মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৩- উত্তরাধিকার সম্পত্তি ও ওয়াসিয়্যাত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩০৪২
- উত্তরাধিকার সম্পত্তি ও ওয়াসিয়্যাত অধ্যায়
১৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - ফারায়িয (মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টন সম্বন্ধীয়) ও অন্তিম উপদেশ বা আদেশ)
৩০৪২। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ নির্ধারিত দায়-ভাগসমূহ উহাদের হকদারদিগকে পৌঁছাইয়া দিবে। তারপর যাহা বাঁচিবে তাহা নিকটতম পুরুষ ব্যক্তির। মোত্তাঃ
كتاب الفرائض والوصايا
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلْحِقُوا الْفَرَائِضَ بِأَهْلِهَا فَمَا بَقِيَ فَهُوَ لِأَوْلَى رَجُلٍ ذكر»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নিকটতম পুরুষ ব্যক্তির – অর্থাৎ, পুরুষ আসাবাদের (আসাবা বে-নফসিহীদের) মধ্যে নিকটতম ব্যক্তির। ইহা হইতে বুঝা গেল, উত্তরাধিকারের ব্যাপারে শরীঅত আত্মীয়তার নিকটত্ব ও দূরত্বের প্রতিই লক্ষ্য রাখিয়াছে। আত্মীয়ের দারিদ্র্যের প্রতি নহে। অর্থাৎ, যে যত নিকটে হইবে সে-ই তত অগ্রাধিকার লাভ করিবে। যথা—মৃতের সন্তান ও ভাই আছে, সম্পত্তি সন্তান পাইবে। এইরূপে সন্তান ও নাতি আছে, সম্পত্তি সন্তান পাইবে; নাতি পাইবে না। বোখারী শরীফে আছে, উত্তরাধিকার আইন বিশেষজ্ঞ সাহাবী হযরত যায়দ ইবনে সাবেত (রাঃ) বলিয়াছেন, لا يرث ابن الابن مع الابن 'পুত্র থাকিতে নাতি পাইবে না।' সুতরাং ইহা হইল হাদীসের ব্যাখ্যা এবং ইহার উপরই সাহাবীদের এজমা হইয়া গিয়াছে। আর ইমামগণও ইহার উপর একমত। 
শরীঅত যদি দারিদ্র্যকেই উত্তরাধিকারের নীতিরূপে গ্রহণ করিত, তাহা হইলে আত্মীয়দের মধ্যে যাহারা দরিদ্র তাহারাই উত্তরাধিকার লাভ করিত, অন্তত বেশীর ভাগ লাভ করিত। বস্তুত তাহা নহে।
বঞ্চিত নাতিঃ বাকী রহিল নাতির অসহায়তার কথা। ইহার জন্য শরীঅত দুইটি ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়াছে। (ক) নাবালেগ অবস্থায় তাহার লালন-পালনভার বাধ্যতামূলকভাবে দাদার (দাদার পর চাচার) উপর দিয়াছে। দাদা, চাচা অসমর্থ হইলে স্বয়ং সরকার এ দায়িত্ব গ্রহণ করিতে বাধ্য। এক নম্বর হাদীস হইতে তাহা বুঝা গিয়াছে। (খ) দাদাকে নাতির জন্য হেবা অথবা ওছিয়ত করিতে এখতিয়ার দিয়াছে এবং উহার জন্য উৎসাহিত করিয়াছে। সাহাবীদের মধ্যে হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ), তাবেয়ীদের মধ্যে হযরত মাসরূক, তাউস ইবনে কায়সান, আয়াস ইবনে সালাবা ও হযরত কাতাদা এবং পরবর্তী ইমামগণের মধ্যে দাউদ যাহেরী ও ইবনে জরীর তাবারী এইরূপ নাতির জন্য ওছিয়ত করাকে ফরয বলিয়াছেন। হযরত আলী (রাঃ) বলিয়াছেন, “যে ব্যক্তি মৃত্যুকালে এমন আত্মীয়ের জন্য ওছিয়ত করিয়া মরে নাই, যে তাহার মীরাসে অংশ পাইবে না, তাহার আমলের খাতেমা গোনাহর সাথে হইয়াছে।” (তফসীরে রূহুল মা'আনী, ৩য় খঃ, পৃঃ ৫৫। আহকামুল কুরআন – যফর আহমদ ওসমানী, ১ম খণ্ড, পৃঃ ১১০)
শরীঅত যদি দারিদ্র্যকেই উত্তরাধিকারের নীতিরূপে গ্রহণ করিত, তাহা হইলে আত্মীয়দের মধ্যে যাহারা দরিদ্র তাহারাই উত্তরাধিকার লাভ করিত, অন্তত বেশীর ভাগ লাভ করিত। বস্তুত তাহা নহে।
বঞ্চিত নাতিঃ বাকী রহিল নাতির অসহায়তার কথা। ইহার জন্য শরীঅত দুইটি ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়াছে। (ক) নাবালেগ অবস্থায় তাহার লালন-পালনভার বাধ্যতামূলকভাবে দাদার (দাদার পর চাচার) উপর দিয়াছে। দাদা, চাচা অসমর্থ হইলে স্বয়ং সরকার এ দায়িত্ব গ্রহণ করিতে বাধ্য। এক নম্বর হাদীস হইতে তাহা বুঝা গিয়াছে। (খ) দাদাকে নাতির জন্য হেবা অথবা ওছিয়ত করিতে এখতিয়ার দিয়াছে এবং উহার জন্য উৎসাহিত করিয়াছে। সাহাবীদের মধ্যে হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ), তাবেয়ীদের মধ্যে হযরত মাসরূক, তাউস ইবনে কায়সান, আয়াস ইবনে সালাবা ও হযরত কাতাদা এবং পরবর্তী ইমামগণের মধ্যে দাউদ যাহেরী ও ইবনে জরীর তাবারী এইরূপ নাতির জন্য ওছিয়ত করাকে ফরয বলিয়াছেন। হযরত আলী (রাঃ) বলিয়াছেন, “যে ব্যক্তি মৃত্যুকালে এমন আত্মীয়ের জন্য ওছিয়ত করিয়া মরে নাই, যে তাহার মীরাসে অংশ পাইবে না, তাহার আমলের খাতেমা গোনাহর সাথে হইয়াছে।” (তফসীরে রূহুল মা'আনী, ৩য় খঃ, পৃঃ ৫৫। আহকামুল কুরআন – যফর আহমদ ওসমানী, ১ম খণ্ড, পৃঃ ১১০)