মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৯১১
১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - অনুগ্রহ ও স্বজনে সদাচার
৪৯১১। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, একদা এক ব্যক্তি আরয করিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমার সাহচর্যে কে সর্বাপেক্ষা অধিক সৌজন্যমূলক আচরণ পাওয়ার অধিকারী? তিনি বলিলেন: তোমার মাতা। সে জিজ্ঞাসা করিল, তারপর কে? তিনি বলিলেন: তোমার মাতা। সে পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, তারপর কে? তিনি বলিলেন: তোমার মাতা। সে পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, তারপর কে? তিনি বলিলেন: তোমার মাতা। সে আবারও জিজ্ঞাসা করিল, অতঃপর কে? তিনি বলিলেনঃ তোমার পিতা। অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বলিলেন: তোমার মাতা, তারপর তোমার মাতা, তারপর তোমার মাতা, অতঃপর তোমার পিতা। অতঃপর তোমার (পর্যায়ক্রমে) নিকটতম ব্যক্তিবর্গ। মোত্তাঃ
بَابُ الْبِرِّ وَالصِّلَةِ: الْفَصْل الأول
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَحَقُّ بِحُسْنِ صَحَابَتِي؟ قَالَ: «أُمَّكَ» . قَالَ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: «أُمَّكَ» . قَالَ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ «أُمَّكَ» . قَالَ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: «أَبُوكَ» . وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: «أُمَّكَ ثُمَّ أُمَّكَ ثُمَّ أُمَّكَ ثُمَّ أَبَاكَ ثمَّ أدناك أدناك» . مُتَّفق عَلَيْهِ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
البر ‘বিরর’ অর্থ—এহসান। সাধারণতঃ মাতা-পিতার সহিত সদ্ব্যবহার করাকেই বিরর বলা হয়। মূলতঃ সদাচরণ মানুষের একটি উত্তম গুণ। অপরকে আপন করিতে ইহা সাহায্য করে। সামাজিক জীবনে মানুষ পরস্পর নির্ভরশীল। তাই পারস্পরিক সমঝোতা, সহানুভূতি ও সদাচরণের গুরুত্ব অপরিসীম। আর এই সমস্ত গুণাবলী অর্জনের পথে গর্ব-অহংকারই প্রধান অন্তরায়। এই সমস্ত গুণাবলী অর্জন ও অবলম্বন করার জন্য রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) শিক্ষা প্রদান করিয়া মানব সভ্যতাকে গতিশীল ও সামঞ্জস্যশীল করিয়া তুলিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেনঃ ‘মাতা-পিতার সন্তুষ্টি আল্লাহর সন্তুষ্টির মাপকাঠি'।
الصلة ‘ছেলাহ্' ইহার অর্থও অনুরূপ সদাচরণ, তবে ইহা আপনজন ও আত্মীয়-স্বজনদের বেলায় ব্যবহার হয়। তিনি বলিয়াছেনঃ 'আত্মীয়তা ছিন্নকারী জাহান্নামী', পক্ষান্তরে 'আত্মীয়তা স্থাপন ও রক্ষাকারী জান্নাতী।
সন্তানের উপর পিতা অপেক্ষা মাতার অধিকার বেশী হওয়ার স্বতন্ত্র কারণ তিনটি। প্রথমতঃ দীর্ঘ দশ মাসের অধিককাল গর্ভধারণের কষ্ট। দ্বিতীয়তঃ প্রসবকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়া গর্ভ খালাসের কষ্ট করা এবং তৃতীয়তঃ দুগ্ধপানকালীন নিজের আরামকে হারাম করিয়া সন্তানের সেবা-যত্নে তৎপর থাকার কষ্ট। আল্লাহ্ পাকের কালামেও মায়ের কষ্টের কথা তিনবার উল্লেখ রহিয়াছেঃ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا “তাহার মাতা তাহাকে বড় কষ্টসহ গর্ভে ধারণ করিয়াছে এবং অতি কষ্টে তাহাকে প্রসব করিয়াছে; আর তাহাকে গর্ভে ধারণ করা ও দুধ ছাড়ানো ৩০ মাস।” –সূরা আহকাফ
الصلة ‘ছেলাহ্' ইহার অর্থও অনুরূপ সদাচরণ, তবে ইহা আপনজন ও আত্মীয়-স্বজনদের বেলায় ব্যবহার হয়। তিনি বলিয়াছেনঃ 'আত্মীয়তা ছিন্নকারী জাহান্নামী', পক্ষান্তরে 'আত্মীয়তা স্থাপন ও রক্ষাকারী জান্নাতী।
সন্তানের উপর পিতা অপেক্ষা মাতার অধিকার বেশী হওয়ার স্বতন্ত্র কারণ তিনটি। প্রথমতঃ দীর্ঘ দশ মাসের অধিককাল গর্ভধারণের কষ্ট। দ্বিতীয়তঃ প্রসবকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়া গর্ভ খালাসের কষ্ট করা এবং তৃতীয়তঃ দুগ্ধপানকালীন নিজের আরামকে হারাম করিয়া সন্তানের সেবা-যত্নে তৎপর থাকার কষ্ট। আল্লাহ্ পাকের কালামেও মায়ের কষ্টের কথা তিনবার উল্লেখ রহিয়াছেঃ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا “তাহার মাতা তাহাকে বড় কষ্টসহ গর্ভে ধারণ করিয়াছে এবং অতি কষ্টে তাহাকে প্রসব করিয়াছে; আর তাহাকে গর্ভে ধারণ করা ও দুধ ছাড়ানো ৩০ মাস।” –সূরা আহকাফ
