মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১৭- কিসাসের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৫২৫
২. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে সব অপরাধের ক্ষতিপূরণ (জরিমানা) নেই
৩৫২৫। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ যদি তোমাদের কেহ কোন ব্যক্তিকে মারধর করে, তবে চেহারায় যেন না মারে। কেননা, আল্লাহ্ তা'আলা হযরত আদম (আঃ)-কে তাঁহার আকৃতিতেই সৃষ্টি করিয়াছেন। —মোত্তাঃ
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا قَاتَلَ أَحَدُكُمْ فَلْيَجْتَنِبِ الْوَجْهَ فَإِنَّ اللَّهَ خَلَقَ آدَمَ عَلَى صُورَتِهِ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

মুখমণ্ডল ছাড়া শরীরের অন্য স্থানে মারার যেই অনুমতি দিয়াছেন ইহা নির্দেশ নহে; বরং হাদীসের মানে হইল, স্ত্রী, সন্তান বা খাদেমদিগকে যদি আদব ও শিষ্টাচারিতার জন্য মারধর করিতে হয়, তবে মুখের মধ্যে মারিও না। মূলতঃ মানুষের মুখমণ্ডল হইল তাহার প্রতীক। আর উহাতে আঘাত করিলে খোদাপ্রদত্ত আকৃতির পরিবর্তন ঘটিবে, যাহা অতি বর্বরোচিত কাজ হযরত আদম (আঃ)-কে তাঁহার আকৃতিতে সৃষ্টি করিয়াছেন, ইহার ব্যাখ্যায় ওলামাদের অনেক মতামত রহিয়াছে। অনেকে বলেন, আল্লাহ্ তাঁহাকে সেই আকৃতিতেই সৃষ্টি করিয়াছেন, যাহা তাঁহার জন্য আল্লাহ্ নির্দিষ্ট করিয়া রাখিয়াছিলেন। আবার কেহ কেহ বলেন, আল্লাহ্ তাঁহাকে নিজের আকৃতিতেই সৃষ্টি করিয়াছেন, অথচ আল্লাহ্র কোন আকৃতি নাই, তাহার আকৃতিতে কোন জিনিসও নাই; সুতরাং ইহার তথ্য সম্পর্কে নীরবতা অবলম্বন করাই উত্তম। আর কেহ কেহ বলেন, আল্লাহ্ নিজের দিকে আদমের আকৃতির সম্বন্ধ করিয়াছেন তাহার মর্যাদা প্রকাশের জন্য। যেমন, আমরা বলিয়া থাকি —'বায়তুল্লাহ' (আল্লাহর ঘর), এইখানেও তাহাই উদ্দেশ্য।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান