মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৩১- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
হাদীস নং: ৬০৫৫
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৫৫। হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরামা (রাঃ) বলেন, (যখন আবু লু'লু কর্তৃক) হযরত ওমর (রাঃ) ঘায়েল হন, তখন তিনি উহার যন্ত্রণা ভোগ করিতে থাকেন, এ সময় হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) যেন অনেকটা সান্ত্বনার সুরে তাঁহাকে বলিলেন, হে আমীরুল মু'মেনীন ! আপনি এত অধিক অস্থির হইবেন না। (মৃত্যু ঘটিলেও চিন্তার কোন কারণ নাই।) কেননা, আপনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহচর্য লাভ করিয়াছেন এবং তাঁহার সাহচর্যের হক উত্তমরূপে পালন করিয়াছেন। অতঃপর তিনি আপনার নিকট হইতে এমতাবস্থায় বিচ্ছিন্ন হইয়াছেন যে, তিনি আপনার প্রতি পূর্ণ সন্তুষ্ট ছিলেন। তারপর আপনি হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর সাহচর্য লাভ করেন এবং তাঁহার সাহচর্যের হকও উত্তমরূপে আদায় করিয়াছেন। আর তিনি আপনার নিকট হইতে এমতাবস্থায় বিচ্ছিন্ন হইলেন যে, তিনিও আপনার প্রতি পূর্ণ সন্তুষ্ট ছিলেন। অতঃপর (খলীফা থাকাকালীন) আপনি মুসলমানদের সহিত জীবন অতিবাহিত করিয়াছেন এবং তাহাদের সহিত সহ-অবস্থানের হকও উত্তমরূপে আদায় করিয়াছেন। আর এই মুহূর্তে যদি আপনি তাহাদের নিকট হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া যান, তবে নিশ্চিতভাবে আপনি তাহাদের নিকট হইতে এমতাবস্থায় বিচ্ছিন্ন হইবেন যে, তাহারা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট থাকিবে।
এই সমস্ত কথা শুনিবার পর হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, তুমি যে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহচর্য ও তাঁহার সন্তুষ্টির কথা উল্লেখ করিয়াছ, তাহা তো ছিল আল্লাহ্ তা'আলার বিশেষ একটি অনুগ্রহ, যাহা তিনি আমার উপর করিয়াছেন। আর আবু বকরের সাহচর্য ও সন্তুষ্টি সম্পর্কে যাহা তুমি উল্লেখ করিলে তাহাও শুধুমাত্র আল্লাহর বিশেষ একটি মেহেরবানী, যাহা তিনি আমার উপর করিয়াছেন। কিন্তু আমার মধ্যে এখন যে অস্থিরতা তুমি লক্ষ্য করিতেছ, তাহা তোমার জন্য এবং তোমার সাথীদের জন্য। আল্লাহর কসম! যদি আমার নিকট দুনিয়া ভর্তি স্বর্ণ থাকিত, তবে আল্লাহর আযাব (স্বচক্ষে অবলোকন করিবার আগেই তাহা হইতে রক্ষা পাইবার জন্য আমি উহা বিনিময় হিসাবে দান করিয়া দিতাম। —বুখারী
এই সমস্ত কথা শুনিবার পর হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, তুমি যে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহচর্য ও তাঁহার সন্তুষ্টির কথা উল্লেখ করিয়াছ, তাহা তো ছিল আল্লাহ্ তা'আলার বিশেষ একটি অনুগ্রহ, যাহা তিনি আমার উপর করিয়াছেন। আর আবু বকরের সাহচর্য ও সন্তুষ্টি সম্পর্কে যাহা তুমি উল্লেখ করিলে তাহাও শুধুমাত্র আল্লাহর বিশেষ একটি মেহেরবানী, যাহা তিনি আমার উপর করিয়াছেন। কিন্তু আমার মধ্যে এখন যে অস্থিরতা তুমি লক্ষ্য করিতেছ, তাহা তোমার জন্য এবং তোমার সাথীদের জন্য। আল্লাহর কসম! যদি আমার নিকট দুনিয়া ভর্তি স্বর্ণ থাকিত, তবে আল্লাহর আযাব (স্বচক্ষে অবলোকন করিবার আগেই তাহা হইতে রক্ষা পাইবার জন্য আমি উহা বিনিময় হিসাবে দান করিয়া দিতাম। —বুখারী
وَعَن المِسور بن مَخْرَمةَ قَالَ: لَمَّا طُعِنَ عُمَرُ جَعَلَ يَأْلَمُ فَقَالَ لَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ وَكَأَنَّهُ يُجَزِّعُهُ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ وَلَا كُلُّ ذَلِكَ لَقَدْ صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَحْسَنْتَ صُحْبَتَهُ ثُمَّ فَارَقَكَ وَهُوَ عَنْكَ رَاضٍ ثُمَّ صَحِبْتَ أَبَا بَكْرٍ فَأَحْسَنْتَ صُحْبَتَهُ ثُمَّ فَارَقَكَ وَهُوَ عَنْكَ رَاضٍ ثُمَّ صَحِبْتَ الْمُسْلِمِينَ فَأَحْسَنْتَ صُحْبَتَهُمْ وَلَئِنْ فَارَقْتَهُمْ لَتُفَارِقَنَّهُمْ وَهُمْ عَنْكَ رَاضُونَ. قَالَ: أَمَّا مَا ذَكَرْتَ مِنْ صُحْبَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَرضَاهُ فَإِنَّمَا ذَاك مَنٌّ مِنَ اللَّهِ مَنَّ بِهِ عَلَيَّ وَأَمَّا مَا ذَكَرْتَ مِنْ صُحْبَةِ أَبِي بَكْرٍ وَرِضَاهُ فَإِنَّمَا ذَلِك من من الله جلّ ذكره مَنَّ بِهِ عَلَيَّ. وَأَمَّا مَا تَرَى مِنْ جزعي فَهُوَ من أَجلك وَأجل أَصْحَابِكَ وَاللَّهِ لَوْ أَنَّ لِي طِلَاعَ الْأَرْضِ ذَهَبا لافتديت بِهِ من عَذَاب الله عز وَجل قبل أَن أرَاهُ. رَوَاهُ البُخَارِيّ
