মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৪- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩১৪৯
৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের প্রচার, প্রস্তাব ও শর্তাবলী প্রসঙ্গে
৩১৪৯। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদিগকে নামাযের তাশাহহুদ এবং (বিবাহ ইত্যাদি) হাজতের তাশাহহুদ শিক্ষা দিয়াছেন। তিনি বলেন, নামাযের তাশাহহুদ হইল, “সমস্ত সম্মান, সমস্ত উপাসনা, সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহর জন্য। হে নবী, আল্লাহ্ সালাম (শান্তি), রহমত বর্ষিত হউক আপনার উপর! শান্তি বর্ষিত হউক আমাদের উপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর। আমি ঘোষণা করিতেছি, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন উপাস্য নাই এবং (হযরত) মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁহার প্রেরিত রাসূল।”
আর হাজতের তাশাহহুদ হইল, “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, আমরা তাঁহার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিতেছি ও তাঁহার নিকট ক্ষমা চাহিতেছি। আমরা তাঁহার নিকট পানাহ চাহিতেছি আমাদের নিজের মন্দ কাজ হইতে। তিনি যাহাকে হেদায়ত করেন তাহাকে কেহ গোমরাহ করিতে পারে না। আর তিনি যাহাকে পথভ্রষ্ট করেন তাহাকে কেহ হেদায়ত করিতে পারে না। আমি ঘোষণা করিতেছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন মা'বুদ নাই এবং আমি আরও ঘোষণা করিতেছি, যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁহার প্রেরিত রাসূল।” অতঃপর তিনি এই তিনটি আয়াত পাঠ করিলেন।
(১) হে মু'মিনগণ, আল্লাহকে ভয় কর যথাযোগ্য ভয় এবং মরিও না তোমরা মুসলমান অবস্থায় ব্যতীত। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১০২ )
(২) হে মু'মিনগণ, ভয় কর আল্লাহকে, যাঁহার নামে তোমরা একে অন্যের নিকট আপন অধিকার দাবী করিয়া থাক এবং ভয় কর আত্মীয়তার বন্ধনকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের কাজের পর্যবেক্ষণ করেন। (সূরা নিসা, আয়াত ১)
(৩) হে মু'মিনগণ, আল্লাহকে ভয় করিবে এবং ঠিক কথা বলিবে। (ইহাতে) আল্লাহ্ তোমাদের কার্যাবলীকে ঠিক করিবেন (কবুল করিবেন) এবং তোমাদের গোনাহ্ মাফ করিয়া দিবেন। যে আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের অনুগত হইয়াছে, সে বড় রকমে কৃতকার্য হইয়াছে। (সূরা আহযাব, আয়াত ৭০–৭১)—আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী।
তিরমিযীতে আছে—এই তিন আয়াতের উল্লেখ সুফিয়ান সাওরী করিয়াছেন। ইবনে মাজাহ্ “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর” বাক্যের পর বাড়াইয়া বলিয়াছেন, “আমরা তাঁহার প্রশংসা করিতেছি” এবং “নিজেদের মন্দ হইতে” বাক্যের পর বাড়াইয়াছেন, “এবং আমাদের মন্দ কার্যাবলী হইতে” এবং দারেমী বাড়াইয়া বর্ণনা করিয়াছেন, “বড় রকমে কৃতকার্য হইয়াছে” বাক্যের পর “অতঃপর হুযূর হাজতের উল্লেখ করিতেন।”
বাগাবীর শরহুস সুন্নায় বর্ণিত আছে, হযরত ইবনে মাসউদ ‘হাজত' অর্থে বিবাহ ইত্যাদিকে বুঝাইয়াছেন।
আর হাজতের তাশাহহুদ হইল, “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, আমরা তাঁহার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিতেছি ও তাঁহার নিকট ক্ষমা চাহিতেছি। আমরা তাঁহার নিকট পানাহ চাহিতেছি আমাদের নিজের মন্দ কাজ হইতে। তিনি যাহাকে হেদায়ত করেন তাহাকে কেহ গোমরাহ করিতে পারে না। আর তিনি যাহাকে পথভ্রষ্ট করেন তাহাকে কেহ হেদায়ত করিতে পারে না। আমি ঘোষণা করিতেছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন মা'বুদ নাই এবং আমি আরও ঘোষণা করিতেছি, যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁহার প্রেরিত রাসূল।” অতঃপর তিনি এই তিনটি আয়াত পাঠ করিলেন।
(১) হে মু'মিনগণ, আল্লাহকে ভয় কর যথাযোগ্য ভয় এবং মরিও না তোমরা মুসলমান অবস্থায় ব্যতীত। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১০২ )
(২) হে মু'মিনগণ, ভয় কর আল্লাহকে, যাঁহার নামে তোমরা একে অন্যের নিকট আপন অধিকার দাবী করিয়া থাক এবং ভয় কর আত্মীয়তার বন্ধনকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের কাজের পর্যবেক্ষণ করেন। (সূরা নিসা, আয়াত ১)
(৩) হে মু'মিনগণ, আল্লাহকে ভয় করিবে এবং ঠিক কথা বলিবে। (ইহাতে) আল্লাহ্ তোমাদের কার্যাবলীকে ঠিক করিবেন (কবুল করিবেন) এবং তোমাদের গোনাহ্ মাফ করিয়া দিবেন। যে আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের অনুগত হইয়াছে, সে বড় রকমে কৃতকার্য হইয়াছে। (সূরা আহযাব, আয়াত ৭০–৭১)—আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী।
তিরমিযীতে আছে—এই তিন আয়াতের উল্লেখ সুফিয়ান সাওরী করিয়াছেন। ইবনে মাজাহ্ “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর” বাক্যের পর বাড়াইয়া বলিয়াছেন, “আমরা তাঁহার প্রশংসা করিতেছি” এবং “নিজেদের মন্দ হইতে” বাক্যের পর বাড়াইয়াছেন, “এবং আমাদের মন্দ কার্যাবলী হইতে” এবং দারেমী বাড়াইয়া বর্ণনা করিয়াছেন, “বড় রকমে কৃতকার্য হইয়াছে” বাক্যের পর “অতঃপর হুযূর হাজতের উল্লেখ করিতেন।”
বাগাবীর শরহুস সুন্নায় বর্ণিত আছে, হযরত ইবনে মাসউদ ‘হাজত' অর্থে বিবাহ ইত্যাদিকে বুঝাইয়াছেন।
الْفَصْل الثَّانِي
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: عَلَّمَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التَّشَهُّدَ فِي الصَّلَاةِ وَالتَّشَهُّدَ فِي الْحَاجَةِ قَالَ: التَّشَهُّدُ فِي الصَّلَاةِ: «التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ» . وَالتَّشَهُّدُ فِي الْحَاجَةِ: «إِنَّ الْحَمْدَ لِلَّهِ نَسْتَعِينُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ وَنَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ شُرُورِ أَنْفُسنَا من يهد اللَّهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَا هَادِيَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ» . وَيَقْرَأُ ثَلَاثَ آيَاتٍ (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسلمُونَ)
(يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تساءلون وَالْأَرْحَامَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا)
(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيما)
رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَفِي جَامِعِ التِّرْمِذِيِّ فَسَّرَ الْآيَاتِ الثَّلَاثَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَزَادَ ابْنُ مَاجَهْ بَعْدَ قَوْلِهِ: «إِنَّ الْحَمْدَ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ» وَبَعْدَ قَوْلِهِ: «من شرور أَنْفُسنَا وَمن سيئات أَعمالنَا» وَالدَّارِمِيُّ بَعْدَ قَوْلِهِ «عَظِيمًا» ثُمَّ يَتَكَلَّمُ بِحَاجَتِهِ وَرَوَى فِي شَرْحِ السُّنَّةِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ فِي خطْبَة الْحَاجة من النِّكَاح وَغَيره
(يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تساءلون وَالْأَرْحَامَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا)
(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيما)
رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَفِي جَامِعِ التِّرْمِذِيِّ فَسَّرَ الْآيَاتِ الثَّلَاثَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَزَادَ ابْنُ مَاجَهْ بَعْدَ قَوْلِهِ: «إِنَّ الْحَمْدَ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ» وَبَعْدَ قَوْلِهِ: «من شرور أَنْفُسنَا وَمن سيئات أَعمالنَا» وَالدَّارِمِيُّ بَعْدَ قَوْلِهِ «عَظِيمًا» ثُمَّ يَتَكَلَّمُ بِحَاجَتِهِ وَرَوَى فِي شَرْحِ السُّنَّةِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ فِي خطْبَة الْحَاجة من النِّكَاح وَغَيره
হাদীসের ব্যাখ্যা:
দ্বিতীয় আয়াতটির উদ্ধৃতিতে সম্ভবত হাফেযে কোরআন নহে এমন কোন রাবী ভুল করিয়াছেন। আসলে আয়াতটি হইল এই—
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ وَالْأَرْحَامَ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا- (النساء1)
“হে মানবমণ্ডলী, ভয় কর তোমাদের রব্বকে, যিনি তোমাদিগকে সৃষ্টি করিয়াছেন একই প্রাণী হইতে এবং সৃষ্টি করিয়াছেন উহা হইতে উহার জোড়া, আর উভয় হইতে বিস্তার করিয়াছেন বহু পুরুষ ও নারী। ভয় কর আল্লাহকে, যাঁহার নামে তোমরা একে অন্যের নিকট আপন অধিকার দাবী করিয়া থাক এবং ভয় কর আত্মীয়তা বন্ধনকে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের কার্যাবলী পর্যবেক্ষণ করেন। (সূরা নিসা, আয়াত ১)
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ وَالْأَرْحَامَ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا- (النساء1)
“হে মানবমণ্ডলী, ভয় কর তোমাদের রব্বকে, যিনি তোমাদিগকে সৃষ্টি করিয়াছেন একই প্রাণী হইতে এবং সৃষ্টি করিয়াছেন উহা হইতে উহার জোড়া, আর উভয় হইতে বিস্তার করিয়াছেন বহু পুরুষ ও নারী। ভয় কর আল্লাহকে, যাঁহার নামে তোমরা একে অন্যের নিকট আপন অধিকার দাবী করিয়া থাক এবং ভয় কর আত্মীয়তা বন্ধনকে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের কার্যাবলী পর্যবেক্ষণ করেন। (সূরা নিসা, আয়াত ১)
