মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১১- হজ্জ্বের অধ্যায়
হাদীস নং: ২৫৫৯
২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - বিদায় হজের বৃত্তান্তের বিবরণ
২৫৫৯। (তাবেয়ী) আতা ইবনে আবু রাবাহ বলেন, আমি এবং আমার সাথে কতক লোক হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহাবীগণ শুধু হজ্জের এহরাম বাঁধিয়াছিলাম। আতা বলেন, হযরত জাবের আরও বলিয়াছেন, নবী করীম (ﷺ) যিলহজ্জের চারি তারিখ অতীতে মক্কায় পৌঁছিলেন এবং আমাদিগকে এহরাম ছাড়িয়া হালাল হইতে নির্দেশ দিলেন। আতা জাবেরের মাধ্যমে বলেন যে, হুযূর ইহাও বলিয়াছেন, তোমরা হালাল হও এবং আপন স্ত্রীর সাথে মিল! আতা পুনঃ বলেন যে, ইহাতে হুযূর তাহাদিগকে বাধ্য করিলেন না; বরং স্ত্রীদেরে তাহাদের জন্য হালাল করিয়া দিলেন। জাবের বলেন, আমরা পরস্পরে বলিতে লাগিলাম, যখন আমাদের ও আরাফাতে উপস্থিত হওয়ার মধ্যে মাত্র পাঁচ দিন বাকী আছে, এমন সময় হুযূর আমাদিগকে স্ত্রীর সহিত মিলিতে অনুমতি দিলেন, তবে কি আমরা আরাফাতে উপস্থিত হইব, আর তখন আমাদের পুরুষাঙ্গ হইতে শুক্র ঝরিতে থাকিবে ? আতা বলেন, এ সময় জাবের আপন হাত নাড়িয়া ইঙ্গিত করিলেন, যেন আমি তাঁহার হাত নাড়ার ইঙ্গিত এখনও দেখিতেছি। জাবের বলেন, তখন নবী করীম (ﷺ) (ভাষণ দানের জন্য) আমাদের মধ্যে দাঁড়াইলেন এবং বলিলেন, “তোমরা জান যে, আমি তোমাদের অপেক্ষা আল্লাহকে অধিক ভয় করি এবং তোমাদের অপেক্ষা অধিক সত্য বলি ও তোমাদের অপেক্ষা অধিক ভাল কাজ করি, আমি যদি কোরবানীর পশু সাথে না আনিতাম, আমিও তোমাদের ন্যায় হালাল হইয়া যাইতাম, আর যদি আমি আমার ব্যাপারে পূর্বে বুঝিতাম যাহা আমি পরে বুঝিয়াছি, তবে আমি কখনও কোরবানীর পশু সাথে আনিতাম না। (যাহার কারণে আমি হালাল হইতে পারিতেছি না।) সুতরাং তোমরা হালাল হইয়া যাও।” অতএব আমরা হালাল হইয়া গেলাম এবং তাঁহার কথা শুনিলাম ও তাঁহার কথা মানিলাম।
আতা বলেন, হযরত জাবের বলিয়াছেন, এ সময় আলী তাঁহার কর্মস্থল হইতে আগমন করিলেন। তখন হুযূর তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কিসের এহরাম বাঁধিয়াছ? উত্তরে আলী বলিলেন, আমি তখন বলিয়াছি, “আমি এরাম বাঁধিতেছি যাহার এহরাম বাঁধিয়াছেন নবী করীম (ﷺ)।” তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহাকে বলিলেন, তবে তুমি (কেরানের জন্য) পশু কোরবানী দিও এবং এখন মুহরিম থাকিয়া যাও ! জাবের বলেন, আলী তাঁহার জন্য কোরবানীর পশু আনিয়াছিলেন। (জাবের বলেন,) এ সময় সুরাকা ইবনে মালেক ইবনে জু'শুম দাঁড়াইয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ইহা (অর্থাৎ, হজ্জের সাথে উমরা করা) কি আমাদের এ বৎসরের জন্য না বরাবরের জন্য ? হুযূর বলিলেন, বরাবরের জন্য। – মুসলিম
আতা বলেন, হযরত জাবের বলিয়াছেন, এ সময় আলী তাঁহার কর্মস্থল হইতে আগমন করিলেন। তখন হুযূর তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কিসের এহরাম বাঁধিয়াছ? উত্তরে আলী বলিলেন, আমি তখন বলিয়াছি, “আমি এরাম বাঁধিতেছি যাহার এহরাম বাঁধিয়াছেন নবী করীম (ﷺ)।” তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহাকে বলিলেন, তবে তুমি (কেরানের জন্য) পশু কোরবানী দিও এবং এখন মুহরিম থাকিয়া যাও ! জাবের বলেন, আলী তাঁহার জন্য কোরবানীর পশু আনিয়াছিলেন। (জাবের বলেন,) এ সময় সুরাকা ইবনে মালেক ইবনে জু'শুম দাঁড়াইয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ইহা (অর্থাৎ, হজ্জের সাথে উমরা করা) কি আমাদের এ বৎসরের জন্য না বরাবরের জন্য ? হুযূর বলিলেন, বরাবরের জন্য। – মুসলিম
عَنْ عَطَاءٍ قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ فِي نَاسٍ مَعِي قَالَ: أَهْلَلْنَا أَصْحَابَ مُحَمَّد بِالْحَجِّ خَالِصًا وَحْدَهُ قَالَ عَطَاءٌ: قَالَ جَابِرٌ: فَقَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صُبْحَ رَابِعَةٍ مَضَتْ مِنْ ذِي الْحِجَّةِ فَأَمَرَنَا أَنْ نَحِلَّ قَالَ عَطَاءٌ: قَالَ: «حِلُّوا وَأَصِيبُوا النِّسَاءَ» . قَالَ عَطَاءٌ: وَلَمْ يَعْزِمْ عَلَيْهِمْ وَلَكِنْ أَحَلَّهُنَّ لَهُمْ فَقُلْنَا لَمَّا لَمْ يَكُنْ بَيْنَنَا وَبَيْنَ عَرَفَةَ إِلَّا خَمْسٌ أَمَرَنَا أَنْ نُفْضِيَ إِلَى نِسَائِنَا فَنَأْتِيَ عرَفَةَ تَقْطُرُ مَذَاكِيرُنَا الْمَنِيَّ. قَالَ: «قَدْ عَلِمْتُمْ أَنِّي أَتْقَاكُمْ لِلَّهِ وَأَصْدَقُكُمْ وَأَبَرُّكُمْ وَلَوْلَا هَدْيِي لَحَلَلْتُ كَمَا تَحِلُّونَ وَلَوِ اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِي مَا اسْتَدْبَرْتُ لَمْ أَسُقِ الْهَدْيَ فَحِلُّوا» فَحَلَلْنَا وَسَمِعْنَا وَأَطَعْنَا قَالَ عَطَاءٌ: قَالَ جَابِرٌ: فَقَدِمَ عَلِيٌّ مِنْ سِعَايَتِهِ فَقَالَ: بِمَ أَهْلَلْتَ؟ قَالَ بِمَا أَهَلَّ بِهِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَأَهْدِ وَامْكُثْ حَرَامًا» قَالَ: وَأَهْدَى لَهُ عَلِيٌّ هَدْيًا فَقَالَ سُرَاقَةُ بْنُ مَالِكِ بْنِ جُعْشُمٍ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ألعامنا هَذَا أم لأبد؟ قَالَ: «لأبد» . رَوَاهُ مُسلم
হাদীসের ব্যাখ্যা:
'শুধু হজ্জের এহরাম বাঁধিয়াছিলেন' – এখানে হযরত জাবের নিজের এবং নিজের সাথীদের কথাই বলিতেছেন। সমস্ত সাহাবীর কথা নহে। কেননা, হযরত আয়েশার হাদীসে রহিয়াছে, আমাদের কেহ হজ্জের আর কেহ উমরার এহরাম বাঁধিয়াছিলেন। বস্তুতঃ লক্ষাধিক লোকের মধ্যে কে কি করিয়াছিল তাহা সকলের পক্ষে জানা সম্ভবপরও ছিল না।
