মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১১- হজ্জ্বের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৫৯২
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - আরাফায় অবস্থান প্রসঙ্গে
২৫৯২। (তাবেয়ী) মুহাম্মাদ ইবনে আবু বকর সাকাফী হইতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একবার হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করিলেন, তখন তাঁহারা উভয়ে ভোরে মিনা হইতে আরাফাতের দিকে যাইতেছিলেন, আপনারা এই দিনে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে কি করিতেন? তিনি বলিলেন, আমাদের মধ্যে যে 'তালবিয়া' বলিতে চাহিত, তালবিয়া বলিত, অথচ ইহাতে তাহার প্রতি কোন আপত্তি করা হইত না। এইরূপে আমাদের মধ্যে যে তকবীর বলিতে চাহিত, সে তকবীর বলিত, অথচ ইহাতে তাহার প্রতি কোন আপত্তি করা হইত না। মোত্তাঃ
بَابُ الْوُقُوْفِ بِعَرَفَةَ: الْفَصْل الأول
عَن محمدِ بن أبي بكرٍ الثَقَفيُّ أَنَّهُ سَأَلَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ وَهُمَا غَادِيَانِ مِنْ مِنًى إِلَى عَرَفَةَ: كَيْفَ كُنْتُمْ تَصْنَعُونَ فِي هَذَا الْيَوْمِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالَ: كَانَ يُهِلُّ مِنَّا الْمُهِلُّ فَلَا يُنْكَرُ عَلَيْهِ وَيُكَبِّرُ الْمُكَبِّرُ مِنَّا فَلَا يُنكَرُ عَلَيْهِ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

আরাফাতে অবস্থান

'আরাফাত' একটি নির্দিষ্ট স্থান বা ময়দানের নাম— যাহা মক্কা হইতে তায়েফের পথে মুযদালিফার অদূরে অবস্থিত এবং যাহার উত্তর প্রান্তে 'জাবালে রহমত' ও উত্তর-পূর্ব প্রান্তে 'জাবালে আরাফাত' নামে দুইটি ছোট পাহাড় অবস্থিত।
বলা হইয়া থাকে যে, বেহেশত হইতে বাহির হওয়ার পর হযরত আদম ও হাওয়া (আঃ) এখানেই প্রথমে একে অন্যের পরিচয় লাভ করেন। এ কারণে ইহার এই নাম হইয়াছে। তখন ইহাকে আরবী ‘মা’রেফাত' শব্দ হইতে উৎপন্ন হইয়াছে বলিয়া মনে করিতে হইবে। মা'রেফাত শব্দের অর্থ হইল, জানা, চেনা বা পরিচয়। আর কাহারও মতে বান্দাগণ এখানে এক বিশেষ রকমের এবাদত ও আনুগত্যের দ্বারা আল্লাহর নিকট নিজেদের পরিচয় দিয়া থাকে বলিয়াই ইহার এই নাম হইয়াছে ইত্যাদি।
আরাফাতে অবস্থান হজ্জের একটি রোকন বা ফরয। যিলহজ্জের ৯ তারিখের সূর্য ঢলা হইতে পরবর্তী রাত্রি ফজর হওয়া পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এক মুহূর্ত মাত্র অবস্থান করিলেও ফরয আদায় হইয়া যাইবে; কিন্তু সূর্য ঢলা হইতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা সুন্নত।

'তকবীর' বলিত'—এই তকবীর এইরূপ, আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর ; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ”—এই তকবীর বলা হানাফী মাযহাব মতে (ছাহেবাইনের মতে) এমন প্রত্যেক ব্যক্তির পক্ষে ওয়াজিব, যে হচ্ছে শরীক হয় নাই এবং ফরয নামায পড়িতেছে। ইহা নয় তারিখের ফজর হইতে তের তারিখের আসর পর্যন্ত। আর যাহারা হজ্জে শরীক হইয়াছে তাহাদের পক্ষে ১০ তারিখে কাঁকর মারা পর্যন্ত তালবিয়া বলাই সুন্নত।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ২৫৯২ | মুসলিম বাংলা