মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৬- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬৭৪
৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা
১৬৭৪। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যখন তোমরা কোন মৃত ব্যক্তির জানাযার নামায পড়িবে, তখন তাহার জন্য অন্তরের সহিত খালেস দো'আ করিবে। –আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ্
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا صَلَّيْتُمْ عَلَى الْمَيِّتِ فَأَخْلِصُوا لَهُ الدُّعَاءَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

হাদীসের ব্যাখ্যা:

জানাযার নামায মূলত মায়্যিতের জন্য দু'আ। মৃত্যুর পর মৃতব্যক্তি দু'আর বেশি মুখাপেক্ষী। সে নতুন এক জগতে যাচ্ছে। কবরের জগৎ। অন্ধকার কবরে নিঃসঙ্গ অবস্থায় সে থাকবে। মুনকার-নাকীর তাকে প্রশ্ন করবে। বড়ই কঠিন এক অবস্থা। তার খুব দু'আর প্রয়োজন, যাতে প্রশ্নের উত্তর তার জন্য সহজ হয়ে যায়। অন্ধকার দূর হয়ে আলোর ব্যবস্থা হয়ে যায়। সংকীর্ণ কবর প্রশস্ত হয়ে যায়। জানাযার নামায দ্বারা আল্লাহ তা'আলার কাছে তার মাগফিরাতের সুপারিশ করা হয়। মাগফিরাত হয়ে গেলে কবরের সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। তাই খুব ইখলাসের সঙ্গে, খুব কাকুতি-মিনতির সঙ্গে তার জন্য দু'আ করা উচিত। এজন্যই হাদীছটিতে হুকুম করা হয়েছে যে, তোমরা খালেস দিলে তার জন্য দু'আ করো। দু'আ যত খালেস মনে হবে, ততোই বেশি কবুলের সম্ভাবনা। এদিকে লক্ষ করা দরকার নেই যে, মায়্যিত নেককার না পাপী। আল্লাহ তা'আলার কাছে কে কতখানি মকবুল, তা তিনিই জানেন। সবসময় বাহ্যিক আমল দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। তাছাড়া আল্লাহ তা'আলা মুখাপেক্ষীহীন। তিনি কাউকে পুরস্কার বা শাস্তি দিতে বাধ্য নন। তিনি তাঁর নিজ এখতিয়ারে যার সঙ্গে যেমন ইচ্ছা আচরণ করতে পারেন। কাজেই তাঁর রহমতের প্রয়োজন নেককার-বদকার সকলেরই। সুতরাং জীবিতদের উচিত সাধারণভাবে সকল মায়্যিতের জন্যই খালেস মনে দু'আ করা। এটা ভিন্ন কথা যে, এ দু'আ ও জানাযা কেবল মুসলিম মায়্যিতের জন্যই করা যেতে পারে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. মায়্যিতের জন্য জানাযার নামায পড়া ফরয।

খ. জানাযার নামাযে মায়্যিতের জন্য খালেস মনে দু'আ করতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ১৬৭৪ | মুসলিম বাংলা