মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
হাদীস নং: ৫০৫৪
১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আত্মসংযম ও কাজে ধীরস্থিরতা
৫০৫৪। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল কায়েস গোত্রপতি আশাজ্জ’-কে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ তোমার মধ্যে এমন দুইটি উত্তম গুণ বিদ্যমান আছে যাহাকে আল্লাহ্ তা'আলা পছন্দ করেন—সহনশীলতা ও গাম্ভীর্য। —মুসলিম
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِأَشَجِّ عَبْدِ الْقَيْسِ: إِنَّ فِيكَ لَخَصْلَتَيْنِ يُحِبُّهُمَا الله: الْحلم والأناة . رَوَاهُ مُسلم
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. আবদুল কায়েস আরবের একটি প্রসিদ্ধ গোত্রের নাম। একবার সেই গোত্রের একটি প্রতিনিধিদল গোত্রপতি মুনযির ইবনে আয়েযের নেতৃত্বে মদীনায় নবী করীম (ﷺ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইল। মদীনায় পৌঁছিয়াই মুনযির ব্যতীত অন্যান্য সকলেই তাড়াহুড়া করিয়া হুযূর (ﷺ)-এর খেদমতে হাযির হইল। সফরের ধুলাবালি ও ময়লাযুক্ত জামা-কাপড় ইত্যাদি কিছুই পরিবর্তন করে নাই। কিন্তু মুনযির এইরূপ করিলেন না; বরং তিনি প্রথমে হাত-মুখ ধুইলেন, সফরের জামা-কাপড় পাল্টাইলেন এবং উত্তম পোশাক পরিধান করিয়া খুব ধীরস্থিরভাবে খেদমতে নববীতে উপস্থিত হইলেন। মুনযিরের মাথায় অথবা মুখে একটি ক্ষতচিহ্ন ছিল, তাই তাহাকে আশাজ্জ বলা হয়।
২. এ হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর দু'টি সদগুণের প্রশংসা করে বলেন যে, এ দু'টি আল্লাহ তা'আলা পসন্দ করেন। গুণদু'টি হল- الحِلْمُ وَالْأَنَاةُ (সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতা)। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশংসা করলে হযরত আশাজ্জ রাযি. জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ দু'টি গুণ কি আমার মধ্যে নতুন জন্ম নিয়েছে, নাকি আগে থেকেই ছিল? তিনি বললেন, আগে থেকেই ছিল। তখন তিনি এই বলে আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করলেন যে, সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে এমন দু'টি স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যা তিনি পসন্দ করেন।
হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর চরিত্রে সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতার গুণ বিদ্যমান ছিল। এ কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রশংসা করেছেন। বোঝা গেল এ দু'টি প্রশংসনীয় গুণ, যা প্রত্যেক মুমিনের অর্জন করা উচিত।
এক বর্ণনায় আছে-
الْأَنَاةُ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى، وَالْعَجَلَةُ مِنَ الشَّيْطَانِ
‘ধীরস্থিরতা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। (জামে' তিরমিযী: ২০১২; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর ৫৭০২; তাবারানী, মাকারিমুল আখলাক: ২৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৫৯৮)
বলা হয়ে থাকে, তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের প্ররোচনায় হয়ে থাকে পাঁচটি ক্ষেত্র ছাড়া- অতিথি উপস্থিত হলে খাবার পরিবেশন করা, কেউ মারা গেলে তার দাফন-কাফন করা, কন্যাসন্তান বালেগা হলে তার বিবাহ সম্পন্ন করা, দেনা পরিশোধ করা এবং কোনও গুনাহ হয়ে গেলে তা থেকে তাওবা করা।
প্রকাশ থাকে যে, তাড়াহুড়া নিন্দনীয় দুনিয়াবী কাজে। দীনের কাজে বিলম্ব করতে নেই। সুযোগ হওয়া মাত্রই করে ফেলা উচিত। হযরত উমর রাযি. বলেন, ধীরস্থিরতা সব কাজেই ভালো, তবে আখিরাতের কাজে নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও কাজে তাড়াহুড়া করতে নেই। ধীরস্থিরভাবে করলেই কাজ সুন্দর ও সঠিক হয়।
খ. অন্যের প্রতি সহনশীল থাকা একান্ত কর্তব্য। এটা পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে সহায়ক।
২. এ হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর দু'টি সদগুণের প্রশংসা করে বলেন যে, এ দু'টি আল্লাহ তা'আলা পসন্দ করেন। গুণদু'টি হল- الحِلْمُ وَالْأَنَاةُ (সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতা)। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশংসা করলে হযরত আশাজ্জ রাযি. জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ দু'টি গুণ কি আমার মধ্যে নতুন জন্ম নিয়েছে, নাকি আগে থেকেই ছিল? তিনি বললেন, আগে থেকেই ছিল। তখন তিনি এই বলে আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করলেন যে, সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে এমন দু'টি স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যা তিনি পসন্দ করেন।
হযরত আশাজ্জ রাযি.-এর চরিত্রে সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতার গুণ বিদ্যমান ছিল। এ কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রশংসা করেছেন। বোঝা গেল এ দু'টি প্রশংসনীয় গুণ, যা প্রত্যেক মুমিনের অর্জন করা উচিত।
এক বর্ণনায় আছে-
الْأَنَاةُ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى، وَالْعَجَلَةُ مِنَ الشَّيْطَانِ
‘ধীরস্থিরতা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। (জামে' তিরমিযী: ২০১২; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর ৫৭০২; তাবারানী, মাকারিমুল আখলাক: ২৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৫৯৮)
বলা হয়ে থাকে, তাড়াহুড়া করাটা শয়তানের প্ররোচনায় হয়ে থাকে পাঁচটি ক্ষেত্র ছাড়া- অতিথি উপস্থিত হলে খাবার পরিবেশন করা, কেউ মারা গেলে তার দাফন-কাফন করা, কন্যাসন্তান বালেগা হলে তার বিবাহ সম্পন্ন করা, দেনা পরিশোধ করা এবং কোনও গুনাহ হয়ে গেলে তা থেকে তাওবা করা।
প্রকাশ থাকে যে, তাড়াহুড়া নিন্দনীয় দুনিয়াবী কাজে। দীনের কাজে বিলম্ব করতে নেই। সুযোগ হওয়া মাত্রই করে ফেলা উচিত। হযরত উমর রাযি. বলেন, ধীরস্থিরতা সব কাজেই ভালো, তবে আখিরাতের কাজে নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও কাজে তাড়াহুড়া করতে নেই। ধীরস্থিরভাবে করলেই কাজ সুন্দর ও সঠিক হয়।
খ. অন্যের প্রতি সহনশীল থাকা একান্ত কর্তব্য। এটা পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে সহায়ক।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
