শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৩৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৭
অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সহবাস করে; কিন্তু বীর্যপাত হয় না
৩৩৬-৩৩৭। ইব্‌ন আবী দাউদ (রাহঃ)..... উবাইদ ইব্‌ন রিফায়া (রাহঃ)-এর পিতা রিফায়া (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি একবার উমার ইব্‌ন খাত্তাব (রাযিঃ) এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় জনৈক ব্যক্তি এসে বলল- হে আমীরুল মুমিনীন! এই যায়দ ইব্‌ন ছাবিত (রাযিঃ) জানাবাতের গোসলের ব্যাপারে লোকদেরকে নিজের মনগড়া ফাতওয়া দিচ্ছেন। উমার (রাযিঃ) বললেন, তাড়াতাড়ি আমার কাছে নিয়ে এসো। যায়দ (রাযিঃ) এলে উমার (রাযিঃ) তাঁকে বললেন, আমার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, তুমি মসজিদে নববীতে বসে জানাবাতের গোসল সম্পর্কে লোকদেরকে নিজের মনগড়া ফাতওয়া দিচ্ছ? যায়দ (রাযিঃ) তাঁকে বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহ্‌র কসম! আমি মনগড়া ফাতওয়া দিচ্ছি না। বরং আমি আমার চাচাদের থেকে যা কিছু শুনেছি, তাই বলছি। তিনি বললেন, তোমার কোন্ চাচা? তিনি বললেন, উবাই ইব্‌ন কাব (রাযিঃ), আবু আয়্যূব (রাযিঃ) ও রিফায়া ইব্‌ন রাফি’ (রাযিঃ)। এরপর উমার (রাযিঃ) আমার (রিফায়ার) দিকে ফিরলেন এবং বললেন, এই যুবক কি বলছে? আমি বললাম, আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর যুগে এরূপ করতাম তারপর গোসল করতাম না। তিনি বললেন, তোমরা কি এ বিষয়ে নবী (ﷺ) কে কিছু জিজ্ঞেস করেছ? আমি বল্‌লাম ‘না’। তিনি বললেন, লোকদেরকে আমার নিকট ডেকে আন। লোকেরা ঐক্যমত পোষণ করলেন যে, একমাত্র বীর্যপাতের কারণে গোসল (ফরয) হবে। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন আলী (রাযিঃ) ও মু’আয ইব্‌ন জাবাল (রাযিঃ)। তাঁরা বললেন, মিলনকালে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের খাত্‌নার স্থানটুকু অতিক্রম করলেই গোসল ফরয হয়ে যাবে। তিনি বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আমি এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর আমল সম্পর্কে তাঁর সহধর্মিনীগণ অপক্ষা অন্য কাউকে অধিক জ্ঞাত মনে করি না। সুতরাং তিনি (উমার রা) হাফসা (রাযিঃ) এর নিকট লোক পাঠালেন। তিনি বললেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তারপর আয়েশা (রাযিঃ)-এর নিকট পাঠালে তিনি বললেন, মিলনকালে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের খাত্‌নার স্থানটুকু অতিক্রম করলেই গোসল ফরয হয়ে যাবে। উমার (রাযিঃ) রাগতস্বরে দৃঢ়ভাবে বললেনঃ আমি যদি কারো ব্যাপারে জানতে পারি যে, সে এরূপ করেছে তারপর গোসল করে নি তাহলে আমি তাকে অত্যন্ত কঠোর শাস্তি প্রদান করব।
باب الذي يجامع ولا ينزل
336 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ نُمَيْرٍ، قَالَ: ثنا ابْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، ح

337 - وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْأَعْلَى بْنُ عَبْدِ الْأَعْلَى، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ مَعْمَرِ بْنِ أَبِي حَبِيبَةَ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ رِفَاعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: إِنِّي لَجَالِسٌ عِنْدَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , إِذْ جَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ، هَذَا زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ يُفْتِي النَّاسَ فِي الْغُسْلِ مِنَ الْجَنَابَةِ بِرَأْيِهِ. فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: أَعْجِلْ عَلَيَّ بِهِ , فَجَاءَ زَيْدٌ. فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: قَدْ بَلَغَنِي مِنْ أَمْرِكَ أَنْ تُفْتِيَ النَّاسَ بِالْغُسْلِ مِنَ الْجَنَابَةِ بِرَأْيِكَ فِي مَسْجِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ لَهُ زَيْدٌ: أَمْ وَاللهِ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ , مَا أَفْتَيْتُ بِرَأْيِي , وَلَكِنِّي سَمِعْتُ مِنْ أَعْمَامِي شَيْئًا فَقُلْتُ بِهِ. فَقَالَ: مِنْ أَيِّ أَعْمَامِكَ؟ فَقَالَ: مِنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ , وَأَبِي أَيُّوبَ , وَرِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ فَالْتَفَتَ إِلَيَّ عُمَرُ فَقَالَ: مَا يَقُولُ هَذَا الْفَتَى؟ قَالَ: قُلْتُ: إِنَّا كُنَّا لَنَفْعَلُهُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ لَا نَغْتَسِلُ. قَالَ: أَفَسَأَلْتُمُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ؟ فَقُلْتُ: لَا. قَالَ: عَلَيَّ بِالنَّاسِ , فَاتَّفَقَ النَّاسُ أَنَّ الْمَاءَ لَا يَكُونُ إِلَّا مِنَ الْمَاءِ , إِلَّا مَا كَانَ مِنْ عَلِيٍّ وَمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ فَقَالَا: إِذَا جَاوَزَ الْخِتَانُ الْخِتَانَ , فَقَدْ وَجَبَ الْغُسْلُ. فَقَالَ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ لَا أَجِدُ أَحَدًا أَعْلَمُ بِهَذَا مِنْ أَمْرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مِنْ أَزْوَاجِهِ. فَأَرْسَلَ إِلَى حَفْصَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فَقَالَتْ: لَا عِلْمَ لِي. فَأَرْسَلَ إِلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فَقَالَتْ: «إِذَا جَاوَزَ الْخِتَانُ الْخِتَانَ , فَقَدْ وَجَبَ الْغُسْلُ» فَتَحَطَّمَ عُمَرُ , وَقَالَ: لَئِنْ أُخْبِرْتُ بِأَحَدٍ يَفْعَلُهُ ثُمَّ لَا يَغْتَسِلُ لَأَنْهَكْتُهُ عُقُوبَةً " أَيْ لَمَا لِنْتُ فِي عُقُوبَتِهِ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসেও গোসল ফরয হয়। মুসলিম শরীফে হযরত আবু মুসা আশআ’রী রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসে গোসল ফরয হওয়া বা না হওয়ার বিষয়ে মুহাজির এবং আনসারদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বিষয়টি জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে তিনি বললেন যে, শুধু সহবাস হলেই গোসল ফরয হবে। (মুসলিম-৬৭৮) এ থেকে বুঝা যায় যে, এ বিষয়টি নিয়ে সাহাবায়ে কিরামের শুরু যুগে মতবিরোধ থাকলেও তাঁদের সর্বশেষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো গোসল করতে হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/১৬১) সুতরাং হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যিনি এ বিষয়ে অন্য যে কারো চেয়ে ভালো জানতেন। সুতরাং কোন সাহাবার ভিন্ন মত থাকলেও হযরত আয়েশা রা.-এর মত ও বর্ণনা অগ্রাধিকারের জোর দাবী রাখে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৩৩৬ | মুসলিম বাংলা