মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৯৭৫
৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৭৫। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, হোদাইবিয়ার সময় সন্ধি-চুক্তি সম্পাদন হওয়ার আগে কয়েকজন ক্রীতদাস মক্কা হইতে মদীনায় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খেদমতে চলিয়া আসিল। পরে তাহাদের মালিকেরা হুযূর (ﷺ)-এর নিকট লিখিয়া পাঠাইল। তাহারা বলিল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহর কসম, ঐ সমস্ত ক্রীতদাসগুলি তোমার দ্বীনের প্রতি আকৃষ্ট হইয়া তোমার কাছে যায় নাই; বরং তাহারা দাসত্বের শৃংখল হইতে মুক্তি হাসিল করার উদ্দেশ্যে আমাদের নিকট হইতে পলায়ন করিয়াছে। (সুতরাং তাহাদিগকে মক্কায় ফেরত পাঠাইয়া দাও।) কয়েকজন সাহাবীও (ইহার সমর্থনে) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহাদের মালিকেরা সত্যই বলিয়াছে, কাজেই তাহাদিগকে তাহাদের মালিকের নিকট ফেরত পাঠাইয়া দিন । ইহাতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) রাগান্বিত হইলেন এবং বলিলেনঃ হে কুরাইশদল। আমি দেখিতেছি, তোমরা তোমাদের গোঁড়ামি ও নাফরমানী হইতে সেই পর্যন্তও বিরত হইবে না, যেই পর্যন্ত না আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের ঘাড়ে এইজন্য আঘাত হানিবার জন্য কাহাকেও প্রেরণ না করেন। অতঃপর তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় ঐ সমস্ত গোলামদিগকে ফেরত পাঠাইতে অস্বীকৃতি জানাইলেন এবং ঘোষণা করিয়া দিলেন, তাহারা হইল আল্লাহর আযাদকৃত। —আবু দাউদ
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: خَرَجَ عِبْدَانٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْنِي الْحُدَيْبِيَةَ قَبْلَ الصُّلْحِ فَكَتَبَ إِلَيْهِ مَوَالِيهِمْ قَالُوا: يَا مُحَمَّدُ وَاللَّهِ مَا خَرَجُوا إِلَيْكَ رَغْبَةً فِي دِينِكَ وَإِنَّمَا خَرَجُوا هَرَبًا مِنَ الرِّقِّ. فَقَالَ نَاسٌ: صَدَقُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ رُدَّهُمْ إِلَيْهِمْ فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: «مَا أَرَاكُم تنتهونَ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ حَتَّى يَبْعَثَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ مَنْ يَضْرِبُ رِقَابَكُمْ عَلَى هَذَا» . وَأَبَى أَنْ يَرُدَّهُمْ وَقَالَ: «هُمْ عُتَقَاءَ اللَّهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

হাদীসের ব্যাখ্যা:

ما أراكم تنتهون এর অর্থ হইল, তোমরা ভ্রান্ত ধারণার বশীভূত হইয়া কাফেরদের কথাকে বিশ্বাস করিয়া শরীআতের হুকুমের বিপরীত রায় প্রদান করা হইতে কেন বিরত হইতেছ না? হেদায়া কিতাবে উল্লেখ আছে, ইমাম আবু হানীফা ও ছাহেবাইন বলেন, যদি কোন গোলামে হরবী (অর্থাৎ, কাফেরদের গোলাম) মুসলমান হইয়া দারুল হরব হইতে ইসলামী রাষ্ট্রে মুসলমানদের নিকট চলিয়া আসে, তখন সে আযাদ হইয়া যায়। ফলে তাহাকে আর গোলাম বলা বা করা যাইবে না। কেননা, তাহারা আল্লাহর পক্ষ হইতে মুক্তিপ্রাপ্ত। যেমন, তায়েফের কিছু সংখ্যক গোলাম ইসলাম কবুল করিয়া রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট চলিয়া আসিয়াছিল, তখন তাহাদের ব্যাপারে هم عتقاء الله বলিয়া হুযূর (ﷺ) রায় প্রদান করিয়াছিলেন।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৩৯৭৫ | মুসলিম বাংলা