মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১১- হজ্জ্বের অধ্যায়
হাদীস নং: ২৫৫৭
২. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিদায় হজের বৃত্তান্তের বিবরণ
২৫৫৭। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জে তামাত্তু' করিয়াছিলেন হজ্জের সাথে উমরা মিলাইয়া। তিনি ফুলহুলায়ফা হইতে কোরবানীর পশু সাথে লইলেন এবং প্রথমে তালবিয়া বলিলেন উমরার, অতঃপর তালবিয়া বলিলেন হজ্জের। সুতরাং লোকেরাও তামাত্তু' করিল নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে হজ্জের সাথে উমরা মিলাইয়া। তাহাদের মধ্যে কেহ কোরবানীর পশু সঙ্গে লইল, আর কেহ তাহা সাথে লইল না। অতঃপর যখন নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় পৌঁছিলেন, লোকদের বলিলেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোরবানীর পশু সাথে আনিয়াছ, সে যেন হালাল মনে না করে এমন কোন বিষয়কে, যাহা (এহরামের কারণে) তাহার প্রতি হারাম হইয়া গিয়াছে (অর্থাৎ, এহরাম না খোলে), যাবৎ না সে আপন হজ্জ সম্পন্ন করে, আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোরবানীর পশু সাথে আনে নাই, সে যেন বায়তুল্লাহর তওয়াফ ও সাফা মারওয়ার সায়ী করে এবং মাথা ছাটাইয়া হালাল হইয়া যায়। অতঃপর হজ্জের এহরাম বাধে এবং কোরবানীর পশু লয়। আর যে কোরবানীর পশু লইতে পারিল না, সে যেন তিন দিন রোযা রাখে হজ্জের মওসুমে, আর সাত দিন যখন বাড়ীতে ফিরে।
অতএব হুযূর প্রথমে উমরার জন্য বায়তুল্লাহর তওয়াফ করিলেন, যখন মক্কায় পৌঁছিলেন এবং হাজারে আসওয়াদে চুমা দিলেন। তিনি তওয়াফে তিনবার জোরে চলিলেন, আর চারিবার স্বাভাবিকভাবে হ্যাঁটিলেন। যখন তিনি বায়তুল্লাহর তওয়াফ শেষ করিলেন মাকামে ইবরাহীমের নিকট দুই রাকআত (তওয়াফের নামায পড়িলেন এবং সালাম ফিরাইলেন। অতঃপর রওয়ানা হইলেন এবং সাফা মারওয়ায় যাইয়া সাতবার সাফা মারওয়ার সায়ী করিলেন; কিন্তু তৎপর তিনি হালাল করিলেন না (এহরামের কারণে) যাহা তাঁহার প্রতি হারাম হইয়া গিয়াছিল, যাবৎ না আপন হজ্জ সমাপন করিলেন অর্থাৎ, কোরবানীর তারিখে কোরবানী করিলেন এবং (মিনা হইতে) মক্কায় যাইয়া বায়তুল্লাহর তওয়াফ করিলেন। অতঃপর পূর্ণ হালাল হইয়া গেলেন এহরামের কারণে যাহা তাহার প্রতি হারাম হইয়া গিয়াছিল তাহা হইতে। আর লোকদের মধ্যে যে কোরবানীর পশু সাথে লইয়াছিল সেও সেই অনুরূপ করিল যাহা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করিয়াছিলেন। মোত্তাঃ
অতএব হুযূর প্রথমে উমরার জন্য বায়তুল্লাহর তওয়াফ করিলেন, যখন মক্কায় পৌঁছিলেন এবং হাজারে আসওয়াদে চুমা দিলেন। তিনি তওয়াফে তিনবার জোরে চলিলেন, আর চারিবার স্বাভাবিকভাবে হ্যাঁটিলেন। যখন তিনি বায়তুল্লাহর তওয়াফ শেষ করিলেন মাকামে ইবরাহীমের নিকট দুই রাকআত (তওয়াফের নামায পড়িলেন এবং সালাম ফিরাইলেন। অতঃপর রওয়ানা হইলেন এবং সাফা মারওয়ায় যাইয়া সাতবার সাফা মারওয়ার সায়ী করিলেন; কিন্তু তৎপর তিনি হালাল করিলেন না (এহরামের কারণে) যাহা তাঁহার প্রতি হারাম হইয়া গিয়াছিল, যাবৎ না আপন হজ্জ সমাপন করিলেন অর্থাৎ, কোরবানীর তারিখে কোরবানী করিলেন এবং (মিনা হইতে) মক্কায় যাইয়া বায়তুল্লাহর তওয়াফ করিলেন। অতঃপর পূর্ণ হালাল হইয়া গেলেন এহরামের কারণে যাহা তাহার প্রতি হারাম হইয়া গিয়াছিল তাহা হইতে। আর লোকদের মধ্যে যে কোরবানীর পশু সাথে লইয়াছিল সেও সেই অনুরূপ করিল যাহা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করিয়াছিলেন। মোত্তাঃ
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: تَمَتَّعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ فَسَاقَ مَعَهُ الْهَدْيَ مِنْ ذِي الْحُلَيْفَةِ وَبَدَأَ فَأَهَلَّ بِالْعُمْرَةِ ثُمَّ أَهَلَّ بِالْحَجِّ فَتَمَتَّعَ النَّاسُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ فَكَانَ مِنَ النَّاسِ مَنْ أَهْدَى وَمِنْهُمْ مَنْ لَمْ يُهْدِ فَلَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ قَالَ لِلنَّاسِ: «مَنْ كَانَ مِنْكُمْ أَهْدَى فَإِنَّهُ لَا يَحِلُّ مِنْ شَيْءٍ حَرُمَ مِنْهُ حَتَّى يَقْضِيَ حَجَّهُ وَمَنْ لَمْ يَكُنْ مِنْكُمْ أَهْدَى فَلْيَطُفْ بِالْبَيْتِ وَبِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَلْيُقَصِّرْ وَلْيَحْلِلْ ثُمَّ لِيُهِلَّ بِالْحَجِّ وليُهد فمنْ لم يجدْ هَديا فيلصم ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فِي الْحَجِّ وَسَبْعَةً إِذَا رَجَعَ إِلَى أَهْلِهِ» فَطَافَ حِينَ قَدِمَ مَكَّةَ وَاسْتَلَمَ الرُّكْنَ أَوَّلَ شَيْءٍ ثُمَّ خَبَّ ثَلَاثَةَ أَطْوَافٍ وَمَشَى أَرْبَعًا فَرَكَعَ حِينَ قَضَى طَوَافَهُ بِالْبَيْتِ عِنْدَ الْمَقَامِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ فَانْصَرَفَ فَأَتَى الصَّفَا فَطَافَ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ سَبْعَةَ أَطْوَافٍ ثُمَّ لَمْ يَحِلَّ مِنْ شَيْءٍ حَرُمَ مِنْهُ حَتَّى قَضَى حَجَّهُ وَنَحَرَ هَدْيَهُ يَوْمَ النَّحْرِ وَأَفَاضَ فَطَافَ بِالْبَيْتِ ثُمَّ حَلَّ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ حَرُمَ مِنْهُ وَفَعَلَ مِثْلَ مَا فَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سَاقَ الْهَدْي من النَّاس
হাদীসের ব্যাখ্যা:
পূর্বেই বলা হইয়াছে যে, হুযূর কারেন ছিলেন। অতএব, এখানে তামাত্তু' আভিধানিক অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে বলিয়া মনে করিতে হইবে। অভিধানে ইহার অর্থ লাভবান হওয়া, উপকার লাভ করা বা ফায়েদা উঠান। অর্থাৎ, হুযূর হজ্জের সাথে উমরা দ্বারাও লাভবান হইয়াছিলেন। তবে পরে যে বলা হইয়াছে, হুযূর প্রথমে উমরার তালবিয়া বলিয়াছিলেন এবং পরে হজ্জের—ইহার অর্থ এই যে, তালবিয়া বলিতে তিনি আগ পরের বাঁধা নিয়মে বলেন নাই। কখনও এইটি আগে বলিয়াছেন কখনও ঐটি।
