মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১৪- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়

হাদীস নং: ৩১৪৮
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিয়ের প্রচার, প্রস্তাব ও শর্তাবলী প্রসঙ্গে
৩১৪৮। হযরত সালামা ইবনে আকওয়া (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আওতাস যুদ্ধের বৎসর তিন দিনের জন্য 'মোতা' বিবাহ করিতে অনুমতি দিয়াছিলেন; অতঃপর উহা নিষেধ করিয়া দিয়াছেন। —মুসলিম
وَعَنْ سَلَمَةَ بْنِ الْأَكْوَعِ قَالَ: رَخَّصَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ أَوْطَاسٍ فِي الْمُتْعَةِ ثَلَاثًا ثُمَّ نَهَى عَنْهَا. رَوَاهُ مُسلم

হাদীসের ব্যাখ্যা:

'মোতা বিবাহ'—অর্থাৎ, এক নির্দিষ্ট সময়ের শর্তে সাময়িক বিবাহ। ইহা ইসলামের প্রথম যুগে সফরে মোবাহ ছিল। সপ্তম হিজরীতে খায়বর যুদ্ধের সময় উহা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। অতঃপর অষ্টম হিজরীতে আওতাস যুদ্ধের সময় শুধু তিন দিনের জন্যই ইহাকে মোবাহ করা হয়। অতঃপর চিরদিনের জন্যই ইহা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। সহীহ্ মুসলিমে আছে, নবী করীম (ﷺ) বলিয়াছেন, “আমি তোমাদের জন্য মোতা বিবাহের অনুমতি দিয়াছিলাম, এখন আল্লাহ্ উহাকে কিয়ামত অবধির জন্য হারাম করিয়া দিয়াছেন।” এছাড়া এ ব্যাপারে আরও বহু হাদীস রহিয়াছে, ইহার উপরই সকল ইমাম ও ফকীহগণের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। শিয়ারা যে বলিয়া থাকেন, হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) ইহাকে মোবাহ মনে করিতেন, তাহা ঠিক নহে। কেননা, বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়াছে যে, তিনি তাহার এই মত হইতে পরে 'রুজু' করিয়াছিলেন। অর্থাৎ, বিরত হইয়াছিলেন।
এখানে একথা জানা আবশ্যক যে, যখন উহা মোবাহ ছিল, তখনও কেবল সফরেই মোবাহ ছিল, যেখানে তাহাদের বিবিরা তাহাদের সাথে থাকিত না এবং তাহাদের পক্ষে ধৈর্যধারণ করা অসম্ভব হইয়া পড়িত। তাই সাহাবী ইবনে আবী আমর বলেন, ইহা মোবাহ ছিল। যেমন মৃত্যু সঙ্কটে পতিত ব্যক্তির পক্ষে মোবাহ হয় মরা ও শূকর। (মুসলিম) ঘরে বাড়ীতে থাকাকালে ইহা কাহারও পক্ষে কখনও মোবাহ ছিল না।
আওতাস যুদ্ধ মক্কা বিজয় যুদ্ধের পর সাথে সাথেই ঘটিয়াছিল বিধায় কেহ কেহ মোতার ঘটনাকে মক্কা বিজয় যুদ্ধের সাথে জুড়িয়া দিয়াছেন। বস্তুত স্থান দুই হইলেও সফর ছিল এক।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৩১৪৮ | মুসলিম বাংলা