্ন ইসহাক (র.) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। উত্তরে তাকে বলা হবে তুমি তো মুহাম্মাদ ইব্ন ইসহাক (র.)-কে কোন ব্যাপারেই প্রমাণ সাব্যস্ত কর না। না সেই সময়, যখন কেউ তাঁর সঙ্গে মতবিরোধ করে, যেমনটি এই হাদীসে ঘটেছে এবং না সেই সময়, যখন তিনি একাকী বর্ণনা করেন। উপরন্তু এই হাদীসটি 'মুনকার' এবং সম্ভাবনা আছে যে, এটা ভুল। যেহেতু যখন মারওয়ান উরওয়া (রাহঃ) কে লজ্জাস্থান স্পর্শ করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছেন তখন তিনি নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করে উত্তর দিয়েছেন যে, এতে উযূ (আবশ্যিক) নয়। যখন মারওয়ান তাঁকে বুসরা সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করলেন তখন তাকে উরওয়া (র.) বললেনঃ আমি এই হাদীসটি শুনিনি। আর এটা যায়দ ইব্ন খালিদের ইন্তিকালের অনেক দিন পরের ঘটনা। যদি যায়দ ইব্ন খালিদ (র.) নবী (ﷺ) থেকে এই হাদীসটি উরওয়া (র.)-এর নিকট বর্ণনা করতেন তাহলে তিনি (উরওয়া) বুসরা কর্তৃক বর্ণিত হাদীসকে অস্বীকার করতেন না।
৪৪২. ইব্ন আবী দাউদ (র.) ..... ইব্ন ইসহাক (র.) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। উত্তরে তাকে বলা হবে তুমি তো মুহাম্মাদ ইব্ন ইসহাক (র.)-কে কোন ব্যাপারেই প্রমাণ সাব্যস্ত কর না। না সেই সময়, যখন কেউ তাঁর সঙ্গে মতবিরোধ করে, যেমনটি এই হাদীসে ঘটেছে এবং না সেই সময়, যখন তিনি একাকী বর্ণনা করেন। উপরন্তু এই হাদীসটি 'মুনকার' এবং সম্ভাবনা আছে যে, এটা ভুল। যেহেতু যখন মারওয়ান উরওয়া (রাহঃ) কে লজ্জাস্থান স্পর্শ করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছেন তখন তিনি নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করে উত্তর দিয়েছেন যে, এতে উযূ (আবশ্যিক) নয়। যখন মারওয়ান তাঁকে বুসরা সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করলেন তখন তাকে উরওয়া (র.) বললেনঃ আমি এই হাদীসটি শুনিনি। আর এটা যায়দ ইব্ন খালিদের ইন্তিকালের অনেক দিন পরের ঘটনা। যদি যায়দ ইব্ন খালিদ (র.) নবী (ﷺ) থেকে এই হাদীসটি উরওয়া (র.)-এর নিকট বর্ণনা করতেন তাহলে তিনি (উরওয়া) বুসরা কর্তৃক বর্ণিত হাদীসকে অস্বীকার করতেন না।
باب مس الفرج هل يجب فيه الوضوء أم لا؟
441 - بِمَا حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ قَالَ: ثنا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ , قَالَ: ثنا أُبَيٌّ عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ قَالَ: حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ مُسْلِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ شِهَابٍ , عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ , عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ مَسَّ فَرْجَهُ فَلْيَتَوَضَّأْ»
442 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا عَيَّاشٌ الرَّقَّامُ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْأَعْلَى، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ قِيلَ لَهُ أَنْتَ لَا تَجْعَلُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْحَاقَ حُجَّةً فِي شَيْءٍ , إِذَا خَالَفَهُ فِيهِ مِثْلُ مَنْ خَالَفَهُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ , وَلَا إِذَا انْفَرَدَ. وَنَفْسُ هَذَا الْحَدِيثِ مُنْكَرٌ وَأَخْلِقْ بِهِ أَنْ يَكُونَ غَلَطًا , لِأَنَّ عُرْوَةَ حِينَ سَأَلَهُ مَرْوَانُ , عَنْ مَسِّ الْفَرْجِ , فَأَجَابَهُ مِنْ رَأْيِهِ أَنْ لَا وُضُوءَ فِيهِ. فَلَمَّا قَالَ لَهُ مَرْوَانُ , عَنْ بُسْرَةَ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا قَالَ: , قَالَ لَهُ عُرْوَةُ: مَا سَمِعْتُ بِهِ وَهَذَا بَعْدَ مَوْتِ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ بِكَمْ مَا شَاءَ اللهُ فَكَيْفَ يَجُوزُ أَنْ يُنْكِرَ عُرْوَةُ عَلَى بُسْرَةَ , مَا قَدْ حَدَّثَهُ إِيَّاهُ , زَيْدُ بْنُ خَالِدٍ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِنِ احْتَجَّ فِي ذَلِكَ
442 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا عَيَّاشٌ الرَّقَّامُ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْأَعْلَى، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ قِيلَ لَهُ أَنْتَ لَا تَجْعَلُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْحَاقَ حُجَّةً فِي شَيْءٍ , إِذَا خَالَفَهُ فِيهِ مِثْلُ مَنْ خَالَفَهُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ , وَلَا إِذَا انْفَرَدَ. وَنَفْسُ هَذَا الْحَدِيثِ مُنْكَرٌ وَأَخْلِقْ بِهِ أَنْ يَكُونَ غَلَطًا , لِأَنَّ عُرْوَةَ حِينَ سَأَلَهُ مَرْوَانُ , عَنْ مَسِّ الْفَرْجِ , فَأَجَابَهُ مِنْ رَأْيِهِ أَنْ لَا وُضُوءَ فِيهِ. فَلَمَّا قَالَ لَهُ مَرْوَانُ , عَنْ بُسْرَةَ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا قَالَ: , قَالَ لَهُ عُرْوَةُ: مَا سَمِعْتُ بِهِ وَهَذَا بَعْدَ مَوْتِ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ بِكَمْ مَا شَاءَ اللهُ فَكَيْفَ يَجُوزُ أَنْ يُنْكِرَ عُرْوَةُ عَلَى بُسْرَةَ , مَا قَدْ حَدَّثَهُ إِيَّاهُ , زَيْدُ بْنُ خَالِدٍ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِنِ احْتَجَّ فِي ذَلِكَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
পুরুষ তার নিজের লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে অযু ভঙ্গ হবে কি না সে বিষয়ে পরস্পর বিপরীত বক্তব্য সম্বলিত দু'টি হাদীস পাওয়া যায়। নিম্নে হাদীসগুলো পেশ করা হলোঃ ১. তলক ইবন আলী (রা) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস :
عَنْ طَلْقٍ بن عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ هَلْ هُوَ الَّا مُضغةٌ منْهُ أَوْ بَضْعَةٌ مِّنْهُ رواه الترمذي وقال حديث ملازم بن عمرو عن عبد الله بن بدر أصح وأحسن وهذا الحديث أحسن شئ روى في هذا الباب
প্রখ্যাত সাহাবী তলক ইবন আলী (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (সা) (এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে) ইরশাদ করেন, এটি তোমার শরীরের একটি অংশ বৈ আর কিছু নয়?"
ইমাম তিরমিযী এ হাদীসটি উল্লেখ করার পর বলেছেন, এ সম্পর্কিত সকল হাদীসের মাঝে এটিই সনদ হিসাবে সর্বাধিক সুন্দর। উপরোক্ত হাদীসটি অপরাপর হাদীস গ্রন্থে কিছুটা বিস্তৃতভাবে উল্লিখিত হয়েছেঃ
عن طلق بن عَلَى رَضى اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَجُلٌ مسسْتُ ذَكَري أَوْ قَالَ الرجلُ يَمَسَّ ذَكَرَهُ فِى الصَّلوة أعلَيْهِ وَصَوْهُ ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ لَا إِنَّمَا هُوَ بضعَةٌ مِّنْهُ . أخرجه الخمسة وصححه ابن حبان وقال ابن المديني هو أحسن من حديث بسرة رضى الله عنها
খ. তল্ক ইবন আলী (রা) বর্ণনা করেছেন। এক ব্যক্তি রাসুলূল্লাহ (সা)-কে জিজ্ঞাসা করল নামাযে রত থাকা অবস্থায় আমি লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে বা (বর্ণনাকারী সন্দেহ) কোন লোক তার লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে তাকে পুনরায় অযূ করতে হবে কি? রাসূলুল্লাহ (সা) তার জবাবে বললেন, না, সেটি তোমার শরীরের একটি অংশ বৈ আর কিছু নয়।
২. বুসরাহ বিনত সাফওয়ান (রা) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي عَنْ بُسْرَةَ بِنْتِ صَفْوَانَ رَضِى اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِي ﷺ قَالَ مَنْ مس ذكرهُ فَلَا يُصَلِّ حَتَّى يَوضا قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح
বুসরাহ বিনতে সাফওয়ান (রা) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তার নিজের লজ্জাস্থান স্পর্শ করে সে যেন অযূ করা ব্যতীত নামায না পড়ে।
সমপর্যায়ের দু'টি হাদীসে বৈপরিত্য পরিদৃষ্ট হলে তার সমাধানের দু'টি পদ্ধতি রয়েছে :
ক. এ পর্যায়ে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অধিকাংশ সাহাবী তলক (রা)-এর বর্ণনা অনুযায়ী আমল করেছেন । এমন কি ইমাম তাহাভী (র) তো এ পর্যন্ত দাবী করেছেন যে, এ ক্ষেত্রে অযূ ওয়াজিব হওয়ার রায় একমাত্র হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) প্রদান করেছেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ, আলী, সা'দ ইবন আবূ ওয়াক্কাস, আবূ মূসা আশ'আরী, আম্মার ইবন ইয়াসির, হুযায়ফাহ, আনাস ও ইমরান ইবন হুসাইন (রা) প্রমুখ বিশিষ্ট সাহাবী লজ্জাস্থান স্পর্শ করাকে অযূ ভঙ্গকারী বলে গণ্য করেন নি।
খ. কিয়াস দ্বারাও হানাফী মাযহাবের প্রাধান্য সম্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। এক্ষেত্রে একটি কিয়াস তো নবী করীম (সা) স্বয়ং করেছেন। তিনি বলেছেন, এটিকে তোমার শরীরের একটি অঙ্গ নয়? অর্থাৎ শরীরের অন্য যে কোন অঙ্গ স্পর্শ করলে যেমন অযূ ভঙ্গের কোন প্রশ্ন উদয় হয় না, তেমনি লজ্জাস্থান স্পর্শ করার কারণেও অযূ নষ্ট হবে না। উলামায়ে কিরাম এক্ষেত্রে আরো একাধিক কিয়াস করেছেন। তন্মধ্যে নিম্নোক্ত কিয়াসটি লক্ষণীয়, মলমূত্র নাপাক হওয়া সত্ত্বেও সেগুলো হাতে লাগলে অযূ নষ্ট হয় না। তাহলে নিজ লজ্জাস্থান, যা সাধারণত পাক পবিত্ৰই থাকে, তা স্পর্শ করলে অযূ নষ্ট হবে কেন?
হানাফী বিজ্ঞ উলামায়ে কিরাম বলেন, যদিও তল্ক ইবন আলী (রা)-এর হাদীসটি এভাবে বিভিন্নভাবে প্রাধান্য পাওয়ার উপযোগী, কিন্তু সতর্কতা হিসাবে পুনরায় অযু করে নেওয়াই উত্তম। বিশেষত এক্ষেত্রে অযূ করার দ্বারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কামভাব হ্রাস পাবে এবং এর ফলে নিজ নিজ লজ্জাস্থান স্পর্শ করার প্রবণতা কমে যাবে। হানাফীগণের পরবর্তী উলামায়ে কিরাম এভাবে আমল করা পছন্দ করেছেন।
عَنْ طَلْقٍ بن عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ هَلْ هُوَ الَّا مُضغةٌ منْهُ أَوْ بَضْعَةٌ مِّنْهُ رواه الترمذي وقال حديث ملازم بن عمرو عن عبد الله بن بدر أصح وأحسن وهذا الحديث أحسن شئ روى في هذا الباب
প্রখ্যাত সাহাবী তলক ইবন আলী (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (সা) (এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে) ইরশাদ করেন, এটি তোমার শরীরের একটি অংশ বৈ আর কিছু নয়?"
ইমাম তিরমিযী এ হাদীসটি উল্লেখ করার পর বলেছেন, এ সম্পর্কিত সকল হাদীসের মাঝে এটিই সনদ হিসাবে সর্বাধিক সুন্দর। উপরোক্ত হাদীসটি অপরাপর হাদীস গ্রন্থে কিছুটা বিস্তৃতভাবে উল্লিখিত হয়েছেঃ
عن طلق بن عَلَى رَضى اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَجُلٌ مسسْتُ ذَكَري أَوْ قَالَ الرجلُ يَمَسَّ ذَكَرَهُ فِى الصَّلوة أعلَيْهِ وَصَوْهُ ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ لَا إِنَّمَا هُوَ بضعَةٌ مِّنْهُ . أخرجه الخمسة وصححه ابن حبان وقال ابن المديني هو أحسن من حديث بسرة رضى الله عنها
খ. তল্ক ইবন আলী (রা) বর্ণনা করেছেন। এক ব্যক্তি রাসুলূল্লাহ (সা)-কে জিজ্ঞাসা করল নামাযে রত থাকা অবস্থায় আমি লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে বা (বর্ণনাকারী সন্দেহ) কোন লোক তার লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে তাকে পুনরায় অযূ করতে হবে কি? রাসূলুল্লাহ (সা) তার জবাবে বললেন, না, সেটি তোমার শরীরের একটি অংশ বৈ আর কিছু নয়।
২. বুসরাহ বিনত সাফওয়ান (রা) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস
عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي عَنْ بُسْرَةَ بِنْتِ صَفْوَانَ رَضِى اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِي ﷺ قَالَ مَنْ مس ذكرهُ فَلَا يُصَلِّ حَتَّى يَوضا قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح
বুসরাহ বিনতে সাফওয়ান (রা) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তার নিজের লজ্জাস্থান স্পর্শ করে সে যেন অযূ করা ব্যতীত নামায না পড়ে।
সমপর্যায়ের দু'টি হাদীসে বৈপরিত্য পরিদৃষ্ট হলে তার সমাধানের দু'টি পদ্ধতি রয়েছে :
ক. এ পর্যায়ে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অধিকাংশ সাহাবী তলক (রা)-এর বর্ণনা অনুযায়ী আমল করেছেন । এমন কি ইমাম তাহাভী (র) তো এ পর্যন্ত দাবী করেছেন যে, এ ক্ষেত্রে অযূ ওয়াজিব হওয়ার রায় একমাত্র হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) প্রদান করেছেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ, আলী, সা'দ ইবন আবূ ওয়াক্কাস, আবূ মূসা আশ'আরী, আম্মার ইবন ইয়াসির, হুযায়ফাহ, আনাস ও ইমরান ইবন হুসাইন (রা) প্রমুখ বিশিষ্ট সাহাবী লজ্জাস্থান স্পর্শ করাকে অযূ ভঙ্গকারী বলে গণ্য করেন নি।
খ. কিয়াস দ্বারাও হানাফী মাযহাবের প্রাধান্য সম্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। এক্ষেত্রে একটি কিয়াস তো নবী করীম (সা) স্বয়ং করেছেন। তিনি বলেছেন, এটিকে তোমার শরীরের একটি অঙ্গ নয়? অর্থাৎ শরীরের অন্য যে কোন অঙ্গ স্পর্শ করলে যেমন অযূ ভঙ্গের কোন প্রশ্ন উদয় হয় না, তেমনি লজ্জাস্থান স্পর্শ করার কারণেও অযূ নষ্ট হবে না। উলামায়ে কিরাম এক্ষেত্রে আরো একাধিক কিয়াস করেছেন। তন্মধ্যে নিম্নোক্ত কিয়াসটি লক্ষণীয়, মলমূত্র নাপাক হওয়া সত্ত্বেও সেগুলো হাতে লাগলে অযূ নষ্ট হয় না। তাহলে নিজ লজ্জাস্থান, যা সাধারণত পাক পবিত্ৰই থাকে, তা স্পর্শ করলে অযূ নষ্ট হবে কেন?
হানাফী বিজ্ঞ উলামায়ে কিরাম বলেন, যদিও তল্ক ইবন আলী (রা)-এর হাদীসটি এভাবে বিভিন্নভাবে প্রাধান্য পাওয়ার উপযোগী, কিন্তু সতর্কতা হিসাবে পুনরায় অযু করে নেওয়াই উত্তম। বিশেষত এক্ষেত্রে অযূ করার দ্বারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কামভাব হ্রাস পাবে এবং এর ফলে নিজ নিজ লজ্জাস্থান স্পর্শ করার প্রবণতা কমে যাবে। হানাফীগণের পরবর্তী উলামায়ে কিরাম এভাবে আমল করা পছন্দ করেছেন।
