মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৫- নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১১২৬
২৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ইমামতির বর্ণনা
১১২৬। হযরত আমর ইবনে সালেমা (রাঃ) বলেন, আমরা লোক চলাচলের পথে একটি কূপের নিকটে বাস করিতাম, যথা দিয়া পথারোহীগণ চলাচল করিত। আমরা তাঁহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিতাম, মানুষের কি হইল, মানুষের কি হইল (তাহারা কি বলে)? লোকটি কে? তাঁহারা উত্তর করিত, লোকটি মনে করে তাঁহাকে আল্লাহ্ নবী করিয়া পাঠাইয়াছেন এবং তাঁহার প্রতি এইরূপ এইরূপ ওহী নাযিল করিয়াছেন। তখন আমি সেই ওহী বাণীটি এমনভাবে মুখস্থ করিয়া লইতাম, যেন উহা আমার অন্তরে বদ্ধমূল হইয়া গিয়াছে। কিন্তু আরবগণ তখন তাহাদের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে মক্কা বিজয়ের অপেক্ষা করিতেছিল। তাহারা বলিত তাহাকে তাহার গোত্রের সহিত যুঝিতে দাও। যদি সে তাহাদের উপর জয়লাভ করে, তখন মনে করিব যে, সে সত্য নবী। যখন মক্কা বিজয়ের ঘটনা ঘটিল, প্রত্যেক গোত্রই ইসলাম গ্রহণে তাড়াতাড়ি করিল এবং আমার পিতা আমাদের গোত্রের ইসলাম গ্রহণের পূর্বেই তাড়াতাড়ি ইসলাম গ্রহণ করিলেন। যখন তিনি গোত্রে প্রত্যাবর্তন করিলেন, বলিলেন, আল্লাহর কসম, আমি তোমাদের নিকট এক সত্য নবীর সমীপ হইতেই আসিলাম। তিনি বলিয়া থাকেন, এই নামায এই সময় পড়িবে, ঐ নামায ঐ সময় পড়িবে। যখন নামাযের সময় উপস্থিত হইবে, তখন তোমাদের মধ্য হইতে যেন কেহ আযান দেয় এবং যেন তোমাদের ইমামত সেই ব্যক্তি করে, যে কোরআন অধিক জানে। তখন লোকেরা দেখিল, আমা অপেক্ষা অধিক কোরআন জানে আর কেহ নাই। কেননা, আমি পথিকদের নিকট হইতে পূর্বেই উহা মুখস্থ করিয়া লইয়াছিলাম। তখন তাহারা আমাকেই তাহাদের আগে বাড়াইয়া দিল, অথচ তখন আমি ছয় কি সাত বৎসরের ছেলে মাত্র। তখন আমার গায়ে একটি চাদর ছিল, যখন আমি সজদা করিতাম, উহা আমার গায়ে আটকাইয়া যাইত (এবং আমার নিতম্ব খুলিয়া যাইত)। তখন গোত্রের এক স্ত্রীলোক বলিল, তোমরা কি আমাদের হইতে তোমাদের ইমামের লজ্জাস্থান ঢাকিবে না ? তখন তাহারা (কাপড়) খরিদ করিল এবং আমার জন্য একটি জামা প্রস্তুত করিল। আমি এই জামা পাইয়া এতই আনন্দিত হইলাম যে, ইহার পূর্বে কোন জিনিস পাইয়াই এত আনন্দিত হই নাই। — বোখারী
عَن عَمْرو بن سَلمَة قَالَ: كُنَّا بِمَاء ممر النَّاس وَكَانَ يَمُرُّ بِنَا الرُّكْبَانُ نَسْأَلُهُمْ مَا لِلنَّاسِ مَا لِلنَّاسِ؟ مَا هَذَا الرَّجُلُ فَيَقُولُونَ يَزْعُمُ أَنَّ الله أرْسلهُ أوحى إِلَيْهِ أَو أوحى الله كَذَا. فَكُنْتُ أَحْفَظُ ذَلِكَ الْكَلَامَ فَكَأَنَّمَا يُغْرَى فِي صَدْرِي وَكَانَتِ الْعَرَبُ تَلَوَّمُ بِإِسْلَامِهِمُ الْفَتْحَ فَيَقُولُونَ اتْرُكُوهُ وَقَوْمَهُ فَإِنَّهُ إِنْ ظَهَرَ عَلَيْهِمْ فَهُوَ نَبِيٌّ صَادِقٌ فَلَمَّا كَانَتْ وَقْعَةُ الْفَتْحِ بَادَرَ كُلُّ قَوْمٍ بِإِسْلَامِهِمْ وَبَدَرَ أَبِي قَوْمِي بِإِسْلَامِهِمْ فَلَمَّا قَدِمَ قَالَ جِئْتُكُمْ وَاللَّهِ مِنْ عِنْدِ النَّبِيِّ حَقًّا فَقَالَ: «صَلُّوا صَلَاةَ كَذَا فِي حِين كَذَا وصلوا صَلَاة كَذَا فِي حِينِ كَذَا فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ فليؤذن أحدكُم وليؤمكم أَكْثَرُكُمْ قُرْآنًا» فَنَظَرُوا فَلَمْ يَكُنْ أَحَدٌ أَكْثَرَ قُرْآنًا مِنِّي لَمَّا كُنْتُ أَتَلَقَّى مِنَ الرُّكْبَانِ فَقَدَّمُونِي بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَأَنَا ابْنُ سِتِّ أَوْ سَبْعِ سِنِينَ وَكَانَتْ عَلَيَّ بُرْدَةٌ كُنْتُ إِذَا سَجَدْتُ تَقَلَّصَتْ عَنِّي فَقَالَتِ امْرَأَةٌ مِنَ الْحَيِّ أَلَا تُغَطُّونَ عَنَّا اسْتَ قَارِئِكُمْ فَاشْتَرَوْا فَقَطَعُوا لِي قَمِيصًا فَمَا فَرِحْتُ بِشَيْءٍ فَرَحِي بِذَلِكَ الْقَمِيص. رَوَاهُ البُخَارِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এই হাদীস অনুসারেই ইমাম শাফেয়ী (রঃ) নাবালকের ইমামত জায়েয মনে করেন; কিন্তু অন্যত্র বর্ণিত ইবনে মাসউদ ও ইবনে আব্বাসের হাদীস অনুসারে ইমাম আবু হানীফা (রঃ) উহাকে নাজায়েয মনে করেন।
