মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৮- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা
হাদীস নং: ৫৩৯৬
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৩৯৬। হযরত হোযাইফা (রাঃ) বলেন, একবার আমি জিজ্ঞাসা করিলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্! এখন আমরা যেই ভাল যুগে (ইসলামে) অবস্থান করিতেছি, ইহার পরে কি কোন মন্দ যুগ আসিবে, যেমন—ইহার (ইসলামের) পূর্বে (জাহেলিয়াত) ছিল? তিনি বলিলেনঃ হ্যাঁ, আসিবে। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, উহা হইতে বাঁচিয়া থাকার উপায় কি? তিনি বলিলেন ; তলোয়ার। (অর্থাৎ, বাতিলের মুকাবিলায় প্রয়োজনে অস্ত্র ধারণ করিতে হইবে।) আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, আচ্ছা, সেই তলোয়ারী যুগের পরে কি মুসলমানের অস্তিত্ব থাকিবে? তিনি বলিলেন; হ্যাঁ, থাকিবে। তবে তখন প্রতিষ্ঠিত হইবে রাজতন্ত্র। উহার ভিত্তি হইবে মানুষের ঘৃণার উপর এবং সন্ধি-চুক্তি হইবে প্রতারণার উপর। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, তারপর কি হইবে? তিনি বলিলেন ; অতঃপর গোমরাহীর দিকে আহ্বানকারী লোকের আবির্ভাব ঘটিবে। তখন যদি আল্লাহর এই যমীনে কোন শাসক থাকে এবং সে তোমার পৃষ্ঠে অন্যায়ভাবে চাবুক মারে এবং (জোরপূর্বক) তোমার মাল-সম্পদ ছিনাইয়াও নেয়, তবুও তুমি তাহার আনুগত্য কর। যদি কোন শাসক না থাকে তবে তোমার মৃত্যু যেন এই অবস্থায় হয় যে, তুমি (সকল সম্পর্ক ত্যাগ করিয়া) কোন বৃক্ষের গোড়ায় আশ্রয় গ্রহণকারী হইবে। (অর্থাৎ, নির্জনে থাকিবে।) আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, তারপর কি হইবে? তিনি বলিলেন; অতঃপর দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটিবে। তাহার সঙ্গে থাকিবে নহর ও আগুন। যে ব্যক্তি উক্ত অগ্নিকুণ্ডে পড়িবে, (আল্লাহর নিকট) তাহার প্রতিদান সাব্যস্ত হইয়া যাইবে এবং তাহার পূর্বের গোনাহসমূহ মাফ হইয়া যাইবে। আর যে ব্যক্তি তাহার নহরে প্রবেশ করিবে তাহার পাপ অবধারিত হইয়া যাইবে এবং তাহার (নেক আমলের) সওয়াব বাতিল হইয়া যাইবে। হোযাইফা বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, তারপর কি হইবে? তিনি বলিলেন ; ঘোড়ার বাচ্চা লাভ করা হইবে, কিন্তু উহা আরোহণের যোগ্য হওয়ার পূর্বেই কিয়ামত কায়েম হইয়া যাইবে। (অর্থাৎ, দাজ্জালের আবির্ভাবের পর কিয়ামত খুব নিকটবর্তী হইবে। )
অপর এক বর্ণনায় আছে—সেই ফিতনার সন্ধি-চুক্তি হইবে প্রতারণার উপর এবং জামাতবন্দী হইবে ঘৃণার উপর। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! প্রতারণার চুক্তির অর্থ কি? তিনি বলিলেন; লোকজনের অন্তর পূর্বাবস্থায় ফিরিয়া আসিবে না। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, সেই ভাল-এর পরেও কি কোন মন্দ আসিবে? তিনি বলিলেন; হ্যাঁ, ইহার পরে আসিয়া পড়িবে অন্ধ ও বধির ফিতনা। (অর্থাৎ, তখন আর হক ও বাতিলের পার্থক্য করার কোন উপায় থাকিবে না এবং উহা হইতে বাহির হওয়ার কোন পথও পাওয়া যাইবে না।) সেই সময় এক দল লোক জাহান্নামের দ্বারে দাঁড়াইয়া ফিতনার দিকে আহ্বানকারী হইবে। হে হোযাইফা! সেই সময় এই সকল আহ্বানকারীর কাহারও অনুসরণ করা অপেক্ষা যদি তুমি গাছের শিকড় আঁকড়াইয়া মৃত্যুবরণ কর, তাহা হইবে তোমার পক্ষে উত্তম। —আবু দাউদ
অপর এক বর্ণনায় আছে—সেই ফিতনার সন্ধি-চুক্তি হইবে প্রতারণার উপর এবং জামাতবন্দী হইবে ঘৃণার উপর। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! প্রতারণার চুক্তির অর্থ কি? তিনি বলিলেন; লোকজনের অন্তর পূর্বাবস্থায় ফিরিয়া আসিবে না। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, সেই ভাল-এর পরেও কি কোন মন্দ আসিবে? তিনি বলিলেন; হ্যাঁ, ইহার পরে আসিয়া পড়িবে অন্ধ ও বধির ফিতনা। (অর্থাৎ, তখন আর হক ও বাতিলের পার্থক্য করার কোন উপায় থাকিবে না এবং উহা হইতে বাহির হওয়ার কোন পথও পাওয়া যাইবে না।) সেই সময় এক দল লোক জাহান্নামের দ্বারে দাঁড়াইয়া ফিতনার দিকে আহ্বানকারী হইবে। হে হোযাইফা! সেই সময় এই সকল আহ্বানকারীর কাহারও অনুসরণ করা অপেক্ষা যদি তুমি গাছের শিকড় আঁকড়াইয়া মৃত্যুবরণ কর, তাহা হইবে তোমার পক্ষে উত্তম। —আবু দাউদ
وَعَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَكُونُ بَعْدَ هَذَا الْخَيْرِ شَرٌّ كَمَا كَانَ قَبْلَهُ شَرٌّ؟ قَالَ: «نَعَمْ» قُلْتُ: فَمَا الْعِصْمَةُ؟ قَالَ: «السَّيْفُ» قُلْتُ: وَهَلْ بَعْدَ السَّيْفِ بَقِيَّةٌ؟ قَالَ: «نعمْ تكونُ إِمارةٌ على أَقْذَاءٍ وَهُدْنَةٌ عَلَى دَخَنٍ» . قُلْتُ: ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: «ثُمَّ يَنْشَأُ دُعَاةُ الضَّلَالِ فَإِنْ كَانَ لِلَّهِ فِي الْأَرْضِ خَلِيفَةٌ جَلَدَ ظَهْرَكَ وَأَخَذَ مَالَكَ فَأَطِعْهُ وَإِلَّا فَمُتْ وَأَنْتَ عَاضٌّ عَلَى جَذْلِ شَجَرَةٍ» . قُلْتُ: ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: «ثُمَّ يَخْرُجُ الدَّجَّالُ بَعْدَ ذَلِكَ مَعَهُ نَهْرٌ وَنَارٌ فَمَنْ وَقَعَ فِي نَارِهِ وَجَبَ أَجْرُهُ وَحُطَّ وِزْرُهُ وَمَنْ وَقَعَ فِي نَهْرِهِ وَجَبَ وِزْرُهُ وحظ أَجْرُهُ» . قَالَ: قُلْتُ: ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: «ثُمَّ يُنْتَجُ الْمُهْرُ فَلَا يُرْكَبُ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ» وَفِي رِوَايَة: «هُدْنَةٌ عَلَى دَخَنٍ وَجَمَاعَةٌ عَلَى أَقْذَاءٍ» . قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ الْهُدْنَةُ عَلَى الدَّخَنِ مَا هِيَ؟ قَالَ: «لَا ترجع قُلُوب أَقوام كَمَا كَانَتْ عَلَيْهِ» . قُلْتُ: بَعْدَ هَذَا الْخَيْرِ شَرٌّ؟ قَالَ: «فِتْنَةٌ عَمْيَاءُ صَمَّاءُ عَلَيْهَا دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ النَّارِ فَإِنْ مُتَّ يَا حُذَيْفَةُ وَأَنْتَ عَاضٌّ عَلَى جَذْلٍ خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ تتبع أحدا مِنْهُم» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
