মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৬- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬৩০
৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট যা বলতে হয়
১৬৩০। হযরত বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, আমরা একবার নবী করীম (ﷺ)-এর সহিত আসারীদের মধ্যে এক ব্যক্তির জানাযায় গেলাম। আমরা কবরের নিকট গেলাম; কিন্তু তখনও কবর খোঁড়া হয় নাই। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বসিয়া গেলেন এবং আমরাও তাঁহার আশেপাশে বসিয়া গেলাম, যেমন আমাদের মাথায় পাখী বসিয়াছে, (অর্থাৎ, চুপচাপ।) তখন হুযূরের হাতে একটি কাঠের টুকরা ছিল, যদ্দ্বারা তিনি (চিন্তিত ব্যক্তিদের ন্যায়) মাটিতে দাগ কাটিতেছিলেন। অতঃপর তিনি মাথা উঠাইলেন এবং বলিলেনঃ আল্লাহর নিকট কবর আযাব হইতে পানাহ্ চাও। তিনি উহা দুই কি তিন বার বলিলেন। তৎপর বলিলেন, মু'মিন বন্দা যখন দুনিয়াকে ত্যাগ করিতে এবং আখেরাতের দিকে অগ্রসর হইতে থাকে, তখন তাহার নিকট আসমান হইতে উজ্জ্বল চেহারাবিশিষ্ট একদল ফিরিশতা আসেন, যাহাদের চেহারা যেন সূর্য। তাহাদের সাথে বেহেশতের কাফনসমূহের একটি কাফন (কাপড়) থাকে এবং বেহেশতের খোশবুসমূহের এক রকম খোশবু থাকে। তাঁহারা তাহার নিকট হইতে দৃষ্টির সীমার দূরে বসেন। অতঃপর মালাকুল মউত [আযরাঈল (আঃ)] তাহার নিকটে আসেন এবং তাহার মাথার নিকটে বসিয়া বলেন, হে পবিত্র রূহ! বাহির হইয়া আস আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তোষের দিকে। হুযূর বলেন, তখন তাহার রূহ্ বাহির হইয়া আসে যেমন, মোশক হইতে পানি বাহির হইয়া আসে (অর্থাৎ, সহজে)। তখন মালাকুল মউত উহাকে গ্রহণ করেন এবং এক মুহূর্তের জন্যও নিজের হাতে রাখেন না; বরং ঐ সকল অপেক্ষমান ফিরিশতা আসিয়া উহাকে গ্রহণ করেন এবং উহাকে ঐ কাফন ও ঐ খোতে রাখেন। তখন উহা হইতে পৃথিবীতে প্রাপ্ত সমস্ত খোশবু অপেক্ষা উত্তম মেশকের খোশবু বাহির হইতে থাকে।
হুযূর বলেন, উহাকে লইয়া ফিরিশতাগণ উপরে উঠিতে থাকেন এবং যখনই তাহারা ফিরিশতাদের মধ্যে কোন ফিরিশতাদলের নিকট পৌঁছেন তাহারা জিজ্ঞাসা করেন, এই পবিত্র রূহ্ কাহার? তখন ইহারা দুনিয়াতে তাহাকে লোকেরা যে সকল উপাধি দ্বারা ভূষিত করিত, সে সকলের মধ্যে উত্তমটি দ্বারা ভূষিত করিয়া বলেন, ইহা অমুকের পুত্র অমুকের রূহ্, যাবৎ না তাহারা তাহাকে লইয়া প্রথম আসমান পর্যন্ত পৌঁছেন (এইরূপ প্রশ্নোত্তর চলিতে থাকিবে)। অতঃপর তাহারা আসমানের দরজা খুলিতে চাহেন, আর অমনি তাহাদের জন্য দরজা খুলিয়া দেওয়া হয়। তখন প্রত্যেক আসমানের সম্মানিত ফিরিশতাগণ তাহাদের পশ্চাৎগামী হন উহার উপরের আসমান পর্যন্ত— যাবৎ না তাহারা সপ্তম আসমান পর্যন্ত পৌঁছেন। এ সময় আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ আমার বন্দার ঠিকানা 'ইল্লিয়ীনে' লিখ এবং তাহাকে (তাহার কবরে) যমীনে ফিরাইয়া লইয়া যাও। কেননা, আমি তাহাদিগকে যমীন হইতে সৃষ্টি করিয়াছি এবং যমীনের দিকেই তাহাদিগকে প্রত্যাবর্তিত করিব, অতঃপর যমীন হইতে আমি তাহাদিগকে পুনরায় বাহির করিব (হাশরের মাঠে)। হুযূর বলেন, সুতরাং তাহার রূহ্ তাহার শরীরে ফিরাইয়া দেওয়া হয়।
অতঃপর তাহার নিকট দুইজন ফিরিশতা আসেন এবং তাহাকে উঠাইয়া বসান, তৎপর তাহারা তাহাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার রব কে? তখন সে উত্তর করে, আমার রব আল্লাহ্ । অতঃপর জিজ্ঞাসা করেন, তোমার দ্বীন কি? তখন সে বলে, আমার দ্বীন হইল ইসলাম। আবার তাঁহারা তাহাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমাদের মধ্যে যিনি প্রেরিত হইয়াছিলেন তিনি কে? সে উত্তর করে, তিনি আল্লাহর রাসূল (ﷺ)। পুনরায় তাহারা তাহাকে জিজ্ঞাসা করেন, তুমি ইহা কি করিয়া জানিতে পারিলে ? সে বলে, আমি আল্লাহর কিতাব পড়িয়াছি, অতঃপর তাঁহার প্রতি ঈমান আনিয়াছি এবং তাহাকে সত্যবাদী বলিয়া বিশ্বাস করিয়াছি। তখন আসমানের দিক হইতে এক শব্দকারী শব্দ করেন, আমার বন্দা সত্য বলিয়াছে। সুতরাং তাহার জন্য বেহেশতের একটি ফরশ বিছাইয়া দাও এবং তাহাকে বেহেশতের একটি লেবাস পরাইয়া দাও। এ ছাড়া তাহার জন্য বেহেশতের দিকে একটি দরজা খুলিয়া দাও। হুযূর বলেন, তখন তাহার প্রতি বেহেশতের সুখ-শান্তি ও বেহেশতের খো আসিতে থাকে এবং তাহার জন্য তাহার কবর দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করিয়া দেওয়া হয়। হুযুর বলেন, অতঃপর তাহার নিকট এক সুন্দর চেহারাবিশিষ্ট সুবেশী ও সুগন্ধিযুক্ত ব্যক্তি আসে এবং তাহাকে বলে, তোমাকে সন্তুষ্টি দান করিবে এমন জিনিসের সুসংবাদ গ্রহণ কর। এই দিবসেরই তোমাকে ওয়াদা দেওয়া হইয়াছিল। তখন সে তাহাকে জিজ্ঞাসা করিবে, তুমি কে? তোমার চেহারা তো দেখিবার মত চেহারা! কল্যাণের বার্তা বহন করে। তখন সে বলে, আমি তোমার নেক আমল। তখন সে বলিবে, হে আল্লাহ্ ! কিয়ামত কায়েম কর। হে আল্লাহ্ । কিয়ামত কায়েম কর! যাহাতে আমি আমার পরিবার ও সম্পদের দিকে যাইতে পারি (অর্থাৎ, হূর, গিলমান ও বেহেশতী সম্পদ তাড়াতাড়ি পাইতে পারি)।
কিন্তু কাফের বন্দা, যখন সে দুনিয়া ত্যাগ করিতে ও আখেরাতের দিকে অগ্রসর হইতে থাকে, তাহার নিকট আসমান হইতে একদল কাল চেহারাবিশিষ্ট ফিরিশতা অবতীর্ণ হন, যাহাদের সহিত শক্ত চট থাকে। তাহারা তাহার নিকট হইতে দৃষ্টির সীমার দূরে বসেন। অতঃপর মালাকুল মউত আসেন এবং তাহার মাথার নিকটে বসেন, অতঃপর বলেন, হে খবীস রূহ্ ! বাহির হইয়া আস আল্লাহর রোষের দিকে। হুযূর বলেন, এ সময় রূহ্ ভয়ে তাহার শরীরের এদিক সেদিক পলাইতে থাকে। তখন মালাকুল মউত উহাকে টানিয়া বাহির করেন, যেমন, লোহার গরম শলাকা ভিজা পশম হইতে টানিয়া বাহির করা হয় (আর তাহাতে পশম লাগিয়া থাকে।) তখন তিনি উহাকে গ্রহণ করেন। কিন্তু যখন গ্রহণ করেন মুহূর্ত কালের জন্যও নিজের হাতে রাখেন না; বরং অপেক্ষমান ফিরিশতাগণ তাড়াতাড়ি উহাকে সেই চটে জড়াইয়া লন। তখন তাহা হইতে দুর্গন্ধ বাহির হইতে থাকে পৃথিবীতে প্রাপ্ত সমস্ত গলিত শবদেহের দুর্গন্ধ অপেক্ষা অধিক দুর্গন্ধ। উহাকে লইয়া তাঁহারা উপরে উঠিতে থাকেন; কিন্তু যখনই তাহারা উহাকে লইয়া ফিরিশতাদের কোন দলের নিকট পৌঁছেন, তাহারা জিজ্ঞাসা করেন এই খবীস রূহ্ কাহার? তখন তাহারা তাহাকে দুনিয়াতে যে সকল খারাপ উপাধি দ্বারা ভূষিত করা হইত, সেইগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা খারাপটি দ্বারা ভূষিত করিয়া বলেন, অমুকের পুত্র অমুকের, যাবৎ না তাহাকে প্রথম আসমান পর্যন্ত লইয়া যাওয়া হয়। অতঃপর তাহার জন্য আসমানের দরজা খুলিয়া দিতে চাওয়া হয়; কিন্তু খুলিয়া দেওয়া হয় না। এ সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ইহার সমর্থনে কোরআনের এই আয়াতটি পাঠ করিলেনঃ “তাহাদের জন্য আসমানের দরজা খোলা হইবে না এবং তাহারা বেহেশতে প্রবেশ করিতে পারিবে না যে পর্যন্ত না সূচের ছিদ্র দিয়া উট প্রবেশ করে।” তখন আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ তাহার ঠিকানা সিজ্জীনে লেখ, যমীনের সর্বনিম্ন স্তরে। সুতরাং তাহার রূহুকে যমীনে খুব জোরে নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় হুযূর ইহার সমর্থনে এই আয়াত পাঠ করিলেনঃ “যে আল্লাহর সহিত শরীক করিয়াছে, সে যেন আকাশ হইতে পড়িয়াছে, অতঃপর পাখী তাহাকে ছোঁ মারিয়া লইয়া গিয়াছে অথবা ঝঞ্জা তাহাকে বহু দূরে নিক্ষিপ্ত করিয়াছে।" সুতরাং তাহার রূহ্ তাহার দেহে ফিরাইয়া দেওয়া হইবে। তখন তাহার নিকট দুইজন ফিরিশতা আসেন এবং তাহাকে উঠাইয়া বসান। অতঃপর তাহারা তাহাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার পরওয়ারদেগার কে? সে বলে, হায়, হায়, আমি জানি না। অতঃপর জিজ্ঞাসা করেন, তোমার দ্বীন কি? সে বলে, হায়, হায়, আমি জানি না। তৎপর জিজ্ঞাসা করেন, তোমাদের মধ্যে যিনি প্রেরিত হইয়াছেন, তিনি কে? সে বলে, হায়, হায়, আমি জানি না। এ সময় আকাশের দিক হইতে এক ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন, সে মিথ্যা বলিয়াছে, সুতরাং তাহার জন্য দোযখের বিছানা বিছাইয়া দাও এবং দোযখের দিকে একটা দরজা খুলিয়া দাও! সুতরাং তাহার দিকে দোযখের উত্তাপ ও লু আসিতে থাকে এবং তাহার কবর তাহার প্রতি এত সংকোচিত হইয়া যায়। যাহাতে তাহার এক দিকের পাঁজর অপর দিকে ঢুকিয়া যায়। এ সময় তাহার নিকট একটা অতি কুৎসিত চেহারাবিশিষ্ট নোংরাবেশী দুর্গন্ধযুক্ত লোক আসে এবং বলে, তোমাকে দুঃখিত করিবে, এমন জিনিসের দুঃসংবাদ গ্রহণ কর। এই দিবস সম্পর্কেই (দুনিয়াতে) তোমাকে ওয়াদা দেওয়া হইত। তখন সে জিজ্ঞাসা করে, তুমি কে ? কী কুৎসিত তোমার চেহারা, যাহা মন্দ সংবাদ বহন করে। সে বলে, আমি তোমার বদ আমল। তখন সে বলে, হে খোদা! কিয়ামত কায়েম করিও না। (তখন আমার উপায় থাকিবে না। )
অপর এক বর্ণনায় ইহার অনুরূপ রহিয়াছে; কিন্তু উহাতে অধিক রহিয়াছে— যখন মু'মিন বন্দার রূহ্ বাহির হয়, তাহার জন্য দো'আ করিতে থাকেন আসমান ও যমীনের মধ্যস্থলে এবং আসমানে যত ফিরিশতা আছেন তাহাদের প্রত্যেকেই এবং খুলিয়া দেওয়া হয় আসমানের দরজাসমূহ, আর প্রত্যেক দরজার দারোয়ান ফিরিশতাই আল্লাহর নিকট দো'আ করিতে থাকেন, তাহার রূহ্ যেন তাহাদের দরজা দিয়া উঠান হয়। পক্ষান্তরে কাফেরের রূহ্ টানিয়া বাহির করা হয় তাহার রগ সহ এবং অভিশাপ করিতে থাকেন তাহাকে আসমান ও যমীনের মধ্যস্থলে এবং আসমানে যত ফিরিশতা আছেন তাহাদের প্রত্যেকেই এবং তাহার জন্য আসমানের দরজাসমূহ বন্ধ করিয়া দেওয়া হয়, আর প্রত্যেক দরজার দারোয়ান ফিরিশতাগণই আল্লাহর নিকট দো'আ করিতে থাকেন, তাহার রূহ্ যেন তাহাদের দরজা দিয়া না উঠান হয়। – আহমদ
وَعَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي جَنَازَة رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ فَانْتَهَيْنَا إِلَى الْقَبْرِ وَلَمَّا يُلْحَدْ فَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَلَسْنَا حوله كَأَن على رؤوسنا الطَّيْرَ وَفِي يَدِهِ عُودٌ يَنْكُتُ بِهِ فِي الْأَرْضِ فَرَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ: «اسْتَعِيذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ» مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا ثُمَّ قَالَ: إِنَّ الْعَبْدَ الْمُؤْمِنَ إِذَا كَانَ فِي انْقِطَاعٍ مِنَ الدُّنْيَا وَإِقْبَالٍ مِنَ الْآخِرَةِ نَزَلَ إِلَيْهِ من السَّمَاء مَلَائِكَة بِيضُ الْوُجُوهِ كَأَنَّ وُجُوهَهُمُ الشَّمْسُ مَعَهُمْ كَفَنٌ مِنْ أَكْفَانِ الْجَنَّةِ وَحَنُوطٌ مِنْ حَنُوطِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَجْلِسُوا مِنْهُ مَدَّ الْبَصَرِ ثُمَّ يَجِيءُ مَلَكُ الْمَوْتِ حَتَّى يَجْلِسَ عِنْدَ رَأْسِهِ فَيَقُولُ: أَيَّتُهَا النَّفْسُ الطَّيِّبَةُ اخْرُجِي إِلَى مَغْفِرَةٍ مِنَ الله ورضوان قَالَ: «فَتَخْرُجُ تَسِيلُ كَمَا تَسِيلُ الْقَطْرَةُ مِنَ فِي السِّقَاءِ فَيَأْخُذُهَا فَإِذَا أَخَذَهَا لَمْ يَدَعُوهَا فِي يَدِهِ طَرْفَةَ عَيْنٍ حَتَّى يَأْخُذُوهَا فَيَجْعَلُوهَا فِي ذَلِكَ الْكَفَنِ وَفِي ذَلِكَ الْحَنُوطِ وَيَخْرُجُ مِنْهَا كَأَطْيَبِ نَفْحَةِ مِسْكٍ وُجِدَتْ عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ» قَالَ: فَيَصْعَدُونَ بِهَا فَلَا يَمُرُّونَ - يَعْنِي بِهَا - عَلَى مَلَأٍ مِنَ الْمَلَائِكَةِ إِلَّا قَالُوا: مَا هَذِه الرّوح الطّيب فَيَقُولُونَ: فلَان بن فُلَانٍ بِأَحْسَنِ أَسْمَائِهِ الَّتِي كَانُوا يُسَمُّونَهُ بِهَا فِي الدُّنْيَا حَتَّى ينْتَهوا بهَا إِلَى سَمَاء الدُّنْيَا فيستفتحون لَهُ فَيفتح لَهُ فَيُشَيِّعُهُ مِنْ كُلِّ سَمَاءٍ مُقَرَّبُوهَا إِلَى السَّمَاءِ الَّتِي تَلِيهَا حَتَّى ينتهى بهَا إِلَى السَّمَاءِ السَّابِعَةِ - فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: اكْتُبُوا كِتَابَ عَبْدِي فِي عِلِّيِّينَ وَأَعِيدُوهُ إِلَى الْأَرْضِ فَإِنِّي مِنْهَا خَلَقْتُهُمْ وَفِيهَا أُعِيدُهُمْ وَمِنْهَا أخرجهم تَارَة أُخْرَى قَالَ: فتعاد روحه فيأتيه ملكان فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُولُونَ لَهُ: مَنْ رَبُّكَ؟ فَيَقُولُ: رَبِّيَ الله فَيَقُولُونَ لَهُ: مَا دِينُكَ؟ فَيَقُولُ: دِينِيَ الْإِسْلَامُ فَيَقُولَانِ لَهُ: مَا هَذَا الرَّجُلُ الَّذِي بُعِثَ فِيكُمْ؟ فَيَقُول: هُوَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُولَانِ لَهُ: وَمَا عِلْمُكَ؟ فَيَقُولُ: قَرَأْتُ كِتَابَ اللَّهِ فَآمَنْتُ بِهِ وَصَدَّقْتُ فَيُنَادِي مُنَادٍ مِنَ السَّمَاء أَن قد صدق فَأَفْرِشُوهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَأَلْبِسُوهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَافْتَحُوا لَهُ بَابًا إِلَى الْجَنَّةِ قَالَ: «فَيَأْتِيهِ مِنْ رَوْحِهَا وَطِيبِهَا وَيُفْسَحُ لَهُ فِي قَبْرِهِ مَدَّ بَصَرِهِ» قَالَ: وَيَأْتِيهِ رجل حسن الْوَجْه حسن الثِّيَاب طيب الرّيح فَيَقُولُ: أَبْشِرْ بِالَّذِي يَسُرُّكَ هَذَا يَوْمُكَ الَّذِي كُنْتَ تُوعَدُ فَيَقُولُ لَهُ: مَنْ أَنْتَ؟ فَوَجْهُكَ الْوَجْه يَجِيء بِالْخَيْرِ فَيَقُولُ: أَنَا عَمَلُكَ الصَّالِحُ فَيَقُولُ: رَبِّ أَقِمِ السَّاعَةَ رَبِّ أَقِمِ السَّاعَةَ حَتَّى أَرْجِعَ إِلَى أَهْلِي وَمَالِي . قَالَ: وَإِنَّ الْعَبْدَ الْكَافِرَ إِذَا كَانَ فِي انْقِطَاعٍ مِنَ الدُّنْيَا وَإِقْبَالٍ مِنَ الْآخِرَةِ نَزَلَ إِلَيْهِ مِنَ السَّمَاءِ مَلَائِكَةٌ سُودُ الْوُجُوهِ مَعَهُمُ الْمُسُوحُ فَيَجْلِسُونَ مِنْهُ مَدَّ الْبَصَرِ ثُمَّ يَجِيءُ مَلَكُ الْمَوْتِ حَتَّى يَجْلِسَ عِنْدَ رَأْسِهِ فَيَقُولُ: أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْخَبِيثَةُ اخْرُجِي إِلَى سَخَطٍ مِنَ اللَّهِ قَالَ: فَتُفَرَّقُ فِي جسده فينتزعها كَمَا ينتزع السفود من الصُّوف المبلول فَيَأْخُذُهَا فَإِذَا أَخَذَهَا لَمْ يَدَعُوهَا فِي يَدِهِ طَرْفَةَ عَيْنٍ حَتَّى يَجْعَلُوهَا فِي تِلْكَ الْمُسُوحِ وَيخرج مِنْهَا كَأَنْتَنِ رِيحِ جِيفَةٍ وُجِدَتْ عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ فَيَصْعَدُونَ بِهَا فَلَا يَمُرُّونَ بِهَا عَلَى مَلَأٍ مِنَ الْمَلَائِكَةِ إِلَّا قَالُوا: مَا هَذَا الرّوح الْخَبيث؟ فَيَقُولُونَ: فلَان بن فُلَانٍ - بِأَقْبَحِ أَسْمَائِهِ الَّتِي كَانَ يُسَمَّى بِهَا فِي الدُّنْيَا - حَتَّى يَنْتَهِي بهَا إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيُسْتَفْتَحُ لَهُ فَلَا يُفْتَحُ لَهُ ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَلَا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى يَلِجَ الْجَمَلُ فِي سم الْخياط)

فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: اكْتُبُوا كِتَابَهُ فِي سِجِّين فِي الأَرْض السُّفْلى فتطرح روحه طرحا

ثُمَّ قَرَأَ: (وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَكَأَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَاءِ فَتَخْطَفُهُ الطَّيْرُ أَوْ تَهْوِي بِهِ الرّيح فِي مَكَان سحيق)

فَتُعَادُ رُوحُهُ فِي جَسَدِهِ وَيَأْتِيهِ مَلَكَانِ فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُولَانِ لَهُ: مَنْ رَبُّكَ: فَيَقُولُ: هَاهْ هَاهْ لَا أَدْرِي فَيَقُولَانِ لَهُ: مَا دِينُكَ؟ فَيَقُولُ: هَاهْ هَاهْ لَا أَدْرِي فَيَقُولَانِ لَهُ: مَا هَذَا الرَّجُلُ الَّذِي بُعِثَ فِيكُمْ؟ فَيَقُولُ: هَاهْ هَاهْ لَا أَدْرِي فَيُنَادِي مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ أَن كذب عَبدِي فأفرشوا لَهُ مِنَ النَّارِ وَافْتَحُوا لَهُ بَابًا إِلَى النَّارِ فَيَأْتِيهِ حَرُّهَا وَسَمُومُهَا وَيُضَيَّقُ عَلَيْهِ قَبْرُهُ حَتَّى تَخْتَلِفَ فِيهِ أَضْلَاعُهُ وَيَأْتِيهِ رَجُلٌ قَبِيحُ الْوَجْهِ قَبِيحُ الثِّيَابِ مُنْتِنُ الرِّيحِ فَيَقُولُ أَبْشِرْ بِالَّذِي يسوؤك هَذَا يَوْمُكَ الَّذِي كُنْتَ تُوعَدُ فَيَقُولُ: مَنْ أَنْتَ؟ فَوَجْهُكَ الْوَجْهُ يَجِيءُ بِالشَّرِّ فَيَقُولُ: أَنَا عَمَلُكَ الْخَبِيثُ فَيَقُولُ: رَبِّ لَا تُقِمِ السَّاعَةَ

وَفِي رِوَايَة نَحوه وَزَاد فِيهِ:

إِذَا خَرَجَ رُوحُهُ صَلَّى عَلَيْهِ كُلُّ مَلَكٍ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ وَكُلُّ مَلَكٍ فِي السَّمَاءِ وَفُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ لَيْسَ مِنْ أَهْلِ بَابٍ إِلَّا وَهُمْ يَدْعُونَ اللَّهَ أَنْ يُعْرَجَ بِرُوحِهِ مِنْ قِبَلِهِمْ. وَتُنْزَعُ نَفْسُهُ يَعْنِي الْكَافِرَ مَعَ الْعُرُوقِ فَيَلْعَنُهُ كُلُّ مَلَكٍ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ وَكُلُّ مَلَكٍ فِي السَّمَاءِ وَتُغْلَقُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ لَيْسَ مِنْ أَهْلِ بَابٍ إِلَّا وَهُمْ يَدْعُونَ اللَّهَ أَنْ لَا يُعْرِجَ رُوحَهُ مِنْ قبلهم . رَوَاهُ أَحْمد
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ১৬৩০ | মুসলিম বাংলা