মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১২- ক্রয় - বিক্রয়ের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৮৩৭
৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়
২৮৩৭। হযরত সাহল ইবনে আবু হাসমা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করিয়াছেন — তৈয়ারী (প্রস্তুত) খুর্মার বিনিময়ে (গাছের উপরিস্থিত) খেজুর ফল বিক্রি করিতে। অবশ্য আরিয়্যার অনুমতি দিয়াছেন। আরিয়্যা বলে ফলকে অনুমান করিয়া বিক্রি করা—সেই অনুমান অনুসারে খুর্মা দিবে। আরিয়্যার ফলের ক্রেতা উহা পাকা ও ভাজা অবস্থায় খাইবে। মোত্তাঃ
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ أَبِي حَثْمَةَ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَن بيعِ التمْر بالتمْرِ إِلَّا أَنَّهُ رَخَّصَ فِي الْعَرِيَّةِ أَنْ تُبَاعَ بِخَرْصِهَا تَمْرًا يَأْكُلُهَا أَهْلُهَا رُطَبًا

হাদীসের ব্যাখ্যা:

আরিয়্যা নিষিদ্ধ মোযাবানা রকমেরই হয়, কিন্তু আরিয়্যার ক্ষেত্রে প্রকৃত প্রস্তাবে ক্রয়-বিক্রয় হয় না, ক্রয়-বিক্রয়ের আকার-আকৃতি হয় শুধু। তাই মোযাবানা নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও আরিয়্যা জায়েয। হানাফী মাযহাব মতে উহার প্রকৃত রূপ এই—
কোন বাগানের মালিক তাহার এক দুইটি খেজুর গাছ কাহাকেও এই বলিয়া দিয়াছে যে, এই গাছের ফল তুমি নিও— তোমাকে দিলাম। বাগানের মালিক তাহার বাগানের সমস্ত গাছের খেজুর পাড়িয়া শুষ্ক খুর্মা করিয়া ফেলিয়াছে। শুধু ঐ এক দুইটি গাছের ফল এখনও গাছেই রহিয়াছে। এমতাবস্থায় ঐ মালিকের খাহেশ হইয়াছে তাজা পাকা খেজুর খাইবার। অথচ তাহার গাছসমূহে উহা নাই; আছে একমাত্র ঐ গাছে, যেই গাছের ফল অপর ব্যক্তিকে দেওয়ার কথা বলিয়া রাখিয়াছে। সুতরাং মালিক ঐ ব্যক্তিকে তাহার প্রাপ্য গাছের ফলের পরিমাণে খুর্মা দিয়া ঐ গাছের খেজুর বিনিময় করিয়া লয়। এই বিনিময় নিষিদ্ধ মোযাবানারই আকারের, কিন্তু ইহা জায়েয। কারণ, এই বিনিময় বস্তুত ক্রয়-বিক্রয় নহে। কারণ, ঐ গাছের ফল এখনও বাগানের মালিকেরই স্বত্ব; যাহাকে দেওয়া হইয়াছে তাহার হস্তগত না হওয়া পর্যন্ত সে উহার মালিক হয় নাই। সুতরাং এই বিনিময় ক্রয়-বিক্রয় নহে, বরং এক দানের পরিবর্তে অপর দান ।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ২৮৩৭ | মুসলিম বাংলা