মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১২- ক্রয় - বিক্রয়ের অধ্যায়
হাদীস নং: ২৯৮৫
১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - ভাড়ায় প্রদান ও শ্রম বিক্রি
২৯৮৫। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের মধ্যে এক দল এক পানির কূপওয়ালাদের নিকট পৌঁছিলেন, যাহাদের একজনকে বিচ্ছুতে অথবা সাপে কাটিয়াছিল। কৃপওয়ালাদের এক ব্যক্তি আসিয়া বলিল, আপনাদের মধ্যে কোন মন্ত্র জানা লোক আছে কি? এই পানির ধারে একজন বিচ্ছুতে কাটা বা সাপে কাটা লোক রহিয়াছে। তখন ইঁহাদের মধ্য হইতে একজন (আবু সায়ীদ খুদরী) গেলেন এবং কতক ভেড়ার বিনিময়ে তাহার উপর সূরা ফাতেহা পড়িয়া ফুঁ দিলেন। ইহাতে সে ভাল হইয়া গেল এবং সাহাবী ভেড়াগুলি লইয়া আপন সহচরদের নিকট আসিলেন। তাঁহারা ইহা না-পছন্দ করিলেন এবং বলিতে লাগিলেন, আপনি কি আল্লাহর কিতাবের বিনিময়ে উজুরা লইলেন? অবশেষে তাঁহারা মদীনায় পৌঁছিলেন এবং বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! ইনি কিতাবুল্লাহর বিনিময়ে উজুরা গ্রহণ করিয়াছেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ তোমরা যেসব জিনিসের বিনিময়ে উজুরা গ্রহণ করিয়া থাক, উহাদের মধ্যে হইল কিতাবুল্লাহ্ অধিকতর উপযোগী। —বোখারী
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ نَفَرًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرُّوا بِمَاءٍ فبهم لَدِيغٌ أَوْ سَلِيمٌ فَعَرَضَ لَهُمْ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْمَاءِ فَقَالَ: هَلْ فِيكُمْ مِنْ رَاقٍ؟ إِن فِي المَاء لَدِيغًا أَوْ سَلِيمًا فَانْطَلَقَ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَقَرَأَ بِفَاتِحَة الْكتاب على شَاءَ فبرئ فَجَاءَ بِالشَّاءِ إِلَى أَصْحَابِهِ فَكَرِهُوا ذَلِكَ وَقَالُوا: أَخَذْتَ عَلَى كِتَابِ اللَّهِ أَجْرًا حَتَّى قَدِمُوا الْمَدِينَةَ فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخَذَ عَلَى كِتَابِ اللَّهِ أَجْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَحَقَّ مَا أَخَذْتُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا كِتَابُ اللَّهِ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ وَفِي رِوَايَةٍ: «أَصَبْتُمُ اقْسِمُوا وَاضْرِبُوا لِي مَعَكُمْ سَهْمًا»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ইহাতে বুঝা গেল যে, (১) মন্ত্ররূপে কোরআন পড়া এবং উহার বিনিময়ে উজরত লওয়া; এইরূপে কোরআন শিক্ষা দিয়া বা কোরআন লিখিয়া উজরত লওয়া জায়েয আছে। হযরত হাসান বসরী, শা'বী, ইকরেমা, সুফিয়ান সাওরী, ইমাম মালেক, শাফেয়ী এবং ইমাম আবু হানীফার সহচরবৃন্দ ইহাই বলেন। পক্ষান্তরে ইমাম যুহরী, ইমাম আবু হানীফা ও ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ সামনের ওবাদা ইবনে সামেতের হাদীস অনুসারে ইহাকে নাজায়েয বলেন। (২) হুযুরের ভাগের নির্দেশ বাধ্যতামূলক ছিল না। কেননা, উহা ঐ সাহাবীর প্রাপ্য ছিল। (৩) হুযূর নিজের জন্য ভাগ রাখার নির্দেশ সাহাবীদের খোশ করার অথবা ইহা যে জায়েয এই কথা বুঝাইবার উদ্দেশ্যে দিয়াছিলেন। (মেরকাত)
