মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়

হাদীস নং: ৪০৩৫
৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - জিয্ইয়াহ্-এর বর্ণনা
৪০৩৫। হযরত বাজালাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি আহনাফ ইবনে কায়সের চাচা জায ইবনে মুআবিয়ার মুন্সী (সেক্রেটারী) ছিলাম। তখন হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাযিআল্লাহু আন্হুর ওফাতের এক বৎসর পূর্বে আমাদের কাছে তাহার একখানা পত্র আসিল। (উহাতে নির্দেশ ছিল.) মজুসীদের (পারস্যের অগ্নিপূজকদের) বিবাহ বন্ধনে কোন মাহরাম থাকিলে তাহাদের মধ্যে বিচ্ছেদ করিয়া দাও। হযরত ওমর (রাঃ) প্রথমে মজুসীদের নিকট হইতে জিযিয়া গ্রহণ করেন নাই, অবশেষে হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ যখন সাক্ষ্য দিলেন, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজার নামক জায়গার মজুসীদের নিকট হইতে জিযিয়া আদায় করিয়াছেন। তখন তিনিও গ্রহণ করিতে লাগিলেন। —বুখারী

হযরত বুরায়দা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস “হুযুর (ছাঃ) যখন কোন ব্যক্তিকে কোন সেনাদলের অধিনায়ক নিযুক্ত করিতেন" কাফেরদের নিকট লিপি প্রেরণ অধ্যায়ে বর্ণনা করা হইয়াছে।
بَابُ الْجِزْيَةِ: الْفَصْل الأول
عَن بَجالَةَ قَالَ: كُنْتُ كَاتِبًا لِجَزْءِ بْنِ مُعَاوِيَةَ عَمِّ الْأَحْنَفِ فَأَتَانَا كِتَابُ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَبْلَ مَوْتِهِ بِسَنَةٍ: فَرِّقُوا بَيْنَ كُلِّ ذِي مَحْرَمٍ مِنَ الْمَجُوسِ وَلَمْ يَكُنْ عُمَرُ أَخَذَ الْجِزْيَةَ مِنَ الْمَجُوسِ حَتَّى شَهِدَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخَذَهَا مِنْ مَجُوسِ هجَرَ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وذُكرَ حديثُ بُريدةَ: إِذَا أَمَّرَ أَمِيرًا عَلَى جَيْشٍ فِي «بَابِ الْكتاب إِلى الْكفَّار»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

যিম্মী বা অমুসলিম সংখ্যালঘুদের নিকট হইতে তাহাদের জান-মালের হেফাযতের বিনিময়ে যেই রাজস্ব কর লওয়া হয় উহাকে জিযিয়া বলা হয়। এই প্রসঙ্গে সূরায়ে তওবায় বর্ণিত হইয়াছেঃ
قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّىٰ يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَن يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ

অর্থাৎ, আহলে কিতাবদের যাহারা আল্লাহ্ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে না, তাহাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর যাবৎ না তাহারা আত্মসমর্পণ করিয়া জিযিয়া প্রদান করে। তবে জিযিয়া দুই ধরনের হইতে পারে। এক প্রকারের জিযিয়া পরস্পর সমঝোতা ও চুক্তির মাধ্যমে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ‘কর।’ উহার অতিরিক্ত আদায় করা জায়েয নাই। আর দ্বিতীয় প্রকারের জিযিয়া, মুসলমানেরা যখন কোন কাফের জনপদে লড়াই করিয়া বিজয়ী হয়, তখন ইমাম বা শাসক সেই সমস্ত কাফেরদিগকে নিজ নিজ মাল-সম্পদের উপর পূর্ববৎ বহাল রাখিয়া তাহাদের উপর যেই কর বা ট্যাক্স ধার্য করিয়া দেন, তাহা।

মজুসীরা প্রথম পর্যায়ে কোন এক নবীর প্রতি ঈমান স্থাপন করিয়া মু'মিন নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু নবীর মৃত্যুর পর শয়তানের প্ররোচনায় তাহারা অগ্নিপূজায় লিপ্ত হইয়া পড়ে এবং মাহুরাম অর্থাৎ, ইসলামী বিধানে যেসমস্ত নারী-পুরুষের মধ্যে বিবাহ হারাম উহাতে লিপ্ত হইয়া যায়।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৪০৩৫ | মুসলিম বাংলা