মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৫- নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১০১৭
- নামাযের অধ্যায়
২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাহু সিজদা্
১০১৭। হযরত ইবনে সীরীন হযরত আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে নিয়ে অপরাহ্নের (যোহর ও আছরের যে কোন একটি) নামায পড়লেন। ইবনে সীরীন বলেন, আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) সেই নামাযের নামোল্লেখ করেছিলেন কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছি। আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে নিয়ে দুই রাকাত পড়লেন তারপর সালাম ফিরিয়ে দিলেন। তারপর মসজিদে এলোমেলোভাবে রাখা একটি কাঠের সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁকে খুবই রাগান্বিত মনে হচ্ছিল। তিনি স্বীয় ডানহাত বামহাতের পিঠের উপর রেখে অঙ্গুলিসমূহ পরস্পরের মধ্যে প্রবেশ করালেন এবং নিজের মুখমণ্ডলের ডান অংশকে বামহাতের পিঠের উপর রাখলেন। ইতোমধ্যে তাড়াহুড়াকারী লোকজন মসজিদের বিভিন্ন দরজা দিয়ে বের হয়ে গেল। আর লোকজন ভাবতে লাগল যে, নামায সম্ভবতঃ আল্লাহর তরফ হতে সংক্ষেপ করে দেয়া হল। লোকদের মধ্যে হযরত আবুবকর (রাযিঃ) এবং হযরত ওমর (রাযিঃ)-ও ছিলেন; কিন্তু তারাও রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট বিষয়টি জিজ্ঞেস করতে সংকোচ করছিলেন। তবে উপস্থিত লোকদের মধ্যে লম্বা হাতবিশিষ্ট এক ব্যক্তি ছিল, যাকে যুলইয়াদাইন (অর্থাৎ লম্বা হাতওয়ালা) বলা হত। সে হিম্মত করে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আপনি কি ভুল করেছেন, নাকি নামাযই সংক্ষেপ করে দেয়া হয়েছে? তিনি (ﷺ) বললেন, আমি ভুল করি নি এবং নামায সংক্ষেপ করাও হয় নি। অতঃপর তিনি লোকদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, যুলইয়াদাইন যা বলছে ব্যাপার কি তাই ঘটেছে? তারা বলল যে, হ্যাঁ, তাই ঘটেছে। এটা শুনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সম্মুখে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং যা ছুটে গিয়েছিল তা পূর্ণ করে নিলেন। তারপর যথারীতি সালাম ফেরালেন। তারপর পুনরায় তাকবীর বললেন এবং পূর্বের সিজদার ন্যায় সিজদাহ করলেন। অথবা সিজদাহ কিছুটা দীর্ঘ করলেন। তারপর তাঁর মস্তক উত্তোলন করলেন এবং তাকবীর বললেন। এরপর পুনরায় তাকবীর বলে সিজদায় গেলেন। সিজদা করলেন পূর্বের সিজদার মতো কিংবা তদপেক্ষা দীর্ঘ। এরপর মাথা উঠালেন এবং তাকবীর বললেন। বর্ণনাকারী এই ঘটনা বর্ণনা করার পর লোকজন ইবনে সীরীনকে জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) কি বলেছিলেন যে, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সালাম ফেরালেন? জবাবে ইবনে সীরীন বললেন, আমি এই সংবাদ জেনেছি যে, সাহাবী ইমরান ইবনে হোছাইন বলেছেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সালাম ফেরালেন। -বুখারী, মুসলিম
কিন্তু তাদের বর্ণনান্তরে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর “আমি ভুল করি নি এবং নামায সংক্ষেপও করা হয় নি” বাক্যের স্থলে তিনি বলেছেন, এই দু'টির কোনটিই হয় নি। তখন যুলইয়াদাইন বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! এই দু'টির যে কোন একটি অবশ্যই হয়েছে।
কিন্তু তাদের বর্ণনান্তরে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর “আমি ভুল করি নি এবং নামায সংক্ষেপও করা হয় নি” বাক্যের স্থলে তিনি বলেছেন, এই দু'টির কোনটিই হয় নি। তখন যুলইয়াদাইন বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! এই দু'টির যে কোন একটি অবশ্যই হয়েছে।
كتاب الصلاة
بَابُ السَّهْوِ
وَعَن ابْن سِيرِين عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِحْدَى صَلَاتَيِ الْعشي - قَالَ ابْن سِيرِين سَمَّاهَا أَبُو هُرَيْرَةَ وَلَكِنْ نَسِيتُ أَنَا قَالَ فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ فَقَامَ إِلَى خَشَبَةٍ مَعْرُوضَةٍ فِي الْمَسْجِدِ فَاتَّكَأَ عَلَيْهَا كَأَنَّهُ غَضْبَانُ وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى وَشَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ وَوَضَعَ خَدَّهُ الْأَيْمَنَ عَلَى ظَهْرِ كَفه الْيُسْرَى وَخرجت سرعَان مِنْ أَبْوَابِ الْمَسْجِدِ فَقَالُوا قَصُرَتِ الصَّلَاةُ وَفِي الْقَوْمِ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا فَهَابَاهُ أَنْ يُكَلِّمَاهُ وَفِي الْقَوْمِ رَجُلٌ فِي يَدَيْهِ طُولٌ يُقَالُ لَهُ ذُو الْيَدَيْنِ قَالَ يَا رَسُول الله أنسيت أم قصرت الصَّلَاة قَالَ: «لَمْ أَنْسَ وَلَمْ تُقْصَرْ» فَقَالَ: «أَكَمَا يَقُولُ ذُو الْيَدَيْنِ؟» فَقَالُوا: نَعَمْ. فَتَقَدَّمَ فَصَلَّى مَا تَرَكَ ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ كَبَّرَ وَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ وَكَبَّرَ ثُمَّ كَبَّرَ وَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ وَكَبَّرَ فَرُبَّمَا سَأَلُوهُ ثُمَّ سَلَّمَ فَيَقُولُ نُبِّئْتُ أَنَّ عِمْرَانَ بْنَ حُصَيْنٍ قَالَ ثمَّ سلم. وَلَفْظُهُ لِلْبُخَارِيِّ وَفِي أُخْرَى لَهُمَا: فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَدَلَ «لَمْ أَنْسَ وَلَمْ تُقْصَرْ» : «كُلُّ ذَلِكَ لَمْ يَكُنْ» فَقَالَ: قَدْ كَانَ بَعْضُ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ