মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১১- হজ্জ্বের অধ্যায়
হাদীস নং: ২৭০৭
১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং হজ্জ ছুটে যাওয়া
২৭০৭। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (৬ষ্ঠ হিজরীতে উমরা করিতে যাইয়া কুরাইশ কর্তৃক) বাধাপ্রাপ্ত হইলেন। অতঃপর মাথা মুড়াইলেন, বিবিদের সাথে সহবাস করিলেন এবং আপন কোরবানীর পশু জবাই করিলেন— অবশেষে পরবর্তী বৎসর উহার কাযাস্বরূপ উমরা করিলেন। বুখারী
بَابُ الْإِحْصَارِ وَفَوْتِ الْحَجِّ: الْفَصْل الأول
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَدْ أُحْصِرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَحَلَقَ رَأَسَهُ وَجَامَعَ نِسَاءَهُ وَنَحَرَ هَدْيَهُ حَتَّى اعْتَمَرَ عَامًا قَابلا. رَوَاهُ البُخَارِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
বাধাপ্রাপ্ত হওয়া এবং হজ্জ ফউত হওয়া
কোরআনে রহিয়াছেঃ
وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ ۚ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ – (بقرة ١٩٦)
“এবং পূর্ণ কর হজ্জ ও উমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে। যখন তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হইবে, তখন তোমাদের পক্ষে যাহা ময়সসর হয় কোরবানীর পশু (কোরবানী করিবে) ।” —(সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৬)
'বাধাপ্রাপ্ত হওয়া'—মূলে এহ্সার (احصان) শব্দ রহিয়াছে, যাহার অর্থ বাধা দেওয়া বা বাধাপ্রাপ্ত হওয়া। শরীআতে ইহার অর্থ হজ্জ ও উমরা হইতে বাধা দেওয়া বা বাধাপ্রাপ্ত হওয়া।
আরবের ব্যবহার অনুসারে ইহা শত্রুর বা রোগ ইত্যাদির বাধা যে কোন বাধাকেই বুঝায়। এ ব্যাপারে ইমাম আ'যম আবু হানীফার মত ইহাই। পক্ষান্তরে শাফেয়ী প্রমুখ অপর ইমামগণ শুধু শত্রুর বাধাকেই বুঝেন। কেননা, হুযূর ৬ষ্ঠ হিজরীতে উমরার নিয়তে বাহির হইয়া শত্রু কর্তৃকই বাধাপ্রাপ্ত হন এবং হুদায়বিয়া হইতে ফিরিয়া আসেন। ইমাম আ'যমের মতে ঘটনা বিশিষ্ট হইলেও উহার হুকুম বা বিধান সাধারণ অর্থাৎ, যেকোন বাধারই এই হুকুম।
হজ্জ বা উমরার এহরাম বাঁধিয়া বাধাপ্রাপ্ত হইলে কোরবানীর পশু জবাই করিয়া ও মাথা মুড়াইয়া হালাল হইয়া যাইবে এবং পরে উহা কাযা করিবে, ইহাই শরীআতের বিধান। এইরূপে কোন ব্যক্তির আরাফাতে অবস্থান ফউত হইলে সেও আপাততঃ ঐ নিয়মে হালাল হইয়া যাইবে এবং পরে উহা কাযা করিবে।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এখানে হুযুরের কাজের সমষ্টি বর্ণনা করিতেছেন, কাজের ক্রম নহে। ক্রম হিসাবে জবাই আগে; পরে মাথা মুড়ান, যেমন পরের হাদীসে রহিয়াছে।
কোরআনে রহিয়াছেঃ
وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ ۚ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ – (بقرة ١٩٦)
“এবং পূর্ণ কর হজ্জ ও উমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে। যখন তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হইবে, তখন তোমাদের পক্ষে যাহা ময়সসর হয় কোরবানীর পশু (কোরবানী করিবে) ।” —(সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৬)
'বাধাপ্রাপ্ত হওয়া'—মূলে এহ্সার (احصان) শব্দ রহিয়াছে, যাহার অর্থ বাধা দেওয়া বা বাধাপ্রাপ্ত হওয়া। শরীআতে ইহার অর্থ হজ্জ ও উমরা হইতে বাধা দেওয়া বা বাধাপ্রাপ্ত হওয়া।
আরবের ব্যবহার অনুসারে ইহা শত্রুর বা রোগ ইত্যাদির বাধা যে কোন বাধাকেই বুঝায়। এ ব্যাপারে ইমাম আ'যম আবু হানীফার মত ইহাই। পক্ষান্তরে শাফেয়ী প্রমুখ অপর ইমামগণ শুধু শত্রুর বাধাকেই বুঝেন। কেননা, হুযূর ৬ষ্ঠ হিজরীতে উমরার নিয়তে বাহির হইয়া শত্রু কর্তৃকই বাধাপ্রাপ্ত হন এবং হুদায়বিয়া হইতে ফিরিয়া আসেন। ইমাম আ'যমের মতে ঘটনা বিশিষ্ট হইলেও উহার হুকুম বা বিধান সাধারণ অর্থাৎ, যেকোন বাধারই এই হুকুম।
হজ্জ বা উমরার এহরাম বাঁধিয়া বাধাপ্রাপ্ত হইলে কোরবানীর পশু জবাই করিয়া ও মাথা মুড়াইয়া হালাল হইয়া যাইবে এবং পরে উহা কাযা করিবে, ইহাই শরীআতের বিধান। এইরূপে কোন ব্যক্তির আরাফাতে অবস্থান ফউত হইলে সেও আপাততঃ ঐ নিয়মে হালাল হইয়া যাইবে এবং পরে উহা কাযা করিবে।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এখানে হুযুরের কাজের সমষ্টি বর্ণনা করিতেছেন, কাজের ক্রম নহে। ক্রম হিসাবে জবাই আগে; পরে মাথা মুড়ান, যেমন পরের হাদীসে রহিয়াছে।
